• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর

অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট, আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম

অর্থমন্ত্রী  মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট, আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৫৩তম বাজেট বৃহস্পতিবার বিকালে উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটি অর্থমন্ত্রী হিসেবে মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট উপস্থাপন।

১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার ৫৩ বছরের ব্যবধানে হাজার গুণের বেশি (১০১৪ গুণ) বড় বাজেট দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

নানা সংকটের মধ্যেও নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী স্বপ্ন দেখছেন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের। এজন্য অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’।

বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিকালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত এই বাজেট উত্থাপন করবেন। তার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদন হবে এবং পরে ওই প্রস্তাবে সই করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে সংসদে পাশ হয়ে ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বাজেট পেশের রেকর্ড সাবেক দুই অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও এম এ মুহিতের। তারা দুজনেই ১২ বার করে বাজেট দিয়েছেন।

স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে ৩০ বার বাজেট দিয়ে রেকর্ড গড়েছেন সিলেটের তিন অর্থমন্ত্রী। আর আট অর্থমন্ত্রী বাকি ২৩ বার বাজেট দিয়েছেন।

সিলেটের এই তিন অর্থমন্ত্রী মধ্যে বর্তমান প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিত ও প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সর্বোচ্চ ১২ বার করে বাজেট দিয়েছেন। তারমধ্যে এরশাদ সরকারের সময় (১৯৮২-৮৩ এবং ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর) দুটি বাজেট দিয়েছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। অন্যদিকে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া দিয়েছেন ৬ অর্থবছরের বাজেট।

সিলেটের অর্থমন্ত্রীদের মধ্যে প্রথমে ১৯৮০-৮১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন এম সাইফুর রহমান জিয়াউর রহমানের শাসনামলে। তিনি ১৯৮১-৮২ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন। এর পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময় আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৮২-৮৩ ও ১৯৮৩-৮৪ দুই অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন।

এরপর অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান বিএনপির শাসনামলে একটানা ১৯৯১-৯২, ১৯৯২-৯৩, ১৯৯৩-৯৪, ১৯৯৪-৯৫ ও ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ৫ বার বাজেট পেশ করেছিলেন।

সাইফুর রহমানের পরেই আরেক সিলেটি অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬-৯৭, ১৯৯৭-৯৮, ১৯৯৮-৯৯, ১৯৯৯-২০০০, ২০০০-০১ ও ২০০১-০২ অর্থবছরে টানা ৬ বার বাজেট পেশ করেন।

এরপর আবার খালেদা জিয়ার শাসনামলে টানা ৬ বার বাজেট পেশ করেন প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। তিনি ২০০২-০৩, ২০০৩-০৪, ২০০৪-০৫, ২০০৫-০৬ ও ২০০৬-০৭ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছিলেন।

এরপর আবারও তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার। এ সরকারের আমলে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত ১২ বার বাজেট পেশ করেছেন। অর্থবছরগুলো হলো- ২০০৯-১০, ২০১০-১১, ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭, ২০১৭-২০১৮ ও ২০১৮-২০১৯।

এর পরের পাঁচটি বাজেট পেশ করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আ ফ ম মুস্তফা কামাল। 

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম বাজেট প্রস্তাবনা জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে। এ বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। এর পর তিনি ১৯৭৩-৭৪ ও ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরগুলোতে দুবার বাজেট পেশ করেছিলেন। ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছরে বাজেট পেশ করেছিলেন ড. আজিজুর রহমান।

এ ছাড়া ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরে সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৭-৭৮ লে. জেনারেল জিয়াউর রহমান ও ১৯৭৮-৭৯ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেন।

পরে ১৯৭৯-৮০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছিলেন ড. এমএন হুদা। এরপর টানা চার অর্থবছর ১৯৮৪-৮৫, ১৯৮৫-৮৬, ১৯৮৬-৮৭ ও ১৯৮৭-৮৮ বাজেট পেশ করেন ড. এম সাইদুজ্জামান।

১৯৮৮-৮৯ অর্থবছরে মেজর জেনারেল মুনিম, ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে ড. ওয়াহিদুল হক ও ১৯৯০-৯১ অর্থবছরে মেজর জেনারেল মুনিম বাজেট পেশ করেন।

ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে ২০০৭-০৮ ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছিলেন।

স্বাধীনতার পর যত বাজেট-

১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে তাজউদ্দীন আহমদ ৭৮৬ কোটি টাকা।

১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে তাজউদ্দীন আহমদ ৯৯৫ কোটি টাকা।

১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে তাজউদ্দীন আহমদ ১০৮৪.৩৭ কোটি টাকা।

১৯৭৫-৭৬ অর্থবছরে ড. আজিজুর রহমান মল্লিক (এ আর মল্লিক) ১৫৪৯.১৯ কোটি টাকা।

১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ১৯৮৯.৮৭ কোটি টাকা।

১৯৭৭-৭৮ অর্থবছরে লে. জেনারেল জিয়াউর রহমান ২১৮৪ কোটি টাকা।

১৯৭৮-৭৯ অর্থবছরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২৪৯৯ কোটি টাকা।

১৯৭৯-৮০ অর্থবছরে ড. এম এন হুদা ৩৩১৭ কোটি টাকা।

১৯৮০-৮১ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৪১০৮ কোটি টাকা।

১৯৮১-৮২ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৪৬৭৭ কোটি টাকা।

১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ৪৭৩৮ কোটি টাকা।

১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ৫৮৯৬ কোটি টাকা।

১৯৮৪-৮৫ অর্থবছরে এম সাইদুজ্জামান ৬৬৯৯ কোটি টাকা।

১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে এম সাইদুজ্জামান ৭১৩৮ কোটি টাকা।

১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে এম সাইদুজ্জামান ৮৫০৪ কোটি টাকা।

১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে এম সাইদুজ্জামান ৮৫২৭ কোটি টাকা।

১৯৮৮-৮৯ অর্থবছরে মেজর জেনারেল (অব.) মুনিম ১০৫৬৫ কোটি টাকা।

১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে ড. ওয়াহিদুল হক ১২৭০৩ কোটি টাকা।

১৯৯০-৯১ অর্থবছরে মেজর জেনারেল (অব.) মুনিম ১২৯৬০ কোটি টাকা।

১৯৯১-৯২ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ১৫৫৮৪ কোটি টাকা।

১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ১৭৬০৭ কোটি টাকা।

১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ১৯০৫০ কোটি টাকা।

১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ২০৯৪৮ কোটি টাকা।

১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ২৩১৭০ কোটি টাকা।

১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে শাহ এ এম এস কিবরিয়া ২৪৬০৩ কোটি টাকা।

১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে শাহ এ এম এস কিবরিয়া ২৭৭৮৬ কোটি টাকা।

১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে শাহ এ এম এস কিবরিয়া ২৯৫৩৭ কোটি টাকা।

১৯৯৯-০০ অর্থবছরে শাহ এ এম এস কিবরিয়া ৩৪২৫২ কোটি টাকা।

২০০০-০১ অর্থবছরে শাহ এ এম এস কিবরিয়া ৩৮৫২৪ কোটি টাকা।

২০০১-০২ অর্থবছরে শাহ এ এম এস কিবরিয়া ৪২৩০৬ কোটি টাকা।

২০০২-০৩ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৪৪৮৫৪ কোটি টাকা।

২০০৩-০৪ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৫১৯৮০ কোটি টাকা।

২০০৪-০৫ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৫৭২৪৮ কোটি টাকা।

২০০৫-০৬ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৬১০৫৮ কোটি টাকা।

২০০৬-০৭ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৬৯৭৪০ কোটি টাকা।

২০০৭-০৮ অর্থবছরে এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ৯৯৯৬২ কোটি টাকা।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ৯৯৯৬২ কোটি টাকা।

২০০৯-১০ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ১১৩,৮১৫ কোটি টাকা।

২০১০-১১ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৩২,১৭০ কোটি টাকা।

২০১১-১২ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৬৫,০০০ কোটি টাকা।

২০১২-১৩ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯১,৭৩৮ কোটি টাকা।

২০১৩-১৪ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ৪ লাখ ২৭০ কোটি টাকা।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।

২০১৯-২০ অর্থবছরে আ হ ম মুস্তফা কামাল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছরে আ হ ম মুস্তফা কামাল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে আ হ ম মুস্তফা কামাল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে আ হ ম মুস্তফা কামাল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে আ হ ম মুস্তফা কামাল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।

আর্কাইভ