• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

‘আমরা বাঁচতে চাই’

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১, ০৫:০৬ পিএম

‘আমরা বাঁচতে চাই’

ফজলুল করিম, কুড়িগ্রাম

দুই কলিজার টুকরাকে বাঁচাতে ঘরের আসবাবপত্র, টিনের চালা এমনকি শখের হারমনিয়ামটাও বিক্রি করেছি। বিক্রি করার মতো আর কিছুই নেই। টাকার অভাবে চোখের সামনে আমার দুই প্রাণ (সন্তান) আজ মরতে বসেছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামের হতদরিদ্র কার্তিক দাস। তিনি পেশায় ঝাড়ুদার হলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হারমোনিয়াম তবলা বাজিয়ে থাকেন। এভাবে চলে তার সংসার।

জমিজমা না থাকায় সরকারি খাস জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। অভাব অনটনের সংসার হলেও পুরো পরিবার জুড়ে ছিল সুখ। কোলজুড়ে আসা দুই সন্তান সাগর দাস (১৬) নয়ন দাস (১২) ছিল কার্তিক দাসের দুই নয়নের আলো। কিন্তু সেই সুখময় পরিবারে হানা দেয় অশান্তির কালো মেঘ। সন্তাদের শরীরে বাসা বাঁধে রক্তচোষা থ্যালাসেমিয়া। টাকার অভাবে তাদের চিকিৎসা এখন প্রায় বন্ধের পথে। সন্তানদের বাঁচাতে ভাগ্যহত পিতা ঘুরছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। সবার সহোযোগিতা এখন তার শেষ ভরসা।

কার্তিক দাস সিটি নিউজ ঢাকাকে জানান, ২০১৬ সালে বড় ছেলে সাগর দাস (১৬) থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। এর ছয় মাস পরে ছোট ছেলে নয়ন দাসও (১২) আক্রান্ত হয় একই রোগে। কর্য, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করেন ছেলেদের চিকিৎসা। ১৫ দিন পর পর ছোট ছেলেকে দিতে হয় রক্ত।

তিনি আরও জানান, তাদের চিকিৎসা করাতে প্রতি মাসে খরচ হয় ২০-৩০ হাজার টাকা। বর্তমানে টাকার অভাবে ছেলেদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। সবার সহোযোগিতা এখন তার শেষ ভরসা।

থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু সাগর দাস জানায়, আমরা গরিব। চিকিৎসা করার মতো বাবার টাকা সব শেষ। আমরা দুই ভাই বাঁচতে চাই।

প্রতিবেশী লতিফুর সিটি নিউজ ঢাকাকে জানান, কার্তিক দাসের অভাবের সংসারে ছেলে দুটোর এমন রোগ। আমরা গরিব মানুষ যতটুকু পেরেছি সহযোগিতা করেছি। মানুষ সহযোগিতা করলে নিষ্পাপ ছেলে দুটো বেঁচে যাবে হয়তো।

বল্লভেরখাষ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আকমল হোসেন বলেন, ‘কার্তিক হতদরিদ্র মানুষ। রোগের চিকিৎসায় তো অনেক টাকার দরকার। আমরা যতটুকু পেরেছি সহযোগিতা করেছি। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে হয়তো ছেলে দুটো বেঁচে যাবে।

টিআর/এম. জামান

আর্কাইভ