• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রানজিট সুবিধা পেল ভারত

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৩, ০৫:৫১ পিএম

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রানজিট সুবিধা পেল ভারত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রানজিট সুবিধা পেল ভারত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আটটি নির্ধারিত রুট দিয়ে ভারতকে পণ্য আনা-নেয়ার অনুমতি দিয়ে স্থায়ী আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে নানা জটিলতায় ভারতের তেমন পণ্য পরিবহন না করার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় রাজস্ব আয় বাড়াতে নেপাল এবং ভুটানকেও এই ট্রানজিট সুবিধার আওতায় আনার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জারি করা স্থায়ী আদেশে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতকে পণ্য আনা-নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ২০২০ সালে ভারতকে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার পর এখন তা স্থায়ীরূপ পেল। এর আগে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্টের এসওপি স্বাক্ষর করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

মূলত বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্ট্র্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিওর-এসওপি অনুযায়ী পণ্য শুল্কায়নের ব্যবস্থা নিতে কাস্টম হাউজগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে এনবিআর।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান মুন্সি জানান, এখন থেকে ভারত থেকে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে জাহাজগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে। এরপর এখান থেকে অন্য কোনো বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করবে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যবহার করে সেভেন সিস্টার হিসেবে পরিচিত ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য আটটি রুট নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে জাহাজের মাধ্যমে আনা পণ্য বন্দর থেকে ডেলিভারি নিয়ে যানবাহন দিয়ে স্থলভাগ ব্যবহার করে পৌঁছানো হবে ভারতের র্নিধারিত গন্তব্যে।
 

তবে একেবারে নামমাত্র খরচে ভারত ট্রানজিট সুবিধা পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতি চালানের ডকুমেন্ট ফি ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপ ফি প্রতি টনে ২০ টাকা, ১০০ টাকা সিকিউরিটি চার্জ, এসকর্ট চার্জ ৮৫ টাকা, প্রশাসনিক চার্জ ১০০ টাকা এবং প্রতি কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা নির্ধারণ করেছে  এনবিআর।


অবশ্য গত ৩ বছর ধরে চলা পরীক্ষামূলক ট্রান্সশিপমেন্টে একেবারে সামান্য পরিমাণে পণ্য পরিবহন করেছে ভারত। তবে একক দেশ হিসেবে ভারতকে ট্রানজিট কিংবা ট্রান্সশিপমেন্ট দেয়ায় কার্যকর রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় রাজস্ব বাড়াতে নেপাল ও ভুটানকে এই ট্রানজিটের আওতায় আনার কোনো বিকল্প দেখছেন না বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, নেপাল ও ভুটানের ট্রানজিট সু্বিধা দেয়া প্রয়োজন। দ্রুততার সঙ্গে এ সুবিধা পেলে বাংলাদেশও এর সুবিধা পাবে।


আর বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান খায়রুল আলম সুজন বলেন, ট্রানজিটের সুবিধা দিতে পারলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো বাংলাদেশকেন্দ্রিক জাহাজের ব্যবসার ওপর আগ্রহ প্রকাশ করবে।

এ ছাড়া শুধু ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক নয়, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে আলোচনা করে ট্রানজিট সুবিধাকে বহুমাত্রিক বাণিজ্যে রূপ দেয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সাবেক সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, নেপাল ও ভুটানের মতো ল্যান্ডলক দেশের সঙ্গে ট্রানজিট সুবিধা যুক্ত হলে সব দেশই লাভবান হবে।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ