প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১, ০৪:৩১ পিএম
সমুদ্রের লোনা জল ছুঁয়ে
রানওয়ে স্পর্শ করবে দেশী-বিদেশী
বিমান। আকাশে উড়ালও দিবে সাগরের জল
ছুঁয়ে। এমন স্বপ্ন নিয়েই
দৃশ্যমান হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর। আন্তর্জাতিক মানের কথা চিন্তা করে
সম্প্রসারণ করা হচ্ছে রানওয়ে।
যার মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়ে হতে যাচ্ছে এই
বিমানবন্দরে।
সূত্র
জানিয়েছে, বর্তমানের ৯ হাজার ফুটের
দীর্ঘ রানওয়েকে ১০ হাজার ৭০০
ফুটে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এর
মধ্যে ১ হাজার ৩০০
ফুট থাকবে সমুদ্রের মধ্যে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করতে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে
ব্লক তৈরি করে বাড়ানো
হচ্ছে রানওয়ে। মহেশখালী চ্যানেলের দিকে জমি অধিগ্রহণের
মাধ্যমে সম্প্রসারিত হচ্ছে এই রানওয়ে। এই
নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পেয়েছে চীনের দুইটি প্রতিষ্ঠান।
বেবিচক
বলছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ঘিরে তৈরি হবে
এভিয়েশনের হাব। আর সারাবিশ্ব
থেকে সু-পরিসর বিমান
কক্সবাজারে ওঠানামা করতেই এমন উদ্যোগ নেয়া
হয়েছে। প্রথমে সাগরের নিচে স্থাপন করা
হবে জিওটিউব, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে পানি।
শুরু হবে খনন প্রক্রিয়া
ও বালু ভরাট কার্যক্রম।
এরপর
প্রাথমিক পর্যায়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে
হবে বালুর স্তর বিন্যাস। চূড়ান্ত
পর্যায়ে হবে রানওয়ের জন্য
বালুর স্তর বিন্যাস। তারপর
হবে পাথুরে স্তর বিন্যাস এবং
নিচ্ছিদ্রকরণ, পিচ ঢালাই ও
নিচ্ছিদ্রকরণ। এভাবেই তৈরি হবে রানওয়ে
এবং প্রাথমিক সমুদ্র হতে রক্ষাকারী বাঁধ।
এর পরপরই হবে রানওয়ের শোভাবর্ধন
ও নির্দেশক বাতি স্থাপন। দেশে
এই প্রথম কোনো স্থাপনা নির্মাণ
করা হচ্ছে এই প্রক্রিয়ায়। যেখানে
সমুদ্র ছুঁয়ে আকাশে উড়বে বিমান।
কক্সবাজার
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের প্রথম সবচেয়ে বড় রানওয়ে হতে
যাচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের। এই রানওয়ে হলে
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানও এখানে
নামতে পারবে।
কক্সবাজার
বিমনাবন্দরের ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন,
কক্সবাজার বিমানবন্দরের বর্তমান রানওয়ে ৯ হাজার ফুট।
যেটি বর্ধিত হয়ে ১০ হাজার
৭০০ ফুট হবে। যা
বাংলাদেশে প্রথম সবচেয়ে বড় রানওয়ে। এখানে
বড় বড় বোয়িং এবং
বিশ্বের বড় বড় বিমানগুলোও
এই রানওয়েতে নামতে পারবে। আশা করছি, আগামী
বছরই কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রা শুরু করবে।
আগামী
২৯ আগস্ট ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই
রানওয়ে সম্প্রসারণকে ঘিরে নানা রঙে
সেজেছে কক্সবাজার শহর। মোড়ে মোড়ে
বসানো হয়েছে এলইডি স্ক্রিন। যাতে দেখানো হবে
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো শহর।
এদিকে
২৭ আগস্ট বিকেলে কক্সবাজার বিমানবন্দরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি দেখতে আসেন বেসামরিক বিমান
চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল
এম. মফিদুর রহমান।
এ
সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর
নির্দেশে এটি সম্প্রসারণ করা
হচ্ছে। রানওয়ে সম্প্রসারিত হলে দেশের পর্যটন
ও অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এটি কক্সবাজারবাসীর জন্য
আনন্দের। এ ছাড়াও এ
বিমানবন্দরকে ঘিরে একটি এভিয়েশন
হাব তৈরি হবে।
প্রকল্পটি
বাস্তবায়িত হলে নতুন প্রজন্মের
উড়োজাহাজ বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর,
৭৪৭-৪০০ ও এয়ারবাসের
মতো উড়োজাহাজ সহজেই ওঠা-নামা করতে
পারবে। প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে এক
হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬
লাখ টাকা। যার পুরোটাই অর্থায়ন
করছে বেবিচক।
টিআর/নির্জন