প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩, ০৯:৫৬ পিএম
আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলার রেট এবং পরিশোধন বিবেচনায় নিয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চাপের মুখে গত ১ ফেব্রুয়ারি চিনির দাম বাড়ায় সরকার। যেখানে খোলা চিনি প্রতিকেজি ১০৭ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
দাম বাড়ানোর ছয়দিন পরও বাজারে চিনির সংকট কাটেনি। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা জানালেন, মিল মালিকরা সরকার নির্ধারিত দামে চিনি দিচ্ছে না। বাড়তি দরে কিনতে চাইলেও মিলছে না বিক্রয় রশিদ। তাই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান আতঙ্কে চিনি বিক্রি বন্ধ রেখেছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
কাঁচাবাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা তো চিনির কেজি ১১০ টাকায় বিক্রি করতে পারি না। এতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। সরকার খোলা চিনির দাম ১০৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। তাই ভোক্তারা বলেন যে আমরা কেন ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। ফলে আমরা অতঙ্কে থাকি, যে কোনো মুহূর্তে মোবাইল কোর্ট চলে আসবে।’
আরেক জন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি প্রতি কেজি চিনি ১১০ টাকায় কিনি। পরে সেগুলো পরিবহন করে আনতে কেজিতে আরও ২ টাকা গুনতে হচ্ছে। সুতরাং চিনি কিনতেই আমার ১১২ টাকা ব্যয় হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমি কীভাবে সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি করব।’
চিনি বিক্রি না করার বিষয়ে এক বিক্রেতা বলেন, ‘আমাদের চিনি কিনতে হচ্ছে ১১১ টাকায়, আর প্যাকেটজাত চিনির গায়ের দর ১১২ টাকা। তাহলে আমরা কত দামে বিক্রি করব? তাই আমরা চিনি আনিই না।’
ভোক্তা অধিকারের জরিমানার ভয়ে চিনি বিক্রি না করার কথা জানিয়ে আরেকজন বিক্রেতা বলেন, ‘এক বস্তা (৫০ কেজি) চিনি বিক্রি করে আমরা সর্বোচ্চ ১০০ টাকা লাভ করি। কিন্তু যদি ম্যাজিস্ট্রেট চলে আসেন, তাহলে আমাদের বড় আকারে জরিমানা গুণতে হয়। তাই ভয়ে ভয়ে আমরা চিনি বিক্রি করছি না।’
পাশেই পাইকারি কৃষি মার্কেটের ডিলারদের কাছেও দেখা মেলেনি প্যাকেটজাত চিনির। সীমিত আকারে খোলা চিনির সরবরাহ থাকলেও ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৩৩০ টাকায়। তবে খুচরা ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে ১১৫ টাকা কেজি দরে।
এক ক্রেতা বলেন, ‘আমি চিনি কিনতে এসে দেখি দোকানিরা ১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। তাই বাধ্য হয়ে এই দামেই কিনতে হচ্ছে।’
চিনি দিয়ে এমন ছিনিমিনির খেলায় ক্রেতারা ক্ষোভ জানানোর পাশাপাশি কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন বিকল্পপথ। এক নারী ক্রেতা বলেন, ‘এখন গুড়ের মৌসুম। তাই এখন থেকে চিনির বদলে লাল চা খাই গুড় দিয়ে। এত দাম দিয়ে চিনি কেনা সাধ্যে নেই।’