প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৪, ১১:০০ এএম
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নির্ধারিত দামে নগদ ডলার মিলছে না। তবে কিছু ব্যাংকে চড়া দাম দিয়ে সীমিত পরিমাণে ডলার পাওয়া যাচ্ছে। খোলাবাজারে ডলার কিছুটা পাওয়া গেলেও দাম বেশ চড়া। ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলারের নির্ধারিত সর্বোচ্চ দাম হচ্ছে ১১৭ টাকা। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১২২ থেকে ১২৫ টাকা করে। খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১২৬ টাকা করে।
চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে কোথাও আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। নগদ ডলারের পাশাপাশি অন্যান্য খাতে ডলারের দামও নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি।
বর্তমানে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশেন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) যৌথ বৈঠক করে ডলারের দাম নির্ধারণ করে। তারা বিভিন্ন খাতে ডলার কেনা ও বিক্রির দর নির্ধারণ করলেও নগদ ডলারের দাম নির্ধারণ করে না। এর দাম ব্যাংকগুলোই নির্ধারণ করে।
বর্তমানে ব্যাংকগুলোর মধ্যে বেসরকারি খাতের ওয়ান ব্যাংক ও বিদেশি ব্যাংক আল ফালাহ নগদ ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করেছে ১৭ টাকা। তারা প্রতি ডলার নগদ কিনছে ১১৬ টাকা করে। কিন্তু তারা চাহিদা অনুযায়ী ডলার কিনতে পারছে না বলে বাজারে বিক্রিও করতে পারছে না। অন্যান্য বেশির ভাগ ব্যাংকেই নগদ ডলার ১১৫ থেকে ১১৬ টাকা নির্ধারণ করেছে।
কিন্তু এই দামে তারা ডলার বিক্রি করছে না। কারণ তারা বাজার থেকে আরও বেশি দামে ডলার কিনছে। সেগুলো নানা ধরনের সার্ভিস চার্জ ও প্রিমিয়ামসহ সর্বোচ্চ ১২২ থেকে ১২৫ টাকা করে বিক্রি করছেন।
গ্রাহকরা চিকিৎসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদেশে যাওয়ার জন্য ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ডলার পাচ্ছেন না। ফলে তারা আরও চড়া দামে খোলাবাজার থেকে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১২৬ টাকা করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্সের ডলারের দামও কমেনি। কারণ এর দাম কমালে রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। ফলে চড়া দাম দিয়েই তারা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স কিনছে। বাফেদা ও এবিবির বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত দর হচ্ছে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা। কিন্তু ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স কিনছে ১১৮ থেকে ১২৬ টাকা করে। ওইসব ডলার আমদানিসহ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছে ১২০ থেকে ১২৭ টাকা করে।
কোনো কোনো ব্যাংক আমদানিতে আরও বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে। এতে আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো বাড়তি দাম নিচ্ছে সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য নামে।
এদিকে আগাম ডলার কেনাবেচার দর বেঁধে দেওয়া হলেও বাজারে তার প্রতিফলন নেই। বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দামে আগাম ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। আগাম ডলারের বুকিং ছাড়া ব্যাংকগুলো এখন এলসি খুলছে না। ফলে এলসি খোলার আগে ডলারের আগাম বুকিং দিতে হচ্ছে। ফলে এর চাহিদা বেড়েছে। এতে বেড়েছে দামও।
এদিকে বাফেদা ডলারের বাজারকে আরও কার্যকর করতে তাদের কারিগরি কমিটি পুনর্গঠন করেছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারিগরি কমিটিই ডলারের দাম নির্ধারণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে থাকে।
আট সদস্যের এ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) সুভাষ চন্দ্র দাসকে। কমিটির সদস্য হিসাবে রয়েছেন, জনতা ব্যাংকের ডিএমডি মহিউদ্দিন মাহমুদ, মেঘনা ব্যাংকের ডিএমডি সাদিকুর রহমান, অগ্রণী ব্যাংকের ডিএমডি মুখলেছুর রহমান, ট্রাস্ট ব্যাংকের ইভিপি মাসুদ শাহজাহান, আইএফআইসি ব্যাংকের ইভিপি মোহাম্মদ শাহিন উদ্দিন, যমুনা ব্যাংকের ইভিপি মেহেদী হাসান ও ইসলামী ব্যাংকের এসভিপি ইয়াকুব মিয়া।