• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ করতে চান শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৩, ০৯:০৩ পিএম

পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ করতে চান শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চান জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পায়রা বন্দর পরিদর্শনে শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল আসবে। এখানে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে আগ্রহী।

শুক্রবার (১২ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি দুই দেশের সামুদ্রিক খাত নিয়ে কীভাবে আরও কাছাকাছি আসা যায় সে বিষয়েও কথা হয়েছে। এ ছাড়া কলম্বোয় পরবর্তী সময়ে যে সচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে, সেখানে কিছু বিষয় চূড়ান্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
 
বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, পায়রা বন্দর পরিদর্শনে তাদের একটি প্রতিনিধিদল আসবে। সেখানে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ আছে।

এ ছাড়া কোস্টাল শিপিং বা উপকূলীয় নৌচলাচল চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, এসব বিষয় পরবর্তী সচিব পর্যায়ের বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। কলম্বো বন্দরে কী কী উন্নয়ন করেছে, তা দেখার জন্য শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

কলম্বোয় সচিব পর্যয়ের বৈঠকে কোস্টাল শিপিং চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না–এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি মোটামুটি একটা পর্যায়ে গেছে। পরবর্তী সচিব বৈঠকে এটি চূড়ান্ত হওয়ার পর সই হবে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নেই, দুদেশ যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সেটিই আমাদের মূল্য লক্ষ্য।’

আর সমুদ্র সম্পদ ব্যবহারে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না–জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেঠকে শ্রীলঙ্কার উপপ্রধানমন্ত্রী সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ডিপ সি পোর্টে ফিশিং বা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা নিয়েও কথা হয়েছে। তবে এগুলো পরবর্তী সময়ে আলোচনা হবে। তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
 
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘করোনা মহামারিসহ বৈশ্বিক সংকটের কারণে দুই দেশের মধ্যে অনেক আলোচনা স্থবির হয়ে গিয়েছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও শ্রীলঙ্কায় কিছু সমস্যা হওয়ার কারণে সভাটি হয়নি। আজ শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এসব নিয়ে কথা বলার জন্য।’

এ ছাড়া আজ ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক দেশগুলোর সম্মেলন উদ্বোধন করা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সম্মেলনে যোগ দিতেই এসেছেন লঙ্কান প্রতিনিধিরা।’

আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বন্দর, নৌ ও বিমানমন্ত্রী নিমাল শ্রীপালা ডি সিলভা। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কলম্বো বন্দরের মধ্যে জাহাজ চলাচল বাড়াতে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া কলম্বো বন্দরে কীভাবে বাংলাদেশের নৌযানকে অগ্রাধিকার দেয়া যায় সেটি নিয়েও কথা হয়েছে।

কলম্বো বন্দরে নতুন একটি টার্মিনালসহ লজিস্টিক সহায়তা বাড়ানো হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, বন্দরটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই বন্দরের জায়গা বেড়ে যাওয়ার কারণে সেখানে সহজেই বাংলাদেশের জাহাজ ভিড়তে পারবে।

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা তৈরি পোশাক খাতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সাড়ে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ায় শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়েছে। এতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের বিশ্বাস ও আস্থা বেড়ে গেছে।’
 
শ্রীপালা ডি সিলভা বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পেতে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক কাঠামো নতুন করে সাজানো হচ্ছে। কাজেই সেখানে সামুদ্রিকসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ করতে শ্রীলঙ্কার প্রাইভেট সেক্টর প্রস্তুত আছে। এটি বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের নতুন দৃষ্টান্ত হবে।


কলম্বো বন্দর ব্যবহারে দুই দেশই লাভবান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত মহাসাগর অঞ্চলে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ দুটি ছোট দেশ হলেও ভৌগোলিক কারণে আমাদের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কারণ, এ দেশের অনেক রফতানি কলম্বো বন্দর হয়ে যায়। আমরা এর পরিমাণ আরও বাড়াতে চাই। এতে বাংলাদেশের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়। আর কলম্বো বন্দর হয়ে বাংলাদেশ রফতানি করলে জাহাজের ছয় থেকে সাত দিন সময় কম লাগবে।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নৌসচিব মোস্তফা কামাল, শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী থারাকা বালাসুরিয়া, হাইকমিশনার অধ্যাপক সুদর্শন সেনেভিরত্নে প্রমুখ।


এডিএস/

আর্কাইভ