• ঢাকা সোমবার
    ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

৪৫ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি ৮০ টাকায়

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৩, ০৭:৫৮ পিএম

৪৫ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি ৮০ টাকায়

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চট্টগ্রামে পেঁয়াজ নিয়ে অস্থিরতা কাটেনি। ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার বেশি দামে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৯০ টাকার বেশি। নগরীতে কোনো পণ্যই সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমতো দামে এসব পণ্য বিক্রি করছেন। একইভাবে আলুর বাজারও এখনো স্বাভাবিক হয়নি। সংকট অজুহাতে এখনো ৪৫ টাকার বেশি দামে আলু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ভোজ্যতেল ৫ টাকা কমানো হলেও চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে এর কোনো প্রভাব নেই। আগের মতোই অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। আবার কোথাও কোথাও দাম কমার বদলে আরও বেড়েছে। সব ধরনের ভোজ্যতেল সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তাদের অভিযোগ বাজার তদারকির অভাবে সরকার নির্ধারিত মূল্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব পণ্য বিক্রি করছেন না।

প্রতি কেজি ভালোমানের ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। তবে কিছু নিম্নমানের পেঁয়াজ সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে মাছ ও সবজির দাম আরও বেড়েছে। সরবরাহ কম থাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়লেও দাম আকাশচুম্বী। সরবরাহ সংকটে নতুন করে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দামও। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে কষ্টে আছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। ১৪ সেপ্টেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫-৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৪-৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি ডিমের মূল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, বোতলজাত সয়াবিন ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা কমিয়ে যথাক্রমে ১৬৯ ও ১৪৯ টাকা এবং পামওয়েলের দাম ৪ টাকা কমিয়ে ১২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক আরোপের ফলে চট্টগ্রামের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। এর প্রভাব এখনো কাটেনি। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে মিসর, তুরস্ক, মিয়ানমার ও চীন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আমদানি করতে সুবিধা বেশি। সড়কপথে পেঁয়াজ আনা যায়। ফলে সময়ও লাগে কম আর অন্যান্য খরচও কম হয়। এছাড়া চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের শক্ত সিন্ডিকেট রয়েছে। প্রশাসন কঠোর না হলে এ সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব নয়। সিন্ডিকেটের কারণে খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা সরকার নির্ধারিত পাইকারি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন না। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ কিনছেন। এ কারণে তারাও বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।

আলুর বাজারে সংকট রয়েছে। রিয়াজউদ্দিন বাজার, চকবাজার ও চাক্তাইয়ের বেশিরভাগ আড়তে আগের মতো আলু নেই। বেশিরভাগ আড়ত খালি পড়ে রয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও আলু বিক্রি হচ্ছে না। আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে। এমনকি ডিমও সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৫০-১৫২ টাকা, সাদা ডিম ডজন ১৪৮ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

ভোগ্যপণ্যের দামও কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার নগরীতে ভারতীয় আদা ২৪০ টাকা, চায়না রসুন ১৯০-২০০, দেশি রসুন ২৪০, মসুরের ডাল ১৩০, মোটা মসুরের ডাল ১০৫, মুগ ডাল ১৩০, খেসারির ডাল ৯০, বুটের ডাল ১০০, ছোলা ৭৫, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫, চিনি ১৪০, দুই কেজির প্যাকেট ময়দা ১৪০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বলেন, ‘পেঁয়াজের বাজার এখনো অস্থির। বাজারে পেঁয়াজের কিছুটা সংকট রয়েছে। এ কারণে দামও সহসাই কমবে বলে মনে হচ্ছে না।’

বাজারদর : সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বড় আকারের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। করলা, বরবটির দাম ছুঁয়েছে ১০০ টাকা। নতুন শিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। ছোট ফুলকপি ৬০ টাকার কমে মিলছে না। এছাড়া ঝিঙে, চিচিঙ্গা ও ধুন্দুলের কেজিও ৬০ থেকে ৮০ টাকা। পটল, ঢেঁড়সের কেজিও ৬০ টাকা। তবে সস্তার সবজি হিসাবে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। চট্টগ্রামে ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকায়, কক ২৮৮-৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাঝারি ও বড় আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০৫০-১৭০০ টাকা, রুই মাছ ৬০০ টাকা, কাতল ৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১০০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কই ৪০০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা ও শিং ৪৫০-৬০০ টাকা।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ