প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪, ১০:২৬ এএম
বিশ্বে চালের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ ভারত। দেশটির চাল রপ্তানি বন্ধ থাকায় সেই সুযোগে বাজারে সরবরাহ বাড়িয়েছে পাকিস্তান, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশ। কিন্তু এ বছর অনুকূল আবহাওয়ায় ভারতে উৎপাদন ভালো হয়েছে, ফলে আশা করা হচ্ছিল অচিরেই দেশটি রপ্তানির দ্বার খুলে দেবে।
অবশেষে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাসমতী ভিন্ন সাদা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
গত শুক্রবার এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে বলা হয়েছে, এই নির্দেশনা অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ নিশ্চিত ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর ১৪ মাস পর তারা সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল। সরকারের এই সিদ্ধান্তে ভারতের চাল রপ্তানিকারকরা সন্তুষ্ট হয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তকে তাঁরা চালের বাজারের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ বা তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। চাল রপ্তানিকারক সংগঠন রাইস ভিলার প্রধান নির্বাহী সুরজ আগরওয়াল বলেন, এই কৌশলগত সিদ্ধান্তে যে শুধু রপ্তানিকারকদের আয় বাড়বে তা নয়, বরং কৃষকরাও উপকৃত হবেন। খারিফ শস্য (বর্ষাকালীন) বাজারে আসছে; এই সিদ্ধান্তের বদৌলতে কৃষকরা ভালো দাম পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সরকারি নোটিশে আরো বলা হয়েছে, সিদ্ধ চালের রপ্তানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।
ভারত যে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে, তার ইঙ্গিত আগেই দেওয়া হয়েছিল। গত আগস্ট মাসের শুরুতে ভারত সরকারের শীর্ষ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নীতি আয়োগের সদস্য রমেশ চাঁদ বলেন, এবার ধানের আবাদ বেড়েছে, মজুদও আছে পর্যাপ্ত। চাল রপ্তানি হলেও ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
এদিকে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশের অনুরোধে ভারত চাল রপ্তানি করেছে। এ বছর ভারত মালদ্বীপে চাল রপ্তানি করেছে এক লাখ ২৪ হাজার ২১৮ মেট্রিক টন, মরিশাসে রপ্তানি করেছে ১৪ হাজার মেট্রিক টন, মালাওয়েতে এক হাজার মেট্রিক টন, জিম্বাবুয়েতে এক হাজার মেট্রিক টন ও নামিবিয়ায় করেছে এক হাজার মেট্রিক টন।
গত বছর ভারতের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কানাডা। দেশগুলো ভারতের ওই সিদ্ধান্তকে অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য বাধা হিসেবে উল্লেখ করে বলে, এতে চাহিদা আছে—এমন অঞ্চলে খাদ্যের প্রভাব বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ বিশ্বের ৪০ শতাংশ চাল রপ্তানি করে ভারত। এ অবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কৃষি কমিটির এক সভায় জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ইইউ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ বৈশ্বিক খাদ্য বাজারে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।