প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩, ০৮:২৬ পিএম
সিন্ডিকেটের কারসাজিতে নিয়ন্ত্রণহীন দেশের ভোজ্যতেলের বাজার। বুকিং রেট অর্ধেকে নামলেও সে তুলনায় কমছে না সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম। অথচ ডলার সংকটের মধ্যেও পাঁচ মাসে সোয়া ৭ লাখ মেট্রিক টন তেল আমদানি করেছেন মিল মালিকরা।
আন্তর্জাতিক বাজারে এ মুহূর্তে প্রতি মেট্রিক টন সয়াবিন তেলের বুকিং রেট ৯০০ মার্কিন ডলার। আর পাম অয়েলের বুকিং রেট ধরা হয়েছে ৮৬০ মার্কিন ডলার। গত সপ্তাহে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের বুকিং রেট ছিল যথাক্রমে ৮৮৫ ডলার ও ৯২০ ডলার।
বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বুকিং রেট সর্বনিম্ন। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ বুকিং রেট ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলারে ঠেকেছিল।
এদিকে, দেশের বাজারে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ সয়াবিন তেল ৬ হাজার ১৫০ টাকা এবং পাম তেল ৪ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ছিল যথাক্রমে ৬ হাজার ৪০০ টাকা ও ৪ হাজার ৯০০ টাকা। কিন্তু বুকিং রেটের তুলনায় দেশের বাজারে তেলের দাম আরও কম থাকার কথা থাকলেও নানা অজুহাতে তা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের মেসার্স সবুজ কমার্শিয়ালের মালিক শাহেদ উল আলম বলেন, ‘অনেক সময় আমাদের আমদানিকারকদের সঙ্গে সরবরাহকারীর সম্পর্ক ভালো থাকার কারণে তারা বাংলাদেশে পণ্য পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু তার বিপরীতে এলসি (ঋণপত্র) খোলা যায় না। এর বাইরে আমাদের আমদানিকারকরা আরেকটি অদৃশ্য লোকসান দিচ্ছে। সেটি হলো, তাদের মাদার ভ্যাসেলে ডেমারেজ দিতে হচ্ছে।’
অন্যদিকে, ডলার সংকটে এলসি খোলার জটিলতার মাঝেও গত পাঁচ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশে ৭ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্য তেল আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের এ সময়ের তুলনায় ৩৩ হাজার মেট্রিক টন বেশি। এর মধ্যে ৪ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন পাম তেল এবং ২ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল দেশে এসেছে।
সয়াবিন তেলের তুলনায় পাম তেলের আমদানি বেশি হওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, পাম তেল গত বছরের তুলনায় এ বছর ৩৭ শতাংশ বেশি আমদানি হয়েছে। তাছাড়া সানফ্লাওয়ারসহ অন্যান্য তেলের আমদানি কমেছে। কিন্তু সব মিলিয়ে এ বছর ৪ শতাংশ বেশি ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে।
দেশের বাজারে বছরে চাহিদার ২২ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের পুরোটা ৮ থেকে ১০ প্রতিষ্ঠান আমদানি করে। তবে সিন্ডিকেটের কারসাজির পাশাপাশি নানা জটিলতায় অস্থির দেশের ভোজ্যতেলের বাজার।
অবশ্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে সম্প্রতি বোতলজাত সয়াবিনের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে ১৮৯ টাকা, খোলা সয়াবিন ৯ টাকা কমিয়ে ১৬৭ টাকা এবং পাম অয়েল ২ টাকা কমিয়ে ১৩৩ টাকায় বিক্রির নির্দেশনা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জেকেএস/