প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৩, ০৭:৪১ পিএম
জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় লঞ্চ শ্রমিক হিসেবে কাটালেও ভাগ্য বদলায়নি। শ্রমিকদের অভিযোগ, সরকার গেজেট আকারে বেতন নির্ধারণ করলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বলছে, বেতনের বৈষম্য দূর করতে দুপক্ষের আলোচনার কোনো বিকল্প নেই।
৫৫ বছরের জাহাঙ্গির হোসেন। জীবনের ২৬টি বছর নদীপথে কাটিয়েছেন। সময়ের পরিক্রমায় এখন বরিশালের একটি অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চের সুকানি তিনি। মাত্র ৭ হাজার টাকায় কর্মজীবন শুরু করলেও ২৬ বছর পর তার বেতন দাঁড়িয়েছে এখন ১২ হাজার টাকায়।
তিনি বলেন, ‘কাজ তো এটিই পারি। এখন যে কয়দিন বেঁচে আছি ও কপালে আছে, এই কাজই করতে হবে।’
শুধু জাহাঙ্গিরই নন, এমন হতাশায় দিন কাটছে বরিশালের সব লঞ্চ শ্রমিককেই ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবে তাদের ছুটি তো দূরে থাক, বাড়তি ডিউটি পালনে পরিবারে সময় দিতে পারেন না তারা। বেতন, ছুটিছাটায় বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেও লাভ হয়নি বলে জানান শ্রমিকরা।
এক শ্রমিক বলেন, করোনাকালে আমরা দুর্ভোগে ছিলাম। কোনো মালিক আমাদের সাহায্য দেয়নি। সব পণ্যের দাম বাড়ে। কিন্তু আমাদের বেতন বাড়ে না।
এদিকে বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন জানায়, চলতি বছর ৩০ মার্চ সরকারি গেজেটে লঞ্চ শ্রমিকদের সর্বোচ্চ বেতন ৪২ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন ১৮ হাজার ৭৬৫ টাকা ধরা হয়েছে। তাই অবিলস্বে গেজেট বাস্তবায়নের দাবি করেন শ্রমিক নেতারা।
বরিশাল বিভাগের বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শেখ আবুল হাসেম বলেন, তারা গেজেটে অনুসারে চুক্তি করে, সরকারের গেজেট মানছেন না। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, সরকার যেন মালিকদের সঙ্গে আবার আলোচনা করে আমাদের বেতনের সমস্যাটি সমাধান করে দেন।
তবে শ্রমিকদের বেতনের বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার কার্যনির্বাহী সদস্য রিয়াজুল কবির বলেন, যত দিন পর্যন্ত আমাদের মাঝের আলোচনা শেষ না হবে আর আমরা একটি নির্দিষ্ট বেতন কাঠামোতে আসতে পারব, তত দিন পর্যন্ত আমরা শ্রমিকদের এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা বর্ধিত ভাতা দিয়ে যাচ্ছি।
এডিএস/