• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

রাশিয়ায় শীতকালীন সবজি রফতানি করবে বাংলাদেশ: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩, ০৯:১৯ পিএম

রাশিয়ায় শীতকালীন সবজি রফতানি করবে বাংলাদেশ: কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, রাশিয়ার শীতকাল অনেক লম্বা। এ সময়ে তাদের কোনো ফসল হয় না। শীতকালে বিভিন্ন সবজিসহ আমরা যে ফসলগুলো উৎপাদন করি যেমন- ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স; এগুলো রাশিয়ায় রফতানি করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ‘একসময় আমরা রাশিয়ায় অনেক আলু পাঠাতাম। কিন্তু নানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু রাশিয়ায় বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে, এখন আমরা আবার রাশিয়ায় আলু আমদানির ব্যবস্থা করব।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করার রাশিয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর মাত্র তিনটি দেশ থেকে পটাশিয়ামের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সার আনা যায়। তারা হলো: বেলারুশ, রাশিয়া ও কানাডা। প্রতি টন পটাশিয়াম আমরা ২১৯ ডলারেও কিনেছি। আবার সেটি আমাদের এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ ডলারেও কিনতে হয়েছে। করোনা ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনটি হয়েছে। এখন দাম কিছুটা কমতির দিকে। 

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রথম দিকে আমাদের অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা উঠেছে, এলসিসহ সার আনার প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি।’

এই মুহূর্তে দেশে পর্যাপ্ত সারের মজুত রয়েছে উল্লেখ করে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের যে সমঝোতা রয়েছে, আমরা আবার সেটি নবায়ন করার ব্যাপারে আলোচনা করছি। দ্রুতই এটি নবায়ন হবে এবং রাশিয়া থেকে আমরা পটাশিয়াম আনার প্রক্রিয়া শুরু করব। এর আগে একটি প্রস্তাব উঠেছিল, কিন্তু সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা সেটি স্থগিত রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটি হলো ডায়ামোনিয়াম ফসফেট। এটি সৌদি আরব ও অন্য দেশগুলো থেকে আমদানি করি। রাশিয়া থেকেও আনতে পারি। তাদের প্রস্তাব ভালো। দামও সুলভ। খুব তাড়াতাড়ি রাশিয়া থেকে ডায়ামোনিয়াম ফসফেট আনব বলে আশা করছি। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সার, আমরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করি।’

আলুর জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া খুবই উপযোগী মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে রাশিয়ায় রফতানি করার উদ্যোগ নিচ্ছি। আম রফতানিরও সম্ভাবনা আছে। সবমিলিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত খুবই আন্তরিক। কিছু কিছু সমস্যা যদি আমরা সমাধান করতে পারি, তাহলে বিপুল শাকসবজি, ফলমূল আমরা রাশিয়ায় পাঠাতে পারব।

তিনি আরও জানান, বিশেষ করে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দিয়েছেন রুশ রাষ্ট্রদূত। ঝুঁকিমুক্ত শাকসবজির নিশ্চয়তা দিতে পারলে রাশিয়া আমাদের কাছ থেকে আমদানি করবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। খুব দ্রুতই দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়বে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ফুলকপির প্রশংসা করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপত্তা দিতে পারলে রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে এই সবজি কিনবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে। যে কারণে চিরদিন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’


কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে। ভবিষ্যতে দু’দেশের সহযোগিতা বাড়াতেই জোর দিচ্ছি। সব দেশের সঙ্গে আমরা বন্ধুত্ব বাড়াতে চাই। পটাশিয়াম, ফসফেটসহ রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা সার কিনি। এ ছাড়া টমেটোসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি রাশিয়ায় রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।’

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ