
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১, ১২:০১ পিএম
কচুরিপানায়
পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে সরে গিয়েছে সেতুর সংযোগ সড়কের মাটি। ফলে কাত হয়ে আছে
সেতুটি। সেই সঙ্গে সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় সেতু দিয়ে চলাচল করতে সাধারণ মানুষকে
ব্যবহার করতে হচ্ছে কাঠের সাঁকো।
সাঁকো দিয়ে পার
হওয়া এই সেতুর অবস্থান রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আরাজি হরিশ্বর গ্রামে। ওই গ্রামের
তিস্তার শাখা মানাস নদীর ওপর সেতুটি নির্মিত। দীর্ঘদিনেও সেতুর সংস্কার ও সড়ক
নির্মাণ না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আশপাশের প্রায় ১০ গ্রামের বাসিন্দার।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে দুটি অ্যাবাটমেন্ট ও তিনটি ভার্টিক্যাল দেয়ালবিশিষ্ট বক্স কালভার্ট আকারে ৫৬ ফুট লম্বা সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তবে ২০১৭ সালের বন্যায় সেতুর ভার্টিক্যাল দেয়ালে কচুরিপানা আটকে সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। এই সড়ক ২০১৮ সালে সংস্কার করা হয়। এরপর ২০২০ সালে আবার কচুরিপানা আটকে পানির প্রবল স্রোতে অ্যাবাটমেন্টের নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুটি কাত হয়ে যায়। সেই সঙ্গে সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ে।
শুক্রবার (৮
অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে এবং
সেতুটি পশ্চিম দিকে কাত হয়ে আছে। স্থানীয়রা সেতুর দুদিকে সিমেন্টের খুঁটি ও কাঠের
পাটাতন দিয়ে বানানো সাঁকোয় নদী পার হচ্ছেন।
আরাজি হরিশ্বর
এলাকার কৃষক রউফ মিয়া সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, ‘মেলা মানুষ উঠলে
ব্রিজ খান (সাঁকোটি) দুলবার থাকে বাহে। ভয়ও নাগে (লাগে) কখন ফির ভাঙি যায়। এটে
(এখানে) দুই চাকার যানবাহন ছাড়া অটো, রিকশা ও ভ্যান চইলবার পায় না। জমির ফসল
হাটোত (বাজারে) নিয়ে যাইতে খুব কষ্ট হয়।’
গোপীডাঙ্গা গ্রামের মোক্তার মিয়া বলেন, ‘কেউ অসুস্থ হলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেই সঙ্গে উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র পথ এটি। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এটির সংস্কার না করায় চরম ভোগান্তিতে আছি আমরা।’
বিষয়টি নিশ্চিত
করে বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
আনছার আলী জানান, মানাস নদীর ওপর ত্রুটিযুক্ত নকশায় নদীর প্রস্থ
কমিয়ে বক্স কালভার্ট বানানো হয়। এতে কচুরিপানা জমে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে সংযোগ সড়ক
ধসে পড়ে। সেই সঙ্গে সেতুটি একদিকে কাত হয়ে গেছে। নতুন করে সেতু ও সংযোগ সড়ক
নির্মাণের বিষয়টি অনেকবার প্রকৌশল অধিদফতরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে
না। এতে ১০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
কাউনিয়া উপজেলা
প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, গ্রামীণ ওই
রাস্তাটি স্থানীয় সরকার অধিদফতরের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় সংস্কারে জটিলতা সৃষ্টি
হয়েছে। রাস্তাটি অধিদফতরের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কাগজপত্র ঢাকায় এলজিইডি ভবনে
পাঠানো হয়েছে। অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর অনুমোদন পেলে পাকা সেতু ও রাস্তা নির্মাণের
প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হবে।
এস/ডাকুয়া