প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১, ০৮:৫৯ পিএম
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের পরিচয় বের করেছে বোদা থানা পুলিশ। বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম ওই নবজাতকের পরিচয় বের করে। তবে নবাজতককে জন্ম দেওয়া ওই কিশোরী (১৫) মা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
রোববার
(২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর বাবা
বাদী হয়ে বোদা থানায়
শ্রী ধনেশ (২২) নামের এক
তরুণকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। এতে ধনেশের বাবা
শ্রী ললি মোহন ও
মা শ্রী মঙ্গলীকেও আসামি
করা হয়েছে।
অভিযুক্ত
ধনেশ ও তার বাবা-মা জেলার আটোয়ারী
উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের গোপালজোত এলাকার বাসিন্দা।
সোমবার
(২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ
চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনার
পর থেকে আমার নেতৃত্বে
পুলিশের একটি দল তদন্তে
নামে। এরপর গত শনিবার
(২৫ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে ওই
নবজাতকের পরিচয় নিশ্চিত হই। পরে ওই
কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারা
পুলিশকে ঘটনা খুলে বলেন।
রোববার কিশোরীর বাবা থানায় বাদী
হয়ে ধনেশসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে
মামলা দায়ের করে।’
মামলার
এজাহারে জানা যায়, অভিযুক্ত
তরুণ শ্রী ধনেশ আত্মীয়তার
সম্পর্কের সুযোগে ওই কিশোরীর বাড়িতে
প্রায়ই যাতায়াত করতেন। স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরীকে প্রায়
দেড় বছর আগে প্রেমের
প্রস্তাব দিয়েছিলেন ধনেশ। এরপর থেকে ওই
কিশোরীকে নানাভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ১০ মাস আগে
ধনেশ ধর্ষণ করেন। এর পর থেকে
ওই কিশোরীর বাবা-মায়ের অজান্তে
প্রায় সময়ই ধনেশ কিশোরীর
বাড়িতে এসে তাকে ধর্ষণ
করতেন। এতে ওই কিশোরী
অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ওই
কিশোরী বিষয়টি ধনেশকে জানায়। ধনেশ ক্ষিপ্ত হয়ে
বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে মেরে ফেলার
হুমকি দেন। পরে বিষয়টি
ওই কিশোরী নিজের পরিবারের কাছে গোপন রেখেই
ধনেশের বাবা-মাকে জানায়
বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়।
এতে
ধনেশের পরিবারও বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য
ওই কিশোরীকে হুমকি দেয়। সর্বশেষ গত
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে
ওই কিশোরীর বাড়িতে এসে ধনেশ অন্তঃসত্ত্বা
অবস্থায় তাকে আবারও ধর্ষণ
করেন। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর
দিবাগত রাত ৩টায় প্রসব বেদনা
উঠলে ওই কিশোরী বাড়ির
পাশে একটি ধানখেতে গিয়ে
সন্তান প্রসব করে। এ সময়
লোকলজ্জার ভয়ে নবজাতক শিশুকে
সেখানে ফেলে রেখে বাড়িতে
চলে আসে ওই কিশোরী।
ওসি
আবু সাঈদ চৌধুরী আরও
বলেন, ‘ওই কিশোরীর জবানবন্দি
গ্রহণের জন্য আদালতে হাজির
করা হয়েছে। এ ছাড়া পঞ্চগড়
আধুনিক সদর হাসপাতালে তার
শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। কিশোরীর
পরিবারও এখন নবজাতককে নিতে
চাইলে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নবজাতককে হস্তান্তর করা হবে। এ
ছাড়া মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করা হবে।’
নূর/এম. জামান