• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নতুন অর্থনৈতিক করিডোর দেশে যোগ করবে ২৮৬ বিলিয়ন ডলার: এডিবি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৩, ০৮:৩২ পিএম

নতুন অর্থনৈতিক করিডোর দেশে যোগ করবে ২৮৬ বিলিয়ন ডলার: এডিবি

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি হলে ২০৫০ সাল নাগাদ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উৎপাদন বেড়ে ২৮৬ বিলিয়ন ডলার হবে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ ইকোনমিক করিডোর ডেভেলপমেন্ট হাইলাইটস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে দাতা সংস্থাটি এসব তথ্য তুলে ধরেছে।

এতে বলা হয়েছে, যদি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডোর করা হয়, তাহলে ২০৫০ সাল নাগাদ ওই করিডোর অঞ্চলে ৭ কোটি ১৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে, যা এই অঞ্চলে করিডোরবিহীন অবস্থায় যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হতো, সেই তুলনায় করিডোর তৈরি করা হলে ২ দশমিক ৩ গুণ বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হচ্ছে দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। তাই ভৌগোলিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই করিডোর তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছে এডিবি। এডিবির মানচিত্র অনুযায়ী, এটি খুলনা বিভাগ থেকে ঢাকা হয়ে উত্তর-পূর্বে সিলেট ও ময়মনসিংহ পর্যন্ত। এতে মোট ১৪টি জেলা পড়বে। এখানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশ বাস করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি গ্র্যাডুয়েট হচ্ছে। যার কারণে অনেক অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা আর পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া ২০৩১ সালের মধ্যে দেশটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হতে চায়।

এসব লক্ষ্য অর্জনযোগ্য কিন্তু সে জন্য অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশের বিপুল বিনিয়োগ করার পাশাপাশি যথাযথ পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে বলে মনে করে এডিবি।

মূলত সেই উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক করিডোর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এডিবি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ইকোনমিক করিডোর (বিইসি) অঞ্চলে ১২ ধরনের প্রস্তুতকারক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে অতিরিক্ত উৎপাদন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যাবে। সেগুলো হচ্ছে: ফুড প্রসেসিং (এগ্রো ও ফিস), চামড়া ও জুতা শিল্প, টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক শিল্প, পাট, নন মেটালিক মিনারেল ম্যানুফ্যাকচার, জাহাজ নির্মাণ, আসবাবপত্র, অটোমটিভ ও ট্রান্সপোর্ট সরঞ্জাম, ফার্মাসিউটিক্যালস, প্লাস্টিক, রাবার ও রাবার পণ্য, বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি এবং ভারী যন্ত্রপাতি।

বিপুল জনসংখ্যা এবং ভৌগোলিক অঞ্চলকে আওতাধীনের পাশাপশি করিডোর অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থানের সুবিধাও রয়েছে উল্লেখ করে এডিবি জানিয়েছে, বিইসি অঞ্চলে ৮টি প্রধান বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে: মোংলা সমুদ্রবন্দর, পায়রা সমুদ্রবন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দর, ভোমরা স্থলবন্দর, আখাউড়া স্থলবন্দর, তামাবিল স্থলবন্দর, বিবিরবাজার স্থলবন্দর ও নাকুগাঁও স্থলবন্দর।

এর মধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর আন্তর্জাতিক নৌ বাণিজ্য রুটগুলোর সঙ্গে সংযোগ সুবিধা দেয়। বর্তমানে দেশের সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এই ‍দুই বন্দরের অবদান প্রায় ১১ শতাংশ। তা ছাড়া এই অঞ্চলের স্থলবন্দরগুলো ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। উভয় দেশের বাণিজ্যিক লেনদেনে এই স্থলবন্দরগুলোর অবদান ৩৬ শতাংশ।

তাই করিডোর অঞ্চলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নির্ভর শিল্পগুলোর জন্য কাঁচামাল আমদানি বা উৎপাদিত পণ্য রফতানির দৃষ্টিকোণ থেকে অন্তর্নিহিত সুবিধা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে এডিবি। এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য সম্ভাবনার ক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত অবস্থানগত সুবিধাও বিদ্যমান রয়েছে। এই অঞ্চলে প্রায় ৩৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বাজার চাহিদা রয়েছে।

এডিবি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ইকোনমিক করিডোর প্রস্তাবনায় শিল্প, পরিবহন ও সামাজিক অবকাঠামোর সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ ও উন্নয়ন বিকেন্দ্রীয়করণের লক্ষ্য রয়েছে। এই করিডোরের উন্নয়ন কাজ দুই ধাপে করা হবে। প্রথম ধাপে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ উন্নত করা হতে পারে আর দ্বিতীয় ধাপে উত্তর-পূর্ব করিডোরের কিছু অংশ (ঢাকা থেকে সিলেট ও ময়মনসিংহ) উন্নয়ন করা যাবে।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ