প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২১, ১০:০৯ পিএম
কুড়িগ্রামের কচাকাটায় এক প্রধান শিক্ষককে
অপদস্থ করায় চার পুলিশ
সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ
জনতা। এ সময় রাস্তা
অবরোধ করে বিক্ষোভও করে
তারা। পরে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ
ও থানার ওসির উপস্থিতিতে ঘণ্টাব্যাপী
বৈঠকের পর সমঝোতা হয়।
এ সময় পুলিশের পক্ষ
থেকে জনতার কাছে ক্ষমা চাওয়া
হয়।
শনিবার
(২১ আগস্ট) বেলা ১১টায় কুড়িগ্রামের
কচাকাটা থানার বলদিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী
এবং বিক্ষোভকারীরা জানান, স্থানীয় উপেন্দ্রনাথ এবং স্থানীয় আব্দুল
মালেকের ছেলে খোকনের মাঝে
দীর্ঘ দিন ধরে জমিজমা
নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার
সকালে উপেন্দ্র নাথ তার দখলীয়
জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে খোকন
তা বন্ধে পুলিশের সহযোগিতা নেন।
কচাকাটা
থানার এসআই রবিউল ইসলাম,
এএসআই মশিউর রহমান দুই কনস্টেবলসহ ঘটনাস্থলে
আসেন। এ সময় জমি
চাষরত দুটি পাওয়ার টিলারের
হ্যান্ডেল নিয়ে নেন। একই
সঙ্গে উপেন্দ্রনাথকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য
রওনা করেন। পথিমধ্যে বলদিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সরকার বিষয়টি জানতে চান। এ সময়
এসআই রবিউল তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক
আচরণ করেন এবং তাকে
লাঞ্ছিত করেন।
এ
ঘটনায় স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে চার পুলিশ
সদস্যকে অবরুদ্ধ করে এবং রাস্তায়
ড্রাম ফেলে সড়ক অবরোধ
করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে
বলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস ছাত্তার বিএসসি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত
করেন।
পরে
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেনসহ
অন্যান্য পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। বলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে
বিষয়টি সমঝোতা করে অবরুদ্ধদের মুক্ত
করে থানায় নিয়ে আসেন।
উপেন্দ্রনাথ
জানান, তার দখলীয় জমিতে
চাষাবাদ করতে গেলে বিপক্ষ
খোকন পুলিশ এসে তা বন্ধ
করে দেয়। আমাকে তাদের
সঙ্গে থানায় যেতে বলে। পথিমধ্যে
প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানতে চাইলে তাকে অপদস্থ করেন
এসআই রবিউল ইসলাম। এ সময় স্থানীয়া
বিক্ষুব্ধ হয়ে তাদেরকে বাজারে
আটকে রাখেন।
স্থানীয়
মাহামুদ হাসান বলেন, ‘এসআই রবিউল প্রধান
শিক্ষকে অপদস্থ করে এবং তার
স্কুলে তালা লাগানোর হুমকি
দেন। সঙ্গে স্থানীয়দের ঘুম হারাম করে
দেয়ার হুমকি দেন।’
অভিযুক্ত
এসআই রবিউল ইসলাম জানান, বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে দুই
পক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ওসি সাহেবের নির্দেশে
এখানে দায়িত্ব পালন করতে আসি।
এ সময় জনগণ সিনক্রিয়েট
করে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি
করে।
প্রধান
শিক্ষক স্বপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমার পরিচয় দিয়ে
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই। এসআই রবিউল
ইসলাম আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক
আচরণ করেন। উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে আমাকেও থানায় যেতে ধমকান। পরে
ওসি এবং স্থানীয়দের উপস্থিতিতে
বিষয়টি মীমাংসা হয়। পুলিশ তাদের
ভুল স্বীকার করেন।’
কচাকাটা
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) কামাল হোসেন জানান, জমাজমি নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা
রয়েছে এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে
চার পুলিশ সদস্যকে পাঠানো হয়। সেখানে সামান্য
ভুল বোঝাবুঝির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি
সমঝোতা করা হয়েছে।
সবুজ/এম. জামান