প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩, ১২:৪৭ এএম
দেশের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের দাম। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রথমবারের মতো আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভাশেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, উৎপাদক, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ের খরচ ও মুনাফা বিবেচনায় নিয়েই আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে কারো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ বেশি মুনাফা লাভের জন্য অবৈধভাবে পণ্য মজুদ রাখে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলুর দাম নির্ধারণ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ৩৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কোল্ডস্টোরেজে রাখাসহ সবকিছু মিলিয়ে আলুর দাম কেজি প্রতি ৩৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয় জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তবে ঢাকাতে যদি এ দাম হয়, তাহলে চট্টগ্রামে তা একটু বাড়তে পারে। সারা বাংলাদেশকে বিবেচনায় নিয়েই ভোক্তা পর্যায়ে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কোল্ড স্টোরেজ গেটে আলুর দাম হবে ২৬ থেকে ২৭ টাকা কেজি।
ডিমের দাম নির্ধারণ প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, ডিমের দাম প্রতি পিস ১২ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। পাশাপাশি ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা হওয়ায় আমরা এই দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। প্রতি পিস ডিম এখন থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করা হবে। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
ডিম আমদানির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজার পর্যালোচনা করে প্রথমে সীমিত পর্যায়ে আমদানির অনুমতি দেয়া হবে। এরপরও যদি দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে ব্যাপক আকারে আমদানি করা হবে। বাজার ঠিক রাখার জন্যই আমদানি করা হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে পেঁয়াজ মজুত করার সুবিধা নেই। কিন্তু ডিমের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা হচ্ছে, ডিম আমরা আমদানি করতে পারব। এতে বাজারের বাড়তি দামের প্রভাব কমানো সম্ভব হবে।
ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণের বিষয়টিকে ন্যায্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই এটি কম না, যথেষ্ট ভালো দাম।
এদিকে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামও বেঁধে দিয়েছে সরকার। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৬৪ টাকা থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা ছিল। যা কমিয়ে সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা করেছি।
পেঁয়াজ আলুর মতো মজুত করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে পর্যালোচনা করে এই দাম নির্ধারণ করেছে। কাজেই এখানে কোনো সমস্যা হবে না।
কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ অনুসারে, এই দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
নির্ধারিত দামে এসব পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করার জন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ছাড়াও কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করবেন বলেও জানান টিপু মুনশি। তিনি বলেন, যারা নির্দেশনা মানবে না, আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভোক্তা অধিকার আজকে না হলেও কাল থেকে অভিযান শুরু করবে। এছাড়া সকল জেলার জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হবে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের জন্য। দেশের সর্বত্র মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার প্রমুখ।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/