প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১, ০৪:৫৩ পিএম
বাবাকে মারতে এসে খুঁজে
না পেয়ে শেষ পর্যন্ত তার কিশোরী মেয়েকে হত্যা করল একদল দুর্বৃত্ত। এমন
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর
গ্রামে। ঘটনার সময় ওই মেয়ের বাবা প্রাণভয়ে প্রতিবেশীর ঘরে লুকিয়েছিলেন।
শনিবার (২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে সালমা আক্তার নামের ১৪ বছরের কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার (১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার পর মরদেহ পানিতে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা।
নিহত সালমা আক্তার বসন্তপুর গ্রামের সোলেমান ব্যাপারীর মেয়ে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সালমা তৃতীয়। সে পার্শ্ববর্তী বিল্লাল বাজার কওমি মাদরাসায় লেখাপড়া করত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বসন্তপুর গ্রামের ভূঁইয়া পাড়ার গরু ব্যবসায়ী সোলেমান ব্যাপারীর সঙ্গে তার ভাতিজাদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ও মামলা চলছিল।
জানা যায়, শনিবার সকালে একই বাড়ির জান্নাত নামে এক কিশোরী সোলেমান ব্যাপারীর ঘরের দরজা ও পেছনের টিন খোলা দেখে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরে কাউকে দেখতে না পেয়ে সোলেমান ব্যাপারীর মোবাইল ফোনে কল দেয়। পরে সোলেমান ব্যাপারী বাড়িতে এসে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে চার দিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরবর্তীতে বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে একটি পুকুরে মেয়ের ভাসমান মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন।
সোলেমান ব্যাপারী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ভাতিজাদের সঙ্গে আমার জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর তারা আমার স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি মারধর করায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। শুক্রবার আমি বাড়িতে গেলে তারা আমার ওপর হামলার চেষ্টা করে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমি ঘর থেকে বের হলে তারা ১০-১২ জন লোক আমার ওপর হামলা করতে ঘর ঘিরে ফেলে। আমি প্রাণভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়ির আব্দুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেই। সে সময় ঘরে একাই ছিল আমার মেয়ে সালমা। রাতে তারা তাকে ঘর থেকে বের করে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ পানিতে ফেলে দেয়।’
শনিবার দুপুরে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি এবং হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।’
জেডআই/এম. জামান