প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১, ০৬:৪৫ পিএম
জিয়াউল গনি সেলিম, রাজশাহী ব্যুরো
করোনায় প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বন্ধ থাকায় অকেজো হয়ে গেছে রাজশাহীর
চারঘাট উপজেলার অধিকাংশ স্কুল–কলেজের ল্যাপটপ, প্রজেক্টরসহ অন্য ডিজিটাল শিক্ষাসামগ্রী। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরও ব্যবহার করা
যাচ্ছে না এসব ডিভাইস।
ফলে ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে।
অভিযোগ আছে, লাখ লাখ
টাকার এসব সামগ্রী সংরক্ষণ
ও ব্যবহারের অভাবেই এখন নষ্ট হয়ে
যাচ্ছে।
চারঘাট
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা
যায়, উপজেলার ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব রয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও প্রজেক্টর রয়েছে
৯টি কলেজ, ৭টি মাদরাসা, ৪০টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪টি কারিগরি
বিদ্যালয়ে। অপরদিকে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর রয়েছে
৭৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অথচ অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ, প্রজেক্টরসহ অন্যান্য ডিজিটাল শিক্ষাসামগ্রী বর্তমানে অকেজো অবস্থায় রয়েছে।
উপজেলার
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়,
শ্রেণিকক্ষে প্রজেক্টর থাকলেও ব্লাকবোর্ডে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক। টেবিলে সাজানো কম্পিউটারগুলো অধিকাংশই অকেজো অবস্থায় রয়েছে ব্যবহার না করার কারণে।
যেগুলো ভালো আছে, সেগুলো
ব্যবহার হচ্ছে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ও অফিসের কাগজপত্র
টাইপের কাজে। কোনো কোনো স্কুলের
শিক্ষক প্রভাব খাটিয়ে কম্পিউটার বাসায় নিয়ে গেছেন। এতে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেওয়া কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর শিক্ষার্থীদের
কাজে লাগছে না।
উপজেলার
উত্তর মেরামতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
রাকিবুল ইসলাম বলেন, করোনাকালীন সময়ের পরে আমাদের ল্যাবে
আর ক্লাস হয়নি। সচল কিংবা অচল
জানা নেই। করোনার আগে
থেকেই আইসিটি ক্লাস শুধু বই পড়ে মুখস্ত
করি।
রায়পুর
উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাতুল ইসলাম জানায়, স্কুলে যে কম্পিউটার দেওয়া
হয়েছে তার কয়েকটি নষ্ট
হয়ে গেছে। যেগুলো সচল আছে তা
শিক্ষকরা ব্যবহার করেন। শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে আসে।
এজন্য ল্যাব থাকলেও তারা ভালোমতো শিখতে
পারে না তারা।
তবে
রায়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান
শিক্ষক সাজদার রহমান বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল
ল্যাবে ১৭টি ল্যাপটপ আছে।
করোনাকালীন সময়ে ২টি অকেজো
হয়েছে গেছে। এছাড়া আমাদের ডিজিটাল ল্যাবের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে
ল্যাব কোনো কাজে আসছে
না।
চারঘাট
পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান
শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকলেও আমরা
প্রতিনিয়ত ডিজিটাল ডিভাইসগুলো সচল রাখতাম। তারপর
৫টি ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর নষ্ট
হয়ে গেছে। প্রজেক্টর নষ্ট থাকায় মাল্টিমিডিয়া
ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ
ব্যাপারে চারঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, পাঠদান বন্ধ থাকলেও ইলেকট্রনিক
ডিভাইসগুলো সচল রাখতে আমাদের
নির্দেশনা ছিল। কিন্তু অধিকাংশ
প্রতিষ্ঠানই নির্দেশনা মানেনি। যার ফলে সরকারের
কোটি টাকা মূল্যের ল্যাব,
প্রজেক্টর অকেজো হয়ে গেছে। তবে
দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো সংস্কার করার তাগিদ দেওয়া
হয়েছে।
নূর/ডাকুয়া