
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১, ০১:০৫ পিএম
মো. তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘরে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ
জেলার নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের বদ্ধার চন্ডিপুরের এক গুচ্ছগ্রামে এমন পরিবেশ
দেখা গেছে।
শুক্রবার (৮
অক্টোবর) সকালে বদ্ধার গুচ্ছগ্রামে গিয়ে দেখা যায় সারি সারি ২৪টি বাড়ি রয়েছে।
সেখানে বসবাস করছেন হিন্দু,মুসলিম এ আদিবাসীরা। জাত ভিন্ন হলেও
যেন এক অপরের পরিবারের সদস্য মনে হচ্ছে। কারণ সেখানে নাই কোনো জাতের বিভেদ। সবাই
একই পরিবারের মতো চলাফেরা করছেন।
কল্পনা রানী (৪৩), প্রায় ৮ বছর থেকে স্বামী প্রফুল্ল নিখোঁজ। তার ছিল দুই ছেলে মেয়ে। এরমধ্যে বড় মেয়ে অঞ্জনার বিয়ে দিয়েছেন ১২ বছর আগে। আর ছোট ছেলে সুমন পড়ালেখা করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টেকনিক্যাল কলেছে। সুমন পড়া লেখার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন কাজ কর্ম করে নিজের খরচ চালান। তাছাড়া মাঝে-মধ্যে কিছু টাকা মায়ের কাছেও নিতে হয়।
কল্পনা রানী
জানান, স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে প্রায় ৮ বছর আগে। এরপর হতে মা-বাবার
বাড়িতে থেকে বিভিন্ন জায়গায় কাজকর্ম করে সংসার চালাতেন। তাদের থাকার জায়গাটুকু ছিল
না। গত ২ মাস আগে আগে কসবা ইউনিয়নের বদ্ধার চন্ডিপুরের গুচ্ছগ্রামে ঢুকতেই তাকে
প্রথম ঘরটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্তমানে সে বাড়িতেই তিনি বসবাস করছেন।
তিনি বলেন,
এখানে
২৪টি পরিবার আছে। সবাই নিজের পরিবারের মতো চলাফেরা করি। যে যার মতো ধর্ম পালন করে।
পাশের বাড়ির বাসিন্দা আদিবাসী মেসহো হেমরোজ জানান, স্বামী মজর
মরমোকে নিয়ে মাঠ-ঘাটে খাস জমিতে বসবাস করতে হতো। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া
উপহারের ঘরে বসবাস করছেন। বর্তমানে তাদের কৃষি কাজ করে সংসার চলছে।
তিনি জানান, আদিবাসী হলেও অন্য জাতিদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেটি মাথায় রেখে নিজ ধর্ম পালন করে আসছেন। সবাই সুশৃঙ্খলভাবে বসবাস করে আসছেন। তার ঘর লাগানো প্রতিবন্ধী মাইনুল ইসলামের বাড়ি। তার রয়েছে স্ত্রী ও সন্তান। তিনি আগে এলাইপুরে অন্যের জমিতে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে বসবাস করতেন।
মাইনুল বলেন, এখন
আমি হাটবাজারে ঘুরে ভিক্ষা করে সংসার চালাই। সারাদিন বাইরে থেকে সন্ধ্যায় বাড়িতে
এসে আরাম করে ঘুমাতে পারি। পাশের বাড়িতেই বসবাস করে আদিবাসী মেসহো হেমরোজ ও তার
স্বামী মজর মারমা। আগে কখনও তিন জাতি এক সঙ্গে বসবাস করা হয়নি। এখানে এসে সবাই এক
পরিবারের মতোই বসবাস করছি।
সরকারি দুটি ঘর
উপহার পেয়ে একটিতে বসবাস করছেন এবং অপরটিতে দোকান দিয়েছেন মোসা. শুকতারা বেগম। তিনি
বলেন, সব ধর্মের মানুষ তার দোকানে বাজার করেন। একসঙ্গে বসে আড্ডা দেন। সবাই
একে অপরের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়ায়। কোনো সমস্যা হয় না। সমস্যা শুধু বিশুদ্ধ পানির।
সার্বিক বিষয়
নিয়ে জানতে চাইলে কসবা ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ইউপি সদস্য গোলাম আজম জানান, ঘরে
উঠানোর সময় সব ধর্মের লোকজনকে সুষ্ঠ পরিবেশ ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে নির্দেশনা দেওয়া
হয়। সে মোতাবেক তারা চলাফেরা করছে। এখনও কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি।
এস/ডাকুয়া