প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১, ০২:৪৩ পিএম
নাটোর চলনবিল থেকে ৫০ কোটি
টাকার দেশীয় শুঁটকি রফতানি করা হবে ভারতে।
জেলায় ৪০টিরও বেশি স্থানে কয়েক
বছর ধরে দেশীয় প্রজাতির
মাছের শুঁটকি উৎপাদন করা হচ্ছে। বিশেষ
করে টাকি, চিংড়ি, শোল, টেংরা, গুচি,
বাতাসি, মলা, পুঁটি ও
বোয়াল মাছের শুঁটকি তৈরি করা হচ্ছে।
স্থানীয়
চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত এসব শুঁটকি কয়েক
বছর ধরে ভারতেও রফতানি
করা হচ্ছে। এসব শুঁটকি উৎপাদন
কাজে প্রায় দেড় হাজার নারী-পুরুষ
চাতালে
কাজ করে জীবিকা নির্বাহ
করেন।
স্থানীয়দের
মতে, এবার ৫০ কোটি
টাকার বেশি শুঁটকি উৎপাদনের
সম্ভাবনা রয়েছে। যার বেশির ভাগই
ভারতে রফতানি করা হবে।
নাটোর
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি
মৌসুমে নাটোরে ৩৫০ মেট্রিক টন
শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার
বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৭ কোটি ৫০
লাখ টাকা। গত মৌসুমে ৩১৯
মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন
হয়েছিল। এ বছর মাছের
উৎপাদন বেশি হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার
দ্বিগুণ শুঁটকির সম্ভাবনা রয়েছে। নাটোরে চার উপজেলায় ৪০টি
চাতালে এসব শুঁটকি মাছ
উৎপাদন করা হচ্ছে। এর
মধ্যে গুরুদাসপুর উপজেলায় ১৫টি, নলডাঙ্গায় ১৪টি, বড়াইগ্রামে ৪টি ও সিংড়া
উপজেলায় ৬টি স্থানে শুঁটকির
চাতাল রয়েছে। এই শুঁটকি উৎপাদনের
সঙ্গে দেড় হাজার নারী-পুরুষ জড়িত রয়েছেন।
মৎস্য
বিভাগের হিসাব মতে, ৩ দশমিক
৫ কেজি কাঁচা মাছে
১ কেজি শুঁটকি উৎপাদন
হয়। যার গড় মূল্য
সময়ভেদে ৫০০ টাকা থেকে
৬০০ টাকা কেজি। অর্থাৎ
প্রতি মণ শুঁটকির দাম
২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার
টাকা পড়ে। এতে মোট
উৎপাদিত শুঁটকির দাম দাঁড়ায় ১৭
থেকে ২০ কোটি টাকা।
সৈয়দপুর
জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ী
আবুল বাশার জানান, চলনবিলের উৎপাদিত শুঁটকি গুণে-মানে সুস্বাদু।
তাই এই এলাকার শুঁটকির
ভালো চাহিদা রয়েছে ভারতে। প্রতি সপ্তাহে আমরা এখান থেকে
তিন-চার গাড়ি শুঁটকি
নিয়ে যাই সৈয়দপুরে। সেখানে
বাছাইয়ের পর রফতানি করা
হয় ভারতে।
স্থানীয়
এক চাতাল মালিক জানান, প্রতি কেজি পুঁটি মাছের
শুঁটকি পাইকারি ৪৫০ থেকে ৫০০
টাকা, টেংরা মাছের শুঁটকি ৫০০ টাকা, শোল
মাছের শুঁটকি ১০০০ টাকা, বাতাসি
১০০০ টাকা, গুচি ৯০০ টাকা,
বোয়াল ৭০০ টাকা, চিংড়ি
৬০০ টাকা ও মলার
শুঁটকি ২০০ টাকা কেজি
দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাতালের
নারী শ্রমিক আমেনা বেগম জানান, শুঁটকি
চাতাল গড়ে ওঠায় তাদের
অনেক সুবিধা হয়েছে। গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি শুঁটকির চাতালে কাজ করে বাড়তি
উপার্জন করে সংসারের বাড়তি
আয় হচ্ছে। এতে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার
খরচ হচ্ছে।
নাটোর
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম
জানান, শুঁটকি মাছ এখন রফতানিকারক
একটি পণ্য। সঠিক উপায়ে উৎপাদন
ও সংরক্ষণ করা গেলে সারা
বছরই শুঁটকি মাছ বাজারজাত করা
যাবে। উৎপাদনে আর্থিক সহায়তা বাবদ ঋণ সুবিধা,
সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ
ও সোলার ড্রয়ার দিতে পারলে বর্ষাকালে
শুঁটকির পচন রোধ করা
সম্ভব।
সবুজ/এম. জামান