প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৩, ০৭:৪৬ পিএম
রফতানির আগে কার্টন থেকে পণ্য বের করে ওজন ও কাঁচামাল আমদানিতে এইচএস কোড জটিলতা নিয়ে কাস্টমসের সঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা হয়রানির অভিযোগ এনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে চিঠি দিয়েছে বিজিএমইএ।
সম্প্রতি গোপনে ধারণ করা মোবাইল ক্লিপে দেখা যায়, নগরীর একটি প্রাইভেট আইসিডিতে রফতানিযোগ্য গার্মেন্টস পণ্যের কার্টন খুলে প্রতিটি আইটেম ওজন করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে বিল অব এন্ট্রি এবং বিল অব এক্সপোর্টের নথি`র সঙ্গে পণ্যের বিবরণও মিলিয়ে দেখছে।
কাস্টমসের এই কাজটিকে হয়রানি হিসেবেই চিহ্নিত করেছে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। চট্টগ্রামের ৩ থেকে ৪টি প্রাইভেট আইসিডিতে কাস্টমসের এ ধরনের হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ সংগঠনটির।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র সহ সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের এক কার্টনের মধ্যে ৩ থেকে ৪টি সাইজ থাকে। ওইখানে থেকে না বুঝে যদি একটি সাইজ নেয়া হয়, তাহলে আবার সেটি তাদের বুঝানো যায় না। তাই আমরা চাই কাস্টমস এই দিকে একটু নজর দিক।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে দেয়া পৃথক দুইটি চিঠিতে শুধু কার্টন খুলে পণ্য ওজন করে দেখাই নয়, কাস্টমস এবং বন্ডের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি অভিযোগ এনেছে বিজিএমইএ।
কাস্টমস এবং বন্ডের হয়রানি বেশি হচ্ছে, এমন অভিযোগ করে বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন এক্সোসরিজ আসছে। এগুলোকে এইচএস কোডের যাতাকলে ফেলে আমাদের ভোগান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।’ৎ
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, এখন সংকটের সময়। এখন আমরা যখন যে অর্ডার পাচ্ছি, সেটি নিচ্ছি। সেখানে যদি কাস্টমস আমাদের সাহায্য না করে, তাহলে আমাদের রফতানির যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, সেটি কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়বে।
মূলত, সাম্প্রতিক রফতানিতে কম মূল্য দেখিয়ে শুল্ক ফাঁকির পাশাপাশি ওভার ইনভয়েজ দেখিয়ে বিদেশে টাকা পাচারের বেশ কয়েকটি ঘটনা চিহ্নিত করেছে কাস্টমস এবং শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। শুল্ক ফাঁকি ও টাকা পাচার প্রতিরোধে কঠোর হওয়ায় গার্মেন্টস মালিকেরা অভিযোগ জানাচ্ছে বলে দাবি কাস্টমস কর্মকর্তার।
এবিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন,
পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের বাণিজ্যভিত্তিক অর্থ পাচার না হয়, কাস্টমস সেটিই গুরুত্বসহকারে দেখছে।
বছরে প্রায় ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পণ্য রফতানি করছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। যার পুরো শুল্কায়ন হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের মাধ্যমে।
বিদেশি বায়ারদের নির্দেশনা অনুযায়ী পণ্য শিপমেন্ট করতে সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয় গার্মেন্টস মালিকদের। পণ্য গার্মেন্টস থেকে প্যাকেজিং হয়ে চলে যায় অফডকে আর সেই অফডকে কাস্টমস কর্মকর্তারা হয়রানি করছেন, এমনটাই অভিযোগ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের। এক্ষেত্রে দুই পক্ষকে যেমন ছাড় দিতে হবে, তেমনি দেশের অর্থনীতির স্বার্থে কাস্টমস এবং বিজিএমইএ’কে নমনীয় হতে হবে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/