প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৩, ০৮:৩৭ পিএম
বেনাপোল বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ ক্রেন ও ফরক্লিপ দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে থাকলেও, সেটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গ্রেড বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজ। এতে ভারী পণ্য ওঠানামায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি পণ্য খালাস বাধাগ্রস্ত হওয়ায় দেখা দিয়েছে পণ্যজট।
জানা যায়, দেশের স্থলপথে ভারতের সঙ্গে যে আমদানি বাণিজ্য হয়, তার বড় একটি অংশই মূলত দেশের শিল্পকারখানা স্থাপনের যন্ত্রাংশ, রেল-বিদ্যুৎ প্রকল্প ও সেতু-কালভার্ট নির্মাণের মালামাল। আর বেনাপোল বন্দরে ভারী পণ্য ওঠানামার কাজ ৫ বছরের চুক্তি করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গ্রেড বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারী মালামাল লোড-আনলোডের জন্য বন্দরে কমপক্ষে ১৫টি ক্রেন ও ১০টি ফরক্লিপ প্রয়োজন। তবে ঠিকাদান প্রতিষ্ঠানটির মাত্র ৭টি ক্রেন ও ৮টি ফরক্লিপ রয়েছে। এর মধ্যে সচল আছে মাত্র ১টি ক্রেন ও ১টি ফরক্লিপ।
এতে স্বাভাবিক সময়ে দিনে ৭০০ ট্রাক পণ্য লোড-আনলোড হলেও এখন তা কমে অর্ধেকের নিচে দাঁড়িয়েছে। ফলে পণ্য খালাস কমে বন্দরে পণ্যজটের পাশাপাশি দেশের শিল্পকারখানায় উৎপাদন ও উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্রেন ও ফরক্লিপ পুরনো হওয়ায় অধিকাংশ সময়ই নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। বন্দর ও ঠিকাদার কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ দিলেও সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
ভোগান্তিতে পড়া এক ট্রাকচালক বলেন, বন্দরের ক্রেন ও ফরক্লিপগুলা নষ্ট থাকায় সময়মতো পণ্য গন্তব্যে নিতে পারি না। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
ক্রেন ও ফরক্লিপ অচল থাকায় পণ্য খালাস নিতে না পারায় বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার কথা জানিয়ে বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের সেক্রেটারি আজিম উদ্দিন গাজী বলেন, বারবার অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দরে প্রায় ৭০০ ট্রাক পণ্য লোড-আনলোড হয়। এসব পণ্যের মধ্যে প্রায় ৩০০ ট্রাক ভারী পণ্য রয়েছে, যা খালাস করতে ক্রেন ও ফরক্লিপের প্রয়োজন হয়।
কিন্তু সবচেয়ে বেশি রাজস্ব এ বন্দর থেকে দেয়া হলেও, বন্দরের সেবার বেহাল দশা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দরবিষয়ক সম্পাদক মো. মেহেরুল্লাহ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ, রেল প্রকল্পের মালামাল বেশি আসছে। কিন্তু বন্দরে চাহিদার তুলনায় এসব ভারী মালামাল ওঠানো ক্রেন ও ফরক্লিপ কম। তা ছাড়া এগুলো বেশির ভাগ সময়ে নষ্ট থাকায় বন্দরে পণ্যজট বেড়েছে।
এদিকে অচল হয়ে পড়া ক্রেন-ফরক্লিপ সারানোর জন্য বন্দরের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হলেও, কোনো প্রতিকার মিলছে না বলেও জানান তিনি।
তবে নানা অজুহাত দেখিয়ে গ্রেড বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজের মেকানিক বাদশা মিয়া জানান, নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা ক্রেন ও ফরক্লিপের যন্ত্রাংশ জরুরিভাবে সংগ্রহ করতে না পারায় মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে পণ্য খালাসে বিঘ্ন ঘটছে। বিষয়টি জরুরিভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এডিএস/