প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৩, ০৯:৫১ পিএম
সমুদ্রে দুর্ঘটনার কবলে পড়লে উদ্ধার ও নিষিদ্ধ সীমানায় প্রবেশে স্বয়ংক্রিয় সতর্কতা নিশ্চিতে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার নৌযানে অন্তত ১০টির বেশি নিরাপত্তা ও তদারকিমূলক সেবা দিতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর জয়েন্ট মনিটরিং সেন্টার। মোট ৮টি সংস্থার সমন্বয়ে সেন্টার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে পুরো ব্লু-ইকোনমি।
গভীর সমুদ্রে অনেকটা তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই চলছে মাছ ধরার নৌযান। আইন অমান্যের পাশাপাশি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে উদ্ধারে বেগ পেতে হয় সমুদ্র সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে। তাই সামুদ্রিক ও উপকূলীয় মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের জন্য খোলা হয়েছে জয়েন্ট মনিটরিং সেন্টার। যেখানে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ থাকবে সামরিক ৮টির বেশি প্রতিষ্ঠান।
দেশের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক ৩০ হাজার মাছ ধরার নৌযানকে নিয়ন্ত্রণ, পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করতে পতেঙ্গায় স্থাপিত জয়েন্ট মনিটরিং সেন্টারে বুধবার (৭ জুন) সমুদ্র সংশ্লিষ্ট এসব নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, কন্ট্রোল সেন্টারে বসে মোবাইলে, স্বয়ংক্রিয় ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে জানা যাবে আর্টিসেনাল ও বাণিজ্যিক নৌযানের সার্বিক তথ্য ও গতিবিধি। নিরাপত্তামূলক ১০টি সেবাসহ নিয়ন্ত্রিত হবে পুরো ব্লু- ইকোনমি।
চট্টগ্রাম সামুদ্রিক মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সমুদ্রে অবৈধ মাছ ধরার কার্যক্রম বা অনিয়ন্ত্রিত মৎস্য আহরণ চলমান থাকলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। এটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই এই সেন্টার গঠন করা হয়েছে।
সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজের উপ-প্রকল্প পরিচালক অধীর চন্দ্র দাশ বলেন, জয়েন্ট মনিটরিং সেন্টারে স্যাটেলাইটভিত্তিক ভিএমএস ডিভাইস সংযুক্ত করা হবে। যেটি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্পের আওতায় জেএমসি বাস্তবায়নে এরই মধ্যে ১০ হাজার নৌযানে বসানো হয়েছে জিএসএম (গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন), এআইএস (অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম) ও ভিএমএস (ভ্যাসেল মনিটরিং সিস্টেম) আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইস। পরে বসবে আরও ৩০ হাজার নৌযানে। চট্টগ্রাম নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম বলেন, মাছের বিভিন্ন প্রজাতির বৃদ্ধির জন্য নৌযানে এ ধরনের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইস ব্যবহার কার্যকরী পদ্ধতি।
উল্লেখ্য, ভারত ও মিয়ানমার থেকে বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমার মালিকানা পায় বাংলাদেশ। কিন্তু বিশাল সম্ভাবনাময় এই ব্লু ইকোনমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় মৎস্য সম্পদ আহরণ অনেকটাই অনিয়ন্ত্রিত।
এমন বাস্তবতায় সমুদ্রে মনিটরিং ও নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয়তায় উপকূলীয় ১৪টি জেলার ৬৭টি উপজেলার নৌযান প্রযুক্তির আওতায় আসছে। এর ফলে নৌযানের সার্বিক তথ্য, নিষিদ্ধ সময় ও সীমারেখা এবং দুর্ঘটনার অবস্থানও জানা যাবে। পাশাপাশি এসব উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নসহ মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এডিএস/