প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩, ০১:০১ এএম
অবশেষে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। চারটি বড় কোম্পানি দাম কমানোর পর ব্রয়লার মুরগির দাম নেমে এসেছে কেজি ২০০ টাকায়।
রোজার মধ্যে তাতে স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের। তবে বেশি দামে মুরগির বাচ্চা ও খাবার কিনে এখন লোকসান গোনার শঙ্কায় উদ্বিগ্ন ছোট খামারিরা।
ডিম ও মুরগির বাজারের নিয়ন্ত্রণ বড় কর্পোরেট কোম্পানিগুলো নিয়ে নিয়েছে, এমন কথা কিছুদিন ধরেই বলে আসছেন ছোট খামারিরা। এখন আবার লোকসানের ধাক্কায় ছোট খামারিরা আবার ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’র নামে বড় কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে বলে শঙ্কা করছেন তারা।
ডিম-মুরগির বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে পোল্ট্রি বোর্ড গঠন করা এখন জরুরি হয়ে পড়ছে বলে মনে করেন খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার।
সম্প্রতি হঠাৎ করেই ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যায়। দেড়শ থেকে পৌনে দুইশ টাকার মধ্যে এই দর ঘোরাঘুরি করলেও তা এক লাফে আড়াইশ টাকা ছাড়িয়ে যায়। দাম বাড়ায় চাহিদা বেড়ে যায় ‘খোলা মুরগির মাংসের’। কারণ এসব মাংস পাওয়া যায়,১০০ গ্রাম, ২৫০ গ্রাম, ৫০০ গ্রাম ওজনেও।
ক্রেতাদের অসন্তোষের মুখে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর তখন তৎপর হয়। গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৪০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় চার কোম্পানি কাজী ফার্মস, আফতাব, প্যারাগন ও সিপি।
সেই বৈঠকে পাইকারিতে কেজি ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দিলেও কোম্পানিগুলো এখন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি করছে বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান।
এক ব্যবসায়ী বলেন, “কোম্পানি যে বলে দাম কমিয়ে দেবে, তাতে তো তাদের লস নাই। বাজার খারাপ, মাল তো চলে না। মাল না চললে এগুলা বলে। কিছুদিন আগে দাম বাড়তি ছিল, মানুষ নিত না। খুব লস গেছে, এখন মানুষ একটু তাকায় ব্রয়লারের দিকে। কোম্পানির হাতেই সব।”
একই দিন কারওয়ান বাজার, মিরপুরের কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ায় ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, চার-পাঁচ দিন আগেও তারা ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় মুরগি বিক্রি করেছিলেন।
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, “আইজ ২০০ ট্যাকা কেজি, কাইল ২২০ টাকায় বেচছি। … আগের দিন ১৯০ এর উপরে কি না আছিল, আইজ রেইট গেছে ১৭৫।”
এদিকে দাম কমায় নাখোশ খামারিরা। কারণ তিনি মুরগির বাচ্চা বেশি দামে কিনে সবে খামারে তুলেছেন।
এক খামারি জানান, “পাশের খামার থেকে বিক্রি করল ১৫৫ টাকায়। এখন যারা বিক্রি করছে তাদের বাচ্চা কেনা আছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। এরা যদি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে মুরগি বিক্রি করে, তাহলে এরা কোনো রকম ক্যাশ পাবে, লাভ যদিও হবে না।
“কিন্তু প্রতিদিন তো ১০ থেকে ১৫ টাকা কমতেছে, ১০ থেকে ১৫ দিন পর কী হবে, তা তো বুঝতে পারতেছি না।”