• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

ভারতে ৬ বছরে সর্বোচ্চ চিনির দাম

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩, ০১:১৩ এএম

ভারতে ৬ বছরে সর্বোচ্চ চিনির দাম

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতে চিনির দাম ৩ শতাংশের বেশি বেড়ে ৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দেশটির ব্যবসায়ী ও শিল্প কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এতে বলা হয়, ভারতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চিনির দাম বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি। এতে দেশটিতে চিনির দাম বেড়ে ৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা নতুন মৌসুমের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

মঙ্গলবার ভারতে প্রতি মেট্রিক টন চিনির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৭৬০ রুপি (৪৫৪.৮০ ডলার), যা ২০১৭ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। তবে বৈশ্বিক সাদা চিনির বেঞ্চমার্কের তুলনায় ভারতীয় দাম প্রায় ৩৮ শতাংশ কম।

বোম্বে সুগার মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক জৈন বলেন, খরার কারণে চিনি কলগুলো উদ্বিগ্ন। কারণ, নতুন মৌসুমে চিনির উৎপাদন দ্রুত কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চিনি কলগুলো কম দামে চিনি বিক্রি করতে আগ্রহী নয়।

তবে ডিলাররা বলছেন, উচ্চমূল্য বলরামপুর চিনি (বিএসি.এনএস), দ্বারিকেশ সুগার (ডিডাব্লুএআর.এনএস), শ্রী রেণুকা সুগারস (এসআরইএস.এনএস) ও ডালমিয়া ভারত সুগারের (ডিএলএমআই.এনএস) মতো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বাড়াবে। কৃষকদের সময়মতো অর্থ দিয়ে সহায়তা করবে প্রতিষ্ঠানগুলো।

আর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সামনে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে এবং এ কারণে নয়াদিল্লি চিনি রফতানির অনুমতি না-ও দিতে পারে। এতে বিশ্বব্যাপী চিনির দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী চিনির দাম কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে।

প্রতিবেদনে রয়টার্স আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে কম বৃষ্টিপাতের কারণে ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া নতুন মৌসুমে চিনির উৎপাদন ৩  দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৩১ দশমিক ৭ মিলিয়ন মেট্রিক টনে নেমে যেতে পারে, যা ভারতের মোট উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি।

এদিকে সম্প্রতি ভারত সরকারের সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছিল, চলতি বছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া আসন্ন মৌসুমে চিনি রফতানি নিষিদ্ধ করতে পারে ভারত। মূলত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে আখের ফলন কমে যাওয়ায় বিগত সাত বছরের মধ্যে প্রথমবার রফতানি বন্ধের পরিকল্পনা করছে দেশটি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, দেশের অভ্যন্তরে চিনির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি উদ্বৃত্ত আখ থেকে ইথানল তৈরি করাই হচ্ছে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। এতে আসন্ন মৌসুমে রফতানি বরাদ্দের জন্য আমাদের কাছে পর্যাপ্ত চিনি থাকবে না।

গত মৌসুমে রেকর্ড ১১.১ মিলিয়ন টন চিনি রফতানির অনুমোদন দিয়েছিল ভারত। বিপরীতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হতে যাওয়া মৌসুমে মাত্র ৬.১ মিলিয়ন টন চিনি রফতানির অনুমতি দেয় দেশটি।

এর আগে, ২০১৬ সালে রফতানি নিরুৎসাহিত করতে চিনি রফতানির ওপর ২০ শতাংশ কর আরোপ করে ভারত সরকার।

ভারতের মোট আখ উৎপাদনের অর্ধেকের বেশিই উৎপাদিত হয় দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে। কিন্তু ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের তথ্য বলছে, এ বছর এখন অবধি এসব রাজ্যের শীর্ষ আখ উৎপাদনকারী জেলাগুলোতে গড় পরিমাণের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্প কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে চিনির উৎপাদন কমে যাবে। এমনকি ২০২৪-’২৫ মৌসুমে আখ চাষের পরিমাণও কমবে।’

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ