সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাজারের চিন্তা করলেই হাজার টাকার নিচে কিছু ভাবা যায় না বলে মনে করছেন ক্রেতারা। তারা জানান, দু-চার পদ কিনতেই খরচ হয় ৫০০ টাকার ওপরে, তা-ও সপ্তাহ পার হয় না। শুধু হাজার টাকায় এক সপ্তাহের মাছ আর সবজির চাহিদা মেটানো সম্ভব। তবু প্রতিনিয়ত বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের কপালে। আর মাছ-মাংস এখন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলে মনে করেন তারা।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী মিরপুরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের মৌসুমেও যেকোনও এক প্রকারের সবজি কিনতে অর্ধশত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে একজন ক্রেতাকে। মাছ কিনতে নিম্নে ৩০০ টাকা, কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর মাংসের দোকান এড়িয়ে চলছেন ক্রেতারা।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৪০, মুলা ৩০, শিম ৩০ থেকে ৫০, কাঁচা পেঁপে ৪০, মিষ্টিকুমড়া ৪০, শালগম ৩০, করলা ১০০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা; ফুলকপি ২০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ২৫ টাকা পিস ও লাউ ৭০ টাকা পিস।
এ ছাড়া কেজি প্রতি আলু ২০ টাকা, পেঁয়াজ ২৫, রসুন মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ ও আদা ৯০ টাকা। বাজারে শাকের দামও বেড়েছে, আবার কমেছে পরিমাণ। চিকন লালশাক প্রতি আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২৫, লাউশাক ৩০ ও ডাঁটাশাক ১৫ টাকা আঁটি। বাজারে ব্রয়লার মুরগির ও তার ডিম এখন আলোচনার তুঙ্গে। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে এখন ২১০ টাকা। লাল ব্রয়লার ২৭০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫২০ টাকা। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে এখন ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। মুরগির ডিমের বাজারেও অস্থিরতা; দিনের ব্যবধানে দাম বাড়ে। এখন ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১৪০ টাকা।
মাংসের চাহিদা মাছে মেটানোও দায় হয়েছে ক্রেতাদের জন্য। মাছ কিনতে তাদের নিম্নে কেজি প্রতি ৩০০ টাকা করে গুনতে হয়। কেজিপ্রতি তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কাতলা ও রুই ২৫০ থেকে ৩৪০, কালবাউশ ২৫০, পোয়া ১২০ থেকে ১৫০, বড় বোয়াল ১০০০, সাগরের সুরমা ২০০, ইলিশ ৭০০ গ্রাম আকারভেদে ৫০০ থেকে ৬০০, টাকি ৩০০, শোল ৫০০ থেকে ৬০০, বড় চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০; টেংরা ছোট ২৪০, বড় ৬০০; বাইম ৪৫০ থেকে ৫০০ ও কাচকি ২৪০ টাকা।
বাজারে সবচেয়ে ভিড় কম মাংসের দোকানে। দীর্ঘদিন থেকেই প্রতি কেজি গরু বা মহিষের মাংসের কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা।
এ ছাড়া চাল-ডালের দোকান ঘুরে দেখা যায়, ২৮-‘এ’ চাল ৬০ টাকা কেজি, পাইজাম ৫৫ টাকা কেজি ও গুটি বা মোটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি, মিনিকেট ৭৫ টাকা কেজি। মশুর ডাল ১০০ টাকা, মুগডাল ১৩০, খেসারি ডাল ৯০ ও বুটের ডাল ৭৫ টাকা কেজি।
প্রতিনিয়তই বাজারের খরচ বাড়ায় ক্রেতারা এখন কৌশলী ভূমিকা পালন করছেন। টাকা গুনে বাজার করছেন তারা। তাতে সব না মিললেও আপাতত চলার মতো জিনিসপত্র কিনছেন।
বাজারে আসা অনেক ক্রেতাই মনে করেন, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও বড় ব্যবসায়ীদের অসততার কারণে বর্তমানে বাজারে সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বে। তারা আশঙ্কা করছেন, এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন রমজান মাসে ভোগান্তি আরও বাড়বে।
আরিয়ানএস/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন