প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১, ০২:৩৮ পিএম
তাহজীবুল আনাম, কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের রামু উপজেলা আদর্শ
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আঙিনায় প্রবেশ করতেই মনে হবে গোয়ালঘর।
আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে মনে হয়
মাছ চাষের পুকুর। নতুন ভবন নির্মাণের
উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও অবহেলিতই
আছে বিদ্যালয়টি। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় পেরিয়ে গেলেও
এখন পর্যন্ত ৫
শতাংশ কাজও শেষ হয়নি।
সূত্র জানায়, সরকারি এই স্কুলটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। ২০২০ সালে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে আধুনিক ভবন নির্মাণে ১ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার কাজ পায় চট্টগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘আলি আঁখি আল আমিন’। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত। কিন্তু সেই সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও ভবনের ৫ শতাংশ কাজও শেষ হয়নি। ফলে পাঠদান নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
সরেজমিনে
দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য
বিশাল একটি গর্ত খুঁড়ে
রাখা হয়েছে। বেজমেন্ট ঢালাই দেওয়ার পর আর কাজ
করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ফলে পানি জমে
গেছে গর্তটিতে। আর প্রকল্প বাস্তবায়নের
সময় পার হলেও এখনও
কেন কাজ শেষ হয়নি,
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার বলেন,
ব্যাংক গ্যারান্টির মেয়াদ শেষ হওয়ায় কাজ
বন্ধ। তাছাড়া করোনায় লকডাউনকেও দুষছেন তিনি। তবে শিগগির কাজ
শুরু করা হবে বলে
জানান।
স্কুলের ভবন নির্মাণকাজ চলাকালীন পাঠদান যাতে ব্যাহত না হয় সেদিক বিবেচনায় অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্যও আলাদা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সেই অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ করা হয়নি। দায়সারাভাবে পুরোনো স্কুলের বাঁশের বেড়া দিয়ে একটি কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। যার চাল ফুটো, নেই কোনো দরজা-জানালা। অভিযোগ আছে সন্ধ্যা নামলেই এখানে বসে মাদকের আড্ডা।
রামু
আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিভাষ বড়ুয়ার কাছে জানতে চাইলে
তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে
স্কুল খোলার ঘোষণা দিলেও আমরা অনিশ্চয়তায় দিন
পার করছি। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরেও কেউ কিছু
করছে না। অনেক শিক্ষার্থীর
শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়বে।
স্কুলের ভবন না থাকায় অভিভাবকদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। দ্বীপান্বিতা বড়ুয়ার দুই মেয়ে পড়েন এই স্কুলে। তিনি সিটি নিউজকে জানান, দীর্ঘদিন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লেখাপড়া। এখন স্কুল খুললেও ভবন নেই পাঠদানের। সরকারি স্কুল নির্মাণে অনিয়ম মানা যায় না।
রামু
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশল অধিদফতরের একটি সূত্র জানায়,
ঘুষের বিনিময়ে নামসর্বস্ব কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ
পায়। কিন্তু টাকার অভাবে তারা কাজ নিয়মিত
করতে পারে না। তাই
এই অবস্থা।
এদিকে
রামু আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের অনিশ্চয়তা
ও প্রাথমিক পাঠদান কক্ষ না থাকায়
১২ সেপ্টেম্বর থেকে আদৌ পাঠদান
শুরু হবে কিনা তা
নিয়ে আছে শঙ্কা। দ্রুত
সময়ের মধ্যে পাঠদান স্বাভাবিক করার জন্য পদক্ষেপ
নেওয়া দাবি স্থানীয় অভিভাবকদের।
টিআর/ডাকুয়া