• ঢাকা রবিবার
    ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দেবী দুর্গাকে বরণের অপেক্ষায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১, ০৬:২৮ পিএম

দেবী দুর্গাকে বরণের অপেক্ষায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই মণ্ডপে মণ্ডপে বেজে উঠবে ঢাকের বাদ্য। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সোমবার (১১ অক্টোবর) ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। মণ্ডপে মণ্ডপে বর্ণিল আলোকসজ্জাই জানান দিচ্ছে সেই কথা। দেবী দুর্গাকে বরণ করতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঢাক-ঢোলসহ নানান বাদ্যযন্ত্র।

মানিকগঞ্জের বেশিরভাগ পূজা মণ্ডপের কাজ শেষ হলেও কিছু কিছু মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ততা। দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না প্রতিমা শিল্পীরা। মানিকগঞ্জ পৌরসভার বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। শহীদ রফিক সড়কে অবস্থিত লক্ষ্মী মন্দিরে চলছে প্রতিমায় রঙের কাজ। চারজন মৃৎশিল্পী মনোযোগ দিয়ে রঙের কাজ করে যাচ্ছেন। কেউ প্রতিমার চোখে কাজল পরাচ্ছেন, কেউবা আবার পেঁচা, হাঁস, ইঁদুরকে রঙ-তুলি দিয়ে তার অবয়বকে আরও সুন্দর করে তুলছেন। 

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এবার মানিকগঞ্জে ৫০৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গত বছর করোনার প্রভাব আর অর্থনৈতিক কারণে ৪৬৩ মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। গতবারের চেয়ে এবার করোনা আর অর্থনৈতিক স্থবিরতা কিছুটা কাটিয়ে ওঠায় পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।

গঙ্গাধরপট্টি দুর্গা মন্দির কমিটির সমন্বয়কারী কাশীনাথ সরকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এবারও আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছি। এ বছর প্রতিমা তৈরির কাঁচামাল মাটি, খড়, বাঁশ, চটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচ বেড়েছে।

শহিদ রফিক সড়কে লক্ষ্মী মন্দিরে প্রতিমা সাজসজ্জার কাজ প্রায় শেষ। কথা হয় মৃৎশিল্পী সুমন পালের সঙ্গে। তার সঙ্গে আরও কাজ করছে খোকন পাল, নিমাই পাল ও রাজন পাল। দেবী দুর্গার বাহন সিংহ, মহিষাসুর, দেবী লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশের সাজসজ্জার কাজ করছেন তারা।

মৃৎশিল্পী সুমন পাল জানান, তারা প্রায় ২ মাস আগে থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এবার মোট ৮টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির চুক্তি করেছেন তারা। আগের বার করোনার কারণে বেশি কাজ করতে পারেননি তারা। এবার প্রতিটা মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির জন্য ৪০-৪৫ হাজার টাকা মজুরি নিচ্ছেন তারা।

আজাদ সাউন্ড ও লাইটিংয়ের মালিক আজাদ খান বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কারণে পূজা মণ্ডপেগুলোতে সকল প্রকার আলোকসজ্জা, সাজসজ্জার কাজ করছি আমরা। গত বছর  আমাদের খুব খারাপ অবস্থায় পড়তে হয়েছিল। এবার অনেকগুলো মণ্ডপে লাইটিং, সাউন্ডবক্স ও মাইক ভাড়া হয়েছে।

মানিকগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনির্বান পাল বলেন, এসব পূজা মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মণ্ডপ কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে করোনার প্রকোপ কম থাকায় মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।

জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, করোনার কারণে প্রতিটি মণ্ডপে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থী, ভক্ত ও পুরোহিতসহ সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মণ্ডপে নারী-পুরুষের যাতায়াতের জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে। আতশবাজি ও পটকা ব্যবহার করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, দুর্গাপূজায় বরাদ্দকৃত চাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মণ্ডপে পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হয়েছে।


টিআর/ডাকুয়া

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ