• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব সুযোগ-সুবিধা চায় বিজিএমইএ

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৩, ০২:৪৯ এএম

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব সুযোগ-সুবিধা চায় বিজিএমইএ

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চলমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২১-২২ অর্থবছরের মতো এবারও উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ ধার্য করে আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত তা কার্যকর ও নগদ সহায়তার ওপর আরোপকৃত ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

শুক্রবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আজিজ গ্রুপ সেন্টারের অডিটোরিয়ামে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, আমরা নগদ সহায়তার ওপর আরোপকৃত ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছিলাম, যেহেতু নগদ সহায়তা কোনো ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিসংগত। আমরা মনে করি, এই সংকটময় সময়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হবে। নগদ সহায়তা যেহেতু কোনো ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিযুক্ত।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বর্তমানের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এবারের বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ। এটি বর্তমান সরকারের চলমান তৃতীয় মেয়াদের সর্বশেষ বাজেটও বটে। এটি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় বাজেট। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট এটি। এর মধ্য দিয়ে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে স্মার্ট যুগে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

ফারুক হাসান বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা ও রাজস্ব বাড়ানো, যা আমাদের বাজেটের ইতিবাচক দিক। বর্তমান সংকটকালীন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যখন কি না সাম্প্রতিক রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের নিম্নমুখী ধারা স্পষ্ট দৃশ্যমান, তখন সরকার আগামী অর্থবছরে ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, যা এই কঠিন সময়ে জাতির মনে আশার সঞ্চার করেছে।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩টি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূসক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা মনে করি, এর ফলে জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই সঙ্গে আমরা দাবি করব যেন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে আনা হয়। পাশাপাশি এলএনজি ও এলপিজির আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি করা হলে একদিকে আমাদের শিল্পে উৎপাদন খরচ কমবে, আমাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়বে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সেটি অর্জন সহজ হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেলেও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের জায়গাটিতে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে এবং এই অসাধু কর্মকাণ্ডের পেছনে লাইনম্যান, মিটার রিডার ও ভোক্তা, যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত বাজেটে আরও কিছু বিষয়ের ওপর প্রস্তাব করা হয় এবং সে প্রস্তাবগুলো পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়। সেগুলো হলো–

• তৈরি পোশাক শিল্পের মূল্যায়নের সময় কর আরোপকালে অন্যান্য আয়, যেমন– সম্পদ নিষ্পত্তি, সাব-কন্ট্রাক্ট আয়ের ওপর লাভ এবং বিবিধ খরচকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে গণ্য করে স্বাভাবিক হারে (৩০%) কর আরোপ না করে কর্পোরেট কর হার ১২% হারে আরোপ করা।

• তৈরি পোশাক শিল্পের সাব-কন্ট্রাক্টের ক্ষেত্রে আয়কর অধ্যাদেশের রুল-১৬ এর টেবিল-১ এর আওতায় সাব-কন্ট্রাক্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চুক্তির মূল্য পরিশোধের সময় প্রস্তাবিত ধাপ অনুযায়ী উৎসে কর ধার্য করা, ওই কর-কে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করা, অন্যথায় মূল্যায়নের সময় কর আরোপকালে কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২% হারে কর ধার্য করা।

• রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানিকারকদের ইআরকিউ (এক্সপোর্টার রিটেনশন কোয়াটা ফান্ড) থেকে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য পরিশোধিত ফি হতে উৎসে আয়কর কর্তনের হার ২০% থেকে হ্রাস করে ১০% করা।

 

জেকেএস/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ