
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১, ১০:২৭ এএম
মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী প্রতিনিধি
ছয় বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে সৈয়দপুরের রেলওয়ে সেতু কারখানার। খোলা আকাশের নিচে অযত্নে পড়ে আছে লোহার বিভিন্ন মালামাল। নষ্ট হয়ে গেছে মূল্যবান মেশিনপত্র। এমনটি জানিয়েছে রেলওয়ের একটি সূত্র।
সূত্রে জানা যায়, ১৮৫৭ সালে রেলওয়ে কারখানা গড়ে ওঠে। এরপর কারখানার পাশেই ১৮৬৫ সালে ১৮ একর ভূমিতে রেলওয়ে সেতু কারখানা গড়ে তোলা হয় । রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সকল স্টেশনের প্লাটফরম সেডের মালামাল, রেললাইনের পয়েন্ট অ্যান্ট ক্রোসিং, ব্রিজ গার্ডার, ট্রলিও মটর ট্রলি মেরামত ও তৈরি, মোর গার্ডার, পানির ট্যাংকি, ফুট ওভার ব্রিজের মালামাল, ট্যাং স্টেজিংসহ ২৫ ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি হতো এ কারখানায়। কারখানাটিতে রয়েছে মেশিন সপ, পয়েন্টস অ্যান্ড ক্রোসিং সপ ও গাডার ইয়ার্ড সপ নামে তিনটি উপকারখানা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্লাটফরম সেড বা নকশা ঘরটি তালাবদ্ধ। ভেতরে আবর্জনার স্তূপ। পাশে মেশিন সেডটির চিত্র একই। ইয়ার্ডজুরে জঙ্গল ও বড় বড় আগাছা। খোলা আকাশের নিচে অযত্নে মাটিতে পড়ে রয়েছে অ্যাঙ্গেল রড, স্কয়ার রড, কভার প্লেট, মিটার ও ব্রডগেজ লাইনের সেতুর স্পেয়ার গাডার। অন্যপাশে তিস্তা ও পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতুর পরিত্যক্ত লোহা-লক্কর, রেললাইন, একটি বিকল স্টিম ক্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের লোহার মালামাল মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। মাটির নিচে চাপা পড়েছে ফ্রাঞ্চ প্লেট ও কভার প্লেট। এসব যন্ত্রাংশ ও মেশিনের আনুমানিক বাজার মূল্য ৮০০ কোটি টাকা।
সহকারী সেতু প্রকৌশলী জুয়েল মিঞা জানান, জনবল ও কাঁচামালের সংকটে ছয় বছর কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। যেসব মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে, তা মেরামত সম্ভব নয়। এসব কিনতে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। তাই উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
১৯৯১ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার বাধ্যতামূলক গোল্ডেন হ্যান্ডশেক ও নিয়মিত অবসরের কারণে ১২৭ জন মঞ্জুরীকৃত পদের বিপরিতে মাত্র ছয়জন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন যাবেন অবসরে। বাকি একজন প্রেষণে পাকশীতে। এ ছাড়া একজন সহকারী সেতু প্রকৌশলী, তিনিও অফিসে নিয়মিত নয়। একজন স্টোর কিপার ও এক কর্মচারী দিয়ে ফাইলপত্র টানাটানি নিয়েই চলছে এ কারখানার কর্মকাণ্ড।
টিআর/এএমকে