• ঢাকা সোমবার
    ০৭ এপ্রিল, ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১

মাত্র ৬০০ টাকার জন্য পাঁচ ভাইকে হত্যা!

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২, ০৮:৫৪ পিএম

মাত্র ৬০০ টাকার জন্য পাঁচ ভাইকে হত্যা!

ইব্রাহীম খলিল

গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ায় পিকআপভ্যানের ধাক্কায় একই পরিবারের ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। যে ঘটনা পুরো দেশকে নাড়া দেয়। কারণ এই মৃত্যর মাত্র কয়েকদিন আগেই মারা গিয়েছিল এই পাঁচ ভাইয়ের পিতা সুরেশ চন্দ্র শীল। তবে সিটি নিউজ ঢাকার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে নতুন তথ্য। যা দেখে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, এটি দুর্ঘটনা নয়, একটি পরিকল্পিত হত্যা।

এই ঘটনার সূত্রপাত সুরেশ চন্দ্র শীলের মৃত্যুরও দুই দিন আগে । শীল পরিবারের তিন মাসের ডিসের বিল ৬০০ টাকা বকেয়া পড়ে । যে কারণে স্থানীয় ডিস ব্যবসায়ী ইমরান ২০/৩০ জন লোক নিয়ে হামলা করে সুরেশ চন্দ্রের বাড়ি।  ভাংচুর করে পুরো বাড়ি। পাশাপাশি এই হামলায় গুরুতর আহত হয় সুরেশের এক ছেলে চম্পক শীল ও মেয়ে হিরামনি শীল। এছাড়া ঐ হামলার সময় সুরেশকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। যার ফলে সুরেশের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। 

ঘটনা এখানে শেষ হতে পারতো, তবে শেষ হয়নি। ৮ ফেব্রুয়ারি ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মৃত বাবার শ্রাদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে পূজা করে ফিরছিলেন সাত ভাই ও দুই বোন। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বাড়ির কাছে রাস্তা পার হওয়ার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। এমন সময় সবজি বহনকারী একটি দ্রুতগামী পিকআপ তাদের ধাক্কা দেয়।

পিকআপটির ধাক্কায় প্রথমেই চার জনের মৃত্যু হয়। বাকিরা আহত হয়ে পড়ে ছিলেন। পিকআপটি ঘুরে আবার এসে আহতদের চাপা দেন বলে অভিযোগ করে বেঁচে ফেরা এই পরিবারের এক বোন। 

এই ঘটনার এক ঘণ্টা পর হাইওয়ে পুলিশ ইনচার্জ মো. শাফায়েতুল্লাহ এসে আলামত সংগ্রহ করেন। ঘাতক পিকআপের চালক সাহিদুল ইসলাম ওরফে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।  এছাড়া এই মামলার  তেমন কোনো অগ্রগতি নেই বলে সিটি নিউজকে জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। 

সিটি নিউজের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি শনিবার সকালে যখন মৃতদের বাড়িতে পৌঁছান তখন আবেগঘন পরিস্থিতির তৈরি হয়। একই সাথে পাঁচ সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ তাদের মা। মৃতদের স্ত্রী-সন্তানরাও যেন দিশেহারা। দুর্ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকার বহু মানুষ ভিড় করেছেন শীল পরিবারের বাড়িতে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘ঘটনাটি সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। সবাই মিলে তাদের মরদেহ সৎকারে সাহায্য করেছে। এমন না যে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এসেছে, মুসলমানরাও এসেছে। সবাই পরিবারটির প্রতি সহানুভূতি এবং সমবেদনা জানিয়ে সাহায্য করছে।’

এমএএন/
আর্কাইভ