• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন

বরাদ্দের শতভাগ অর্থ ব্যয়ে ব্যর্থ অনেক প্রকল্প

প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২৩, ০৮:১২ পিএম

বরাদ্দের শতভাগ অর্থ ব্যয়ে ব্যর্থ অনেক প্রকল্প

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বরাদ্দ পেয়েও শতভাগ অর্থ ব্যবহারে ব্যর্থ অনেক প্রকল্প। এমন সরল স্বীকারোক্তি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের। তারপরও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আবারও আসছে নতুন বরাদ্দ। তবে এবার থাকছে না উচ্চাভিলাষী কোনো উদ্যোগ।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে আসন্ন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব ওঠার আগে সিটি নিউজ ঢাকাকে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন, যে প্রকল্পগুলো চলছে, ‘যদি তার মধ্যে কোনো সমস্যা না হয়, সব কটিকে আমরা তাদের প্রয়োজনীয় খোরাক দেব। কিন্তু দুর্ভাগ আমাদের যে কিছু কিছু প্রকল্পের কর্তৃপক্ষ টাকা চেয়ে তা খরচও করতে পারে না। আর তখনই আমরা সাবধানী হয়ে যাই। হয়তো চেয়েছে ১০০ টাকা, তাদের দেব ৮০ টাকা। তখন তাদের বলি যে আগে এটি খরচ করে দেখান, তারপর বাকি ২০ টাকা দেব।’

এ ছাড়া বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখলেই অর্থায়ন বন্ধ হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আগামী অর্থবছর সরাসরি ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে চায় সরকার। প্রতিমাসে মাথাপিছু এই বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৩০০ টাকা, যা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপির আওতায় ছোট-বড়, চলমান ও নতুন ১ হাজার ৩০৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে।

ব্যয় পরিকল্পনায় দেখা যাচ্ছে, ৬০ হাজার ৫৩ কোটি টাকা অর্থাৎ এডিপির ২৩ শতাংশ চলমান ১০টি মেগা প্রকল্পে যাবে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা পাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর পরের বরাদ্দের মধ্যে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ৯ হাজার ৮১ কোটি টাকা, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি ৮ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ৫ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা, ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ৪ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা, ঢাকা এমআরটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন ১) ৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ ৩ হাজার ৭৭৮ কেটি টাকা, ঢাকা এমআরটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।

এবার বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য দূরীকরণ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে নেয়া উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়ক, বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট ও অর্থায়ন থাকা প্রকল্প।

তবে যাদের করের টাকায় এই বরাদ্দ দিতে যাচ্ছে সরকার, সেই জনগণের চাওয়া, খামখেয়ালিভাবে যেন তাদের ঘাম ঝরানো অর্থ ব্যয় না হয়। এমনই একজন ব্যক্তি বলেন, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার বিষয়ে কঠোর হতে হবে। কাজ যদি নির্ধারিত সময়ে শেষ করা হয়, তাহলে সবাই উপকৃত হবে। কারণ, কেউই চায় না যে অপচয় হোক।

এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থ ব্যয়ের অক্ষমতা দূর করলে হয়তো বছর শেষে বরাদ্দ শেষ হবে। কিন্তু অদক্ষতা দূর করতে না পারলে প্রত্যাশামতো প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে না।

কাজেই প্রত্যাশামতো প্রাপ্তি নিশ্চিতে বরাদ্দ ব্যয়ের অদক্ষতা দূর করার তাগিদ দিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘উন্নয়ন বরাদ্দের ক্ষেত্রে ও উন্নয়ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে তার উৎকর্ষ ও মান নিয়ে সবসময়ই প্রশ্ন আছে। সেটি যদি সঠিকভাবে করা যায়, তাহলে অনেক কম খরচে আমরা যে কাজগুলো করছি, তা করতে পারি।’

উল্লেখ, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার এডিপিতে বরাদ্দ বেড়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।

 

জেকেএস/
 

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ