• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে খাবার পানির দাম

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩, ০৬:৪৩ পিএম

৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে খাবার পানির দাম

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

একদিকে এক লাফে বোতলজাত পানির দাম বাড়ানো হয়েছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। অন্যদিকে বিগত ২ মাসের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়েছে কোমল পানীয়র দাম। এই বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে ব্যবস্থা নিতে চিঠিও দিয়েছে তারা। তবে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, অধিক শক্তিশালী হয়েও অন্যের কাঁধে দায়িত্ব চাপিয়ে নিজেদের দুর্বলতাকে প্রকাশ করেছে কমিশন।

উচ্চমূল্যের চাপে নাকাল ভোক্তারা যখন পড়েছেন বাজার চাহিদা মেটাতে না পারার আকালে; তখন এক লাফে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে এক বোতল খাবার পানির দাম।

এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে এক ক্রেতা বলেন, ৫০০ মিলিলিটারের পানির দাম ২০ টাকা। এটি তো অবশ্যই বেশি। পানির দাম বেড়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য অবশ্যই অস্বস্তিকর।

এদিকে এক বিক্রেতা বলেন, বাড়তি দামে বাধ্য হয়ে পানি কিনতে হয়েছে। এখন কী কারণে দাম বেড়েছে, সেটির সঠিক কারণ জানা নেই।

গত ২০ আগস্ট বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের বাজার পরিদর্শনের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, ৬টি ব্র্যান্ড যেমন: কিনলে, অ্যাকোয়াফিনা, মাম, ফ্রেশ, পুষ্টি, জীবন হাফ লিটার পানির দাম ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে এবং বাজারও রয়েছে ওই ৬টি ব্র্যান্ডের দখলে। শুধু তা-ই নয়, ২০ টাকার পানিতে পাইকারি ও খুচরা মূল্যে ৮ থেকে ৯ টাকা ব্যবধান পেয়েছে কমিশন। যার কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা নেই খুচরা বিক্রেতাদের কাছে।

তারা জানান, ২৫০ মিলি আগে ১০ টাকা দরে বিক্রি হতো। এখন তা ১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম কোম্পানি বাড়িয়েছে, তারাই বলতে পারবে।

কমিশনের ৪ সেপ্টেম্বরের আরেকটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন ব্র্যান্ড যেমন: কোকাকোলা, সেভেন আপ, মিরিন্ডা, আরসি, ফান্টা, মোজো, স্প্রাইট, স্পিড, টাইগারসহ সব ব্র্যান্ড কোমল পানীয়র দাম ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধিকে ‍‍`অস্বাভাবিক‍‍` হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

দায়িত্ব এড়াচ্ছে প্রতিযোগিতা কমিশন?

পানি এবং পানীয়র অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে চিঠিও দিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, প্রাইস ম্যানিপুলেশনটি এ রকম যে বিক্রেতা রয়েছে, তাকে বলা হচ্ছে যে তুমি ৫ টাকা বেশি নিবে, কিন্তু আমাকে দিতে হবে না, আমাকে তুমি আগে যে রেট দিতে তা দিলেই হবে। আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক একটি প্রতিকার চেয়েছি।

কাজেই প্রশ্ন উঠেছে, কমিশন বেশি শক্তিশালী হয়েও কেন দায়িত্ব দিলো অধিদফতরকে? ক্যাবের মতে, এমন পদক্ষেপে অন্যের কাঁধে দায়িত্ব দিয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে কমিশন।

কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, অবশ্যই প্রতিযোগিতা কমিশনের তাদের আইন অনুযায়ী সরাসরি ব্যবস্থা নেয়া বেশি যুক্তিযোগ্য। অন্য একটি বিভাগের ওপরে দায়িত্ব দিয়ে দেয়া অনেকটা অন্যের কাঁধে নিজের দায়িত্ব দিয়ে দেয়ার মতো।

এর জবাবে কমিশন বলছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ মূল্য নির্ধারণে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে চায় সংস্থাটি।

প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন বলেন, আমরা আরেকটু বিশ্লেষণ করতে চাই। তারপর যদি আমরা উপযুক্ত মনে করি, তাহলে যারা যারা বাজারে এই অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ এর আওতায় ব্যবস্থা নেব।

ফলে ভোক্তাদের প্রশ্ন, চূড়ান্ত রায়ে যদি দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক হয়, তাহলে কি বাড়তি টাকা ফেরত পাবেন তারা? 

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ