• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির স্বপ্ন

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ীদের যেসব সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৩, ০২:০৫ এএম

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ীদের যেসব সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিশেষ করে আইসিটি, অবকাঠামো, টেক্সটাইল এবং পর্যটন খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, তার স্বপ্ন বাংলাদেশকে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটি স্বপ্ন আছে, যা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষেরও স্বপ্ন, আর তা হলো, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি এবং একটি সম্পূর্ণ উন্নত স্মার্ট জাতিতে পরিণত হওয়া।’

বুধবার (২৩ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) যৌথ আয়োজনে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিটে’ একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে শেখ হাসিনা বর্তমানে সেদেশে অবস্থান করছেন।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য আরও বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ লক্ষ্য নির্ধারণে বাংলাদেশ তার বাণিজ্যিক পরিস্থিতিকে শক্তিশালী করে চলেছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের প্রচেষ্টা শুধুমাত্র আমাদের জন্য সুবিধাই দেবে না বরং যারা আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করে তাদের জন্যও লাভজনক প্রমাণিত হবে।’

বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খুঁজে নিতে বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রস্তাবগুলোর সাথে পরিচিত হওয়ার উপযুক্ত সময়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনই সময় বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে জানার এবং এখানে বিনিয়োগ করার। আমরা আইসিটি, ইলেকট্রনিক্স, অবকাঠামো, টেক্সটাইল, পর্যটন, ভারী এবং ছোট শিল্পের মতো খাতগুলোতে নানা সুযোগ সুবিধার প্রস্তাব করেছি। আমাদের সরকার সুন্দরভাবে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যেমন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।

বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই আপনারা আমাদের উন্নয়ন যাত্রায় অংশ নিন। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন।’

দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য প্রবাসীদের ধন্যবাদ। আপনাদের প্রতি দেশের প্রবৃদ্ধিতে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।’

বাংলাদেশে বিনিয়োগের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয় এবং বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের রয়েছে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নীতি। এরমধ্যে রয়েছে একটি উদার শিল্পনীতি, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, শতভাগ বিদেশি মালিকানার ভাতা, একটি সহজ প্রস্থান নীতি, ১৫ বছরের কর ছাড় নীতি, আমদানি করা যন্ত্রপাতির জন্য ভ্যাট ছাড়, সুবিন্যস্ত পরিষেবা এবং আরও অনেক কিছু।

তিনি আরো বলেন,দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে আমরা টেকসই দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য প্রস্তুত আছি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, এআই ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ‘আর্থিক সংযোগ’ অনুসরণ করছে। ট্রেডিশনাল কাস্টমার ব্যাংকিংয়ের চেয়ে বিনিয়োগ ব্যাংকিংকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বাংলাদেশ।

গত এক দশকে বাংলাদেশ আফ্রিকার নতুন বাজারের দিকে মনোযোগ দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতা উভয়েই আফ্রিকার অর্থনীতির সম্ভাবনা ও শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্কের সুবিধার কথা স্বীকার করে। আফ্রিকায় ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণী, দ্রুত বর্ধিত জনসংখ্যা ও ভোক্তা চাহিদার কারণে অঞ্চলটি বাংলাদেশি পণ্য রফতানির একটি আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে আফ্রিকান দেশগুলো থেকে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামাল সংগ্রহের উপায় খুঁজছে। এই অন্বেষণের মধ্যে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প, খনিজ, পেট্রোলিয়াম পণ্য, তুলা, কৃষিপণ্য ও আরো অনেক কিছুর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি যৌথ কমিটি’ প্রতিষ্ঠা ও  দ্বৈত কর এড়ানোর চুক্তি নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে আগ্রহের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

সিটি  নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ