প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৩, ০৭:৫৪ পিএম
ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই মধ্যে ১৮ হাজার ইএফডি (ইলেক্ট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) মেশিন বসানো হয়েছে। এতে ধারবাহিকভাবে বাড়ছে ভ্যাট আদায়ের পরিমাণও। তবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজস্ব আদায়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
দেশের উন্নয়ন আর বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের বিপরীতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মোট রাজস্ব খাত থেকে আয়ের লক্ষ্য ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকেই রাজস্ব আদায় করা হবে এক লাখ ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা।
দেখা যায়, এ লক্ষ্য পূরণে অনেকটা তৎপর রাজস্ব বিভাগ। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১-’২২ অর্থবছরে ভ্যাট আদায় হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। অন্যদিকে ১৭ শতাংশ বেড়ে ২০২২-’২৩ অর্থবছরে ভ্যাট আদায় হয় ১ লাখ ২৫ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা।
মাঠ পর্যায়ে ভ্যাট আহরণে কঠোর মনিটরিং, ভ্যাট ফাঁকি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণই ভ্যাট আদায়ে ভালো সাড়া ফেলেছে বলে মনে করে এনবিআর।
তবে দেশের জন্য নিজ উদ্যোগেই রাজস্ব প্রদানে প্রতিটি নাগরিককে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
তিনি বলেন, যেখানে সরকারের রাজস্বের প্রশ্ন আসে, সেখানে কোনো আপস নয়। এই মানসিকতা ব্যক্তি পর্যায়ে সবার মধ্যে থাকা উচিত। কারণ এখান থেকেই আমার দেশ আয় করে। সেই আয় থেকেই আমার দেশ আমায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়। সেগুলো কি? যেগুলো ব্যক্তি পর্যায়ে করা হয় না, সরকার সেই সব সুযোগ-সুবিধা দেয়। এগুলো ব্যক্তি পর্যায়ে করা সম্ভব না বলেই রাষ্ট্রকে করতে হয়। সরকার ব্যবসার প্রসারের জন্য সুবিধাদি দেয়।
ভ্যাট আদায় স্বচ্ছ ও নিরবচ্ছিন্ন করতে এনবিআর এরই মধ্যে ১৮ হাজার ইএফডি মেশিন বসিয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বিপণন প্রতিষ্ঠান ও এনবিআরের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ সিস্টেম।
এ অবস্থায় ভ্যাট আদায়ে জোর দিতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন দ্রুত সরবরাহের তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. এম. আবু ইউসুফ বলেন, জনগণ ভ্যাট দিচ্ছে; কিন্তু তা ঠিকমতো সবসময় সরকারের কোষাগারে জমা পড়ছে না। তার মানে হচ্ছে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায় হচ্ছে। সরকার কিন্তু ইএফডি মেশিন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে আজ থেকে ৭/৮ বছর আগে। এটি আউটসোর্সিং করা হচ্ছে। প্রায় ৩ লাখের ওপর মেশিন বসানো হবে। হয় তো এক্ষেত্রে কাজও চলছে। তবে তার অগ্রগতি আমরা তেমন একটা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা যদি তা করতে পারি, তাহলে কিন্তু ভ্যাট আদায় আরও বাড়বে। দিনশেষে তা আমাদের বাজেটে ভূমিকা রাখবে।
চলতি ২০২৩-’২৪ অর্থবছরে আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্য এক লাখ ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম চার মাসে ভ্যাট আহরণের পরিমাণ ৩৫ হাজার ৬৮৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/