প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১, ০৮:৪৭ পিএম
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের হাতিঘাটায় দুস্থ ও ভূমিহীনদের
পুনর্বাসনে দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায়
মানবেতর জীবন পার করছেন দুই আশ্রয়ণে বসবাস করা ১৯০টি পরিবার।
উপজেলার
হাতিঘাটায় ২০০০ সালে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দুস্থ ও ভূমিহীনদের পুনর্বাসনে দুটি
আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মিত হয়। হাতিঘাটা বাজারের পশ্চিম পাশের আশ্রয়ণে ১০০টি ও পূর্ব
পাশে ৯০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া দুই আশ্রয়ণে মোট ১৯টি নলকূপ ও ৪৬টি শৌচাগার
নির্মাণ করা হয়েছিল।
সরেজমিন ঘুরে
দেখা গেছে, অধিকাংশ ঘরই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঘরের
চাল ও বেড়ায় মরিচা ধরায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। একই অবস্থা ঘরের দরজা ও
জানালার। টয়লেটের অবস্থাও বেহাল। প্রায় প্রতিটি ঘরেই পলিথিন টানিয়ে বাস করেন
বাসিন্দারা।
আশ্রয়ণের
বাসিন্দা রাবিয়া খাতুন বলেন, ‘আমি এখানে প্রথম থেকেই বাস করছি। ঘরের
চাল ও বেড়ার অবস্থা খুব খারাপ। বৃষ্টি এলেই ঘরের ভেতরে পানি পড়ে। পলিথিন টানিয়েছি,
তাতেও
ফেরে না। রাতের বেলা বৃষ্টি এলে জেগে বসে থাকতে হয়।’
মনোয়ারা বেগম
বলেন, ‘নদী ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে আশ্রয়ণে আশ্রয় নিয়েছি অনেক দিন আগেই।
এখানকার ঘরের অবস্থাও খুব খারাপ। এখন যেখানে থাকি সেটাও যদি ভেঙে যায়, তাহলে
আমরা কোথায় যাব? এখানকার টিউবওয়েল ও টয়লেটের অবস্থাও ভালো না।’
আশ্রয়ণ
প্রকল্পের (পশ্চিম পাশের) সভাপতি মো. খোরশেদ বলেন, ‘এ আশ্রয়ণ
প্রকল্পে ১০০ পরিবার বসবাস করে। নির্মাণের পর থেকে এ পর্যন্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পের
ঘরগুলো সরকারিভাবে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা বারবার চেয়ারম্যান ও প্রশাসনকে
জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি।’
আশ্রয়ণ
প্রকল্পের (পূর্ব পাশের) সভাপতি মো. ইসমাইল বলেন, ‘এখানে ৯০
পরিবারের বসবাস। নির্মাণের পর আর ঘরগুলো মেরামত করা হয়নি। প্রায় প্রতিটি ঘরই
জরাজীর্ণ। বৃষ্টি এলেই পানি পড়ে। টয়লেটগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী।’
আজিমনগর ইউপি
চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় প্রতিটি ঘরই
মেরামত করতে হবে। একবার কর্মকর্তারা এসে মেরামতের জন্য তালিকা করে নিয়ে গেলেও
মেরামত করা হয়নি।’
উপজেলা প্রকল্প
বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মানিকুজ্জামান বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প
দুটি আমার দফতরের অধীনে নির্মিত হয়েছে কি না আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।
যদি আমার দফতরের অধীনে নির্মিত হয়, তাহলে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে আশ্রয়ণ
প্রকল্পে কী পরিমাণ মেরামত করা প্রয়োজন, সে তথ্য দিতে
বলা হয়েছে। তথ্য দিলে আমরা সেটা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়া গেলে
মেরামত করা করা হবে।’
নূর/এম. জামান