• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
রাজধানীতে

মাছে তো ছোঁয়াই যাচ্ছে না, সবজিতেও আগুন ধরেছে

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩, ০৯:১৬ পিএম

মাছে তো ছোঁয়াই যাচ্ছে না, সবজিতেও আগুন ধরেছে

ছবিঃ সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মালিবাগের একটি বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন গার্মেন্টস কর্মী সিরাজুল ইসলাম। অনেক খুঁজেও তিনি কম দামের কোনো মাছ পাচ্ছেন না। সব ধরনের মাছের দামই চড়া। সবজি কিনতে গিয়ে দেখেন এখানেও দামে আগুন।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগে তো তাও তেলাপিঁয়া, পাঙাস মাছের দাম কম ছিল। এখন এসব গরিবের মাছের দামও বেড়ে গেছে। শুধু সবজি যে খাবো তারও উপায় নেই, কারণ প্রতিটি সবজির দামও বাড়তি।

শীতের সবজিতেও স্বস্তি ফেরেনি কাঁচাবাজারে

শুক্রবার (১০ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতাদের কাছ থেকে বাজারের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে এমন অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে বাজার ঘুরেও একই দৃশ্য দেখা যায়। বাজারে কম দামে কোন মাছই পাওয়া যাচ্ছে না সেই সঙ্গে প্রতিটি সবজির দামও বাড়তি যাচ্ছে।

অতিরিক্ত দামের কারণে আমরা সাধারণ মানুষরা আগে থেকেই ভালো মাছ খেতে পারি না। আর যেসব কম দামি মাছ ছিল এখন সেগুলোর দামও বেড়ে গেছে। বেড়েছে সবজির দামও। আমরা সাধারণ ক্রেতারা কোথায় যাবো চাকরিজীবী খোরশেদ আলম

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবারের বাজারে রুই মাছ প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেলাপিঁয়া প্রতি কেজি ২০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, শিং প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, টেংড়া প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, পাঙাস প্রতি কেজি ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, শোল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে শীতের শেষের দিক থেকেই বাড়তি দামে সব ধরনের সবজি বিক্রি শুরু হয়েছে। দুই একটি সবজি ছাড়া কোন সবজিই ৪০/৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। পটল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, করল্লা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, সজনে প্রতি কেজি ২০০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা,  ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের ফিডের (খাওয়ার) দাম বাড়ার পর থেকে মাছের দাম বেড়েছে। এই খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে মাছ চাষীদের অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। ফলে আমাদেরও কিনতে হচ্ছে বেশি দামেই মাছ বিক্রেতা আকবর আলী

রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী খোরশেদ আলম বলেন, বর্তমান বাজারে মাংস কেনা তো মুশকিল আবার মাছের বাজারও চড়া। তবে আগে তেলাপিঁয়া, পাঙাস, চাষের কই এমন জাতীয় মাছগুলো কিনে খাওয়া যেত কিন্তু এখন আর এগুলোর কম দাম নেই। এসবের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আয়-ব্যয়ের হিসেব এখন মেলানো যাচ্ছে না। ডাল, ভাত, মাছ সবজি খেয়ে যারা কোনোভাবে টিকে থাকছে তাদেরও এখন বিপদ। অতিরিক্ত দামের কারণে আমরা সাধারণ মানুষরা আগে থেকেই ভালো মাছ খেতে পারি না। আর যেসব কম দামি মাছ ছিল এখন সেগুলোর দামও বেড়ে গেছে। একইভাবে বেড়েছে সবজির দাম। আমরা সাধারণ ক্রেতারা কোথায় যাবো?

শীতের মৌসুম শেষে সবজির দাম বাড়তি থাকবে এটা স্বাভাবিক। কারণ এসময় শীতের সবজির মৌসুম শেষে সিজনাল সবজিগুলো আর হচ্ছে না। সবজি বিক্রেতা চাঁদ মিয়া

মাছের দাম বৃদ্ধি নিয়ে রাজধানীর শেওড়াপাড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা আকবর আলী বলেন, আসলে মাছের ফিডের (খাওয়ার) দাম বাড়ার পর থেকে মাছের দাম বেড়েছে। এই খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে মাছ চাষীদের অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। যে কারণে তারা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে, ফলে আমাদেরও কিনতে হচ্ছে বেশি দামেই। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারের ক্রেতাদের উপর। আমরা কম দামে কিনতে পারলে কম দামেই বিক্রি করতে পারবো। পাঙাস, তেলাপিঁয়া জাতীয় মাছগুলোর দামও এ কারণেই বাড়তি।

অন্যদিকে সবজির দাম কেন বাড়তি, এ বিষয়ে একই বাজারের সবজি বিক্রেতা চাঁদ মিয়া বলেন, শীতের মৌসুম শেষে সবজির দাম বাড়তি থাকবে এটা স্বাভাবিক। কারণ এসময় শীতের সবজির মৌসুম শেষে সিজনাল সবজিগুলো আর হচ্ছে না। নতুন মৌসুমের সিজনাল সবজি উঠতে শুরু করলে আবার দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে শীতের সময় যতটা কম দামে সবজি কেনা গেছে, এখন আর অতটা কমে সবজি পাওয়া যাবে না। এছাড়া পাইকারি মার্কেটেই সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি যাচ্ছে।

 

এসএইচএ/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ