প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৩, ০৮:১১ পিএম
বাজারে দাম কমাতেই ডিম ও আলু আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এমন কথা বলেন তিনি।
সচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় গত বছর সয়াবিন তেলের দাম এক পর্যায়ে প্রতি লিটার ২০৫ টাকা হয়ে যায়। সেটি আমরা ধাপে ধাপে কমিয়ে সর্বশেষ এক লিটারের বোতলজাত তেলের দাম ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করে বিক্রি করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দাম ওঠানামার সঙ্গে মিল রেখে তেল-চিনির দাম সমন্বয় করা হয়।’
সবসময়ে আলু রফতানি করা হতো এবং ডিম আমদানি বন্ধ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা জানি, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। সেই যোগানের উৎস হলো দেশের উৎপাদন ও আমদানি। যেহেতু আমদানি বন্ধ ছিল, আমরা দেখলাম দাম অনেক বেড়ে গেছে। ফলে আমরা প্রথমে দাম নির্ধারণ করে দিই। কিন্তু তাতে সফল না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে ডিম ও আলু আমদানির জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি।’
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘গতকাল (১২ নভেম্বর) পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৫ মেট্রিক টনের বেশি আলু আমদানি হয়েছে। এছাড়া ডিম আমদানি হয়েছে ৬২ হাজার পিস। কিন্তু ২৫ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ডিম আমদানি নয়, দাম কমানো।’
আমদানি শুরু হতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ডিম আমদানি করতে হলে এখানে রফতানিকারক দেশের দুটি সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। একটা হচ্ছে, যে চালানটি আসছে সেটি বার্ড ফ্লু মুক্ত হতে হবে; অন্যটি যে দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে, সেটি অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা বার্ড ফ্লুমুক্ত হতে হবে।
বাণিজ্য সচিব বলেছেন, ‘বিশ্ব প্রাণি স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে জেনেছি, তাদের কাছে এভাবে কোনো দেশকে বার্ড ফ্লু কিংবা অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জামুক্ত ঘোষণার কোনো তালিকা নেই। তখন এটিকে সংশোধন করে আইপিও দিয়েছি। একটি অঞ্চল যদি বার্ডফ্লু মুক্ত থাকে, সেখান থেকেও আমদানি করা যাবে। এ কারণে ডিম আমদানি সম্ভব হচ্ছে। আরও আমদানি করা যাবে।’
ডিম ও আলু আমদানি উন্মুক্ত করার পরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সরকার নির্ধারিত দাম বাস্তবায়নের চেষ্টা করায় এ দুটি পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এটা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে গতকাল (১২ নভেম্বর) নির্দেশনা গেছে যে, সরকার নির্ধারিত আলুর দাম বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসকরা আজকে (১৩ নভেম্বর) থেকে প্রতিটি কোল্ড স্টোরেজে কর্মকর্তা নিয়োগ করে দিয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতেই কেবল ২৭ টাকা দামে আলু বিক্রি হবে। এরপর ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকায় যাতে বিক্রি হয়, সে জন্য তদারকি করা হবে।
সিনিয়র সচিব বলেন, আলুর ক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে দুই লাখ আইপি দেয়া হয়েছে। ঋণপত্র খোলা হয়েছে, কাজেই দাম হয়তো আরও অনেক কমবে। কিন্তু যতদিন দাম স্থিতিশীল না হবে, এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া অন্যান্য পণ্যের আমদানি বাড়াতেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে খাদ্যপণ্য যেমন, তেল, চিনি, আলু ও ডাল, এসব পণ্যে ঋণপত্র খুলতে কোনো সমস্যা না হয়। তাছাড়া ডলারের কোনো সমস্যা যাতে না হয়, সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/