• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আগামী জুনের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি: গভর্নর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম

আগামী জুনের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি: গভর্নর

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৈদেশিক মুদ্রা সংকট, ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্থর অবস্থা এবং মূল্যস্ফীতির বাড়তি গতিতে জীবনযাত্রার হিসাব মেলানো যখন কঠিন হয়ে পড়ছে, তখন আগামী জুনের মধ্যেই এমন পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এক বিশেষ সাক্ষাতকারে জানান, অভ্যন্তরীণ খাদ্য নিরাপত্তা ও এসএমই খাতকে আগের অবস্থানে রেখে মূল্যস্ফীতির বাড়তি চাপ আর রিজার্ভ সংকট ঘোচানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পলিসি পরিবর্তনের ফল চলতি অর্থ বছরেই দৃশমান হবে।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের এসএমই এবং এগ্রিকালচারে কোনো সমস্যা নেই। এসএমই এর ক্ষেত্রে আপনারা জানেন যে অল্প বিনিয়োগে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে আমরা দুইটি বিষয় নিয়ে বেশ চাপের মধ্যে রয়েছি। প্রথমত, মূল্যস্ফীতি আর দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আমরা সুদহার ও পলিসি রেট বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। তবে মনিটারি পলিসির একটি ল্যাগ এফেক্ট আছে। এটি তাড়াতাড়ি করা যায় না। এক্ষেত্রে আমাদের এক/দুই মাস সময় লাগে। আমরা আশা করি, এই মাস থেকে আমরা তার একটি প্রতিফলন মূল্যস্ফীতির হারে দেখতে পাবো। এ মাসে যখন মূল্যস্ফীতির হার প্রকাশ করা হবে, তখন আপনারা দেখতে পাবেন যে মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে।’  

অর্থনীতির নতুন দ্বার উন্মোচনে চালু হওয়া মেগা প্রকল্পগুলো বিশেষ অবদান রাখবে বলেও মনে করেন আর্থিক খাতের এই কর্ণধার।

আসন্ন নির্বাচনের পরই দেশের অর্থনীতি আগের অবস্থানে ফিরে আসবে, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, 
আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো যেমন- মেট্রোরেল, টানেল, পদ্মা সেতু, রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্ট ও এক্সপ্রেস ওয়ে থেকে সুবিধা আসছে। তার পাশাপাশি আমাদের অন্যান্য খাতও ভালো করছে। কাজেই নির্বাচনের পর যখন নতুন সরকার গঠন হবে, তখন খুব দ্রুত অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের ধারণা এই অর্থবছরের শেষে জুনের মধ্যে আমাদের অর্থনীতি পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াবে। 

এক্ষেত্রে গভর্নর আশ্বস্ত করেন, ডলার বাজার নিয়ে অস্থিরতা দেখার দেয়ার আশঙ্কা নেই। দাম কমবে ডলারের এবং মিলবে স্বস্তি। 

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাফেদা (বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন), এবিবি (অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ) এবং বাংলাদেশে ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুসারে বর্তমানে যে ডলার রেট রয়েছে, তা মোটামুটি বাজারের বিনিময় হারের কাছাকাছি রয়েছে। কাজেই আমি মনে করি, এটি খুব বেশি একটা বাড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ এখন যে ডলারের রেট বাড়তি, তা মূলত মূল্যস্ফীতির জন্য। 

সেই সঙ্গে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয়ের অর্থ থাকায় রিজার্ভ নিয়েও শঙ্কা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, 
আমাদের রিজার্ভ আইএমএফের বিপিএম৬ অনুসারে বর্তমানে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। এটি দিয়ে আমরা আমাদের ৪ মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারব। সাধারণত, ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকতে হয়, যেখানে আমরা ৪ মাস পর্যন্ত ব্যয় করতে পারব।

সংকট, অস্থিরতার মধ্যেও রাজস্ব আদায়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বাড়তি আয়, শিল্প খাতে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ ও বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধিই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সহজ করবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

প্রসঙ্গত, পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, অক্টোবরে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয়েছে, সেপ্টেম্বরে যেটি ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ