• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

সিনিয়র অফিসারের নিয়োগ কার্যক্রম ৪ বছরেও শেষ হয়নি

প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৩, ০৫:৫১ পিএম

সিনিয়র অফিসারের নিয়োগ কার্যক্রম ৪ বছরেও শেষ হয়নি

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত সাতটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র অফিসার পদে জনবল নিয়োগের জন্য ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এগুলোর মধ্যে ৬টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কার্যক্রম শেষে প্রার্থীদের নিয়োগ দিলেও রূপালী ব্যাংকে যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তারা এখনো নিয়োগপত্র পাননি।

রূপালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে যারা সুপারিশ পেয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকের চাকরির বয়স শেষ হয়েছে। আবার অনেকে নবম গ্রেডের এ চাকরি পাওয়ার কারণে এর নিচের গ্রেডের অন্য চাকরি পেয়েও যোগদান করেননি। এ কারণে চাকরির আশায় বেকার থাকতে হচ্ছে। দীর্ঘ চার বছরেও রূপালী ব্যাংকের নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা।

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, সমন্বিত ৭টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র অফিসারের ৭৭১টি শূন্য পদ পূরণের জন্য ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের পদ ২৬৪টি, জনতা ব্যাংকের ১৩৯টি, রূপালী ব্যাংকের ২১১টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১১৩টি, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের ৮টি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের ৩০টি ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের ৬টি।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রিলিমিনারির তারিখ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু করোনার কারণে পরে তা স্থগিত করা হয়। এরপর ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর প্রিলিমিনারি অনুষ্ঠিত হয়। প্রিলির ফল প্রকাশ করা হয় ওই বছরের ১১ নভেম্বর। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৯ নভেম্বর। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালের ২০ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয় ২০২২ সালের ৩ আগস্ট।

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর বাকি নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে নিজ নিজ ব্যাংকগুলো। চূড়ান্ত ফলের এক থেকে দুই মাসের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেয় সোনালী ও জনতা ব্যাংক। নিয়োগের পর তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়।

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন গত ডিসেম্বরে নিয়োগ দেয়, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ ও কর্মসংস্থান ব্যাংক নিয়োগ দেয় ফেব্রুয়ারিতে এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক নিয়োগ দেয় মার্চে। কিন্তু রূপালী ব্যাংক গত ৭ মাসেও সুপারিশ পাওয়া ২১১ প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেয়নি। চাকরির জন্য মনোনীত হয়ে সাত মাসের বেশি সময় পরও নিয়োগপত্র না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।

সমন্বিত ৭টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র অফিসারের ৭৭১টি শূন্য পদ পূরণের জন্য ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের পদ ২৬৪টি, জনতা ব্যাংকের ১৩৯টি, রূপালী ব্যাংকের ২১১টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১১৩টি, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের ৮টি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের ৩০টি ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের ৬টি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাওয়া একজন সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, ‘আমার জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি এবং প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি হয়েছিল। রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে চূড়ান্তভাবে মনোনীত হওয়ার কারণে ওই ২টি চাকরিতে যোগ দিইনি। রূপালী ব্যাংকের চাকরিটা প্রথম শ্রেণির, তাই এটিতে যোগদানের অপেক্ষায় আছি। প্রতি মাসে আশা করি নিয়োগপত্র পাব, কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিয়োগপত্র দেয় না। আমাদের সঙ্গে বাকি ব্যাংকের জন্য যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে যোগদান করে বেতন পাচ্ছেন। অথচ আমাদের নিয়োগপত্র দেয়ার কোনো খবর নেই।’

নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাওয়া আরেক প্রার্থী বলেন, ‘এত দিনেও নিয়োগপত্র না পাওয়ায় সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছি। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা মনে করেন, আমি মিথ্যা বলতেছি, চাকরি হয়নি। যেহেতু হাতে নিয়োগপত্র নেই, তাই তাদের কিছু দেখাতেও পারি না। নিজেকে লুকিয়ে রাখতে হয়।’

এ বিষয়ে জানতে রূপালী ব্যাংকে যোগাযোগ করা হলে ব্যাংকটির ১ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত অন্য ব্যাংকগুলো নিয়োগ দেয়ার পর প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয়। আমরা পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর নিয়োগপত্র দিই। তাই নিয়োগপত্র দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে আমাদের দুই থেকে তিন মাসের পার্থক্য থাকে। কারণ, পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ করতে সময় লাগে।

সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা কবে নিয়োগপত্র পেতে পারেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সিনিয়র অফিসার নিয়োগের পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অল্প কয়েক প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন বাকি আছে। রমজানের মধ্যে সবার পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ হবে বলে আশা করছি। ঈদের পরই আমরা প্রার্থীদের হাতে নিয়োগপত্র দিতে পারব।’

 

এএল

আর্কাইভ