প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৩, ১১:৩৪ পিএম
আইওএসএ (আয়াটা অপারেশনাল সেফটি অডিট) সার্টিফিকেট প্রাপ্ত বাংলাদেশী একমাত্র বেসরকারী বিমানসংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স নিজস্ব অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে যথাক্রমে উন্নত পাইলট ও এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। প্রায় একদশক যাবত বাংলাদেশ এভিয়েশন তথা বিশ্বের আকাশ পরিবহন সংস্থাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইউএস-বাংলা। দেশের মানব সম্পদ উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এভিয়েশন সেক্টরে দক্ষ পাইলট, ইঞ্জনিয়ারসহ টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল কর্মী তৈরী করছে, যার মাধ্যমে দেশের আকাশ পরিবহন লাভবান হচ্ছে।
অগ্রসরমান বাংলাদেশের এভিয়েশন খাত। এভিয়েশন সেক্টরের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে পাইলট ও এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার সংকটে বিশ্বের প্রায় সব বিমানসংস্থা। আর এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অত্যন্ত দক্ষ ও সাহসিকতার সহিত ভবিষ্যত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পাইলট ও এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে।
যে কোনো বিমানসংস্থার বিমানবহরে এয়ারক্রাফট সংযুক্তির সাথে সাথে অতিরিক্ত পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় কিন্তু তা সহজেই স্বল্পতম সময়ে পূরণ করা যায় না। বহরে নতুন এয়ারক্রাফট সংযোজন ও নতুন রুটের ব্যাপ্তি ঘটানোর পূর্বেই পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা এয়ারলাইন্সের সুষ্ঠু ও সঠিক পরিকল্পনারই অংশ।
পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নকে সাথে নিয়ে এগিয়ে চলা ইউএস-বাংলা ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দু’টি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ৮টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৯টি এটিআর ৭২-৬০০সহ মোট ২০টি এয়ারক্রাফট আছে বিমানবহরে। পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে দু’টি ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস-৩৩০ যুক্ত করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রে পাইলট হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। যে সকল মেধাবী বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে ইংরেজী, পদার্থ বিজ্ঞান, সাধারণ ও উচ্চতর গনিতে গ্রেড-এ+সহ জিপিএ ৫ অথবা ‘ও’ লেভেলে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানসহ নূন্যতম ৫ বিষয়ে গ্রেড-এ এবং ‘এ’ লেভেলে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে গ্রেড-বি পেয়েছেন তারা আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন। স্নাতক পাশ অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। প্রার্থীকে ইংরেজীতে দক্ষ হতে হবে।
আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশী হতে হবে এবং অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে পারবে না। আবেদনের সময় বয়স হতে হবে ১৭-২৫ বছর। উচ্চতা- মেয়েদের জন্য ৫ফুট ৪ ইঞ্চি এবং ছেলেদের জন্য ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হতে হবে। আবেদনকারীদের শারীরিকভাবে ফিট হতে হবে। দৃষ্টিশক্তি হতে হবে ৬/৬। অধুমপায়ী ও নন-অ্যালকোহলিক হতে হবে। যে কোনো ধরনের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
পাইলটদের নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আইকিউ টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা (ইংরেজী, গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞান), সাইকোমেট্রিক, মেডিকেল ও মৌখিক পরীক্ষা। সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত ফ্লাইং স্কুলে ফ্লাইট ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হবে।
একটি এয়ারলাইন্সের পাইলটের যেমন প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তেমনি এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সর্বাগ্রে। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ভারতে এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। যে সকল মেধাবী বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে ইংরেজী, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিতে জিপিএ ৪.৫সহ জিপিএ ৪ অথবা ‘ও’ লেভেলে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, গনিত ও ইংরেজীতে নূন্যতম ৫ বিষয়ে গ্রেড-এ এবং ‘এ’ লেভেলে গণিত, রসায়ন, ইংরেজী ও পদার্থবিজ্ঞান সহ নুন্যতম ২ বিষয়ে গ্রেড-বি পেয়েছেন তারা আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন। প্রার্থীকে ইংরেজীতে দক্ষ হতে হবে।
আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশী হতে হবে এবং অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে পারবে না। আবেদনের সময় বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ২৪ বছর। উচ্চতা – ১৬২ সেন্টিমিটার হতে হবে। প্রার্থীর ওজন হতে বিএমআই এর উচ্চতার আনুপাতিক হারে। প্রার্থী অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। দৃষ্টিশক্তি হতে হবে ৬/৬। অধুমপায়ী ও নন-অ্যালকোহলিক হতে হবে। যেকোনো ধরনের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আইকিউ টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা, অ্যাপটিটিউড, সাইকোমেট্রিক, মেডিকেল ও মৌখিক পরীক্ষা। সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনায় ভারতের নির্ধারিত ফ্লাইং ট্রেনিং স্কুলে পাঠানো হবে।
সফলভাবে ট্রেনিং শেষ করার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন। অন্যান্য সুবিধাসহ বেতন ধার্য হবে মাসিক দুই লক্ষ টাকা। অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে ২টি উৎসব বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, মেডিকেল ইন্স্যূরেন্স, সম্পূর্ণ বিনা খরচে খাবারের ব্যবস্থা, এয়ার টিকেট ও প্রফিট বোনাস।
সফলভাবে ট্রেনিং শেষ করার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে যথাক্রমে ফার্স্ট অফিসার ও এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন। যা একজন প্রশিক্ষণার্থীর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার অপেক্ষায় থাকবে ইউএস-বাংলা। সাথে এভিয়েশনে দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে ইতিহাস সৃষ্টি করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
অনলাইনে আবেদন করা যাবে:
পাইলট প্রোগ্রামের জন্য https://studentpilot.usbair.com এবং এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার প্রোগ্রামের জন্য https://tame.usbair.com । আবেদনের শেষ তারিখ ২০ আগস্ট ২০২৩। যে কোনো ধরনের তদবির প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।