• ঢাকা বুধবার
    ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

শিক্ষক চুল কেটে দেওয়ায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১, ১২:২৭ পিএম

শিক্ষক চুল কেটে দেওয়ায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে শিক্ষকের নির্দেশে মাথার চুল কেটে দেওয়ায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান তুহিন (২০)। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার শাহ মখদুম ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে।

আত্মহত্যার চেষ্টাকারী নাজমুল হাসান তুহিন (২০) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি মাগুরা জেলায়।

জানা যায়, সোমবার ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তুহিন। বিষয়টি টের পেয়ে সহপাঠীরা তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাকে রাতেই এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মনোয়ার হোসেন সুজন বলেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

তুহিনের সহপাঠীরা জানান, ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ইয়ার চেঞ্জ ফাইনাল পরীক্ষা দিতে হলে প্রবেশ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন কাঁচি দিয়ে ১৪ জন পরীক্ষার্থীর মাথার সামনের অংশের বেশ কিছু চুল কেটে দেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে লাঞ্ছিত পরীক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠীরা ওই বিভাগের বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।

কিন্তু এসময় বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ও তার সহকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে করে সবাইকে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন। এসব ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান তুহিন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে তুহিনকে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন।

এ অপমান সইতে না পেরে রাতে তুহিন শাহ মুখদুম ছাত্রাবাসের ৫ম তলার নিজ কক্ষে ৩৫টি ঘুমের বড়ি এক সঙ্গে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এদিকে আত্মহত্যার চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে ভিড় করেন। তখন তারা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

এসময় সেখানে উপস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী ও অন্য শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

টিআর/ডাকুয়া

আর্কাইভ