প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২২, ০৯:৪৭ পিএম
সাজ্জাদ খান, বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের একজন প্রতারিত গ্রাহক। আলেশা মার্টের চমকপ্রদ ও লোভনীয় বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পরে বিনিয়োগ করেন তিনি। নিজের পছন্দানুযায়ী মোটর সাইকেল কিনতে আলেশা মার্টে অর্ডার দেন তিনি। তবে সেই অর্ডারের পণ্য আর ডেলিভারি পাননি। যদিও পরে পেয়েছেন চেক। কিন্তু পাননি বিনিয়োগ করা টাকা। এরপর অপেক্ষা। কবে মিলবে এই টাকা। দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে করতে দেখা যায় আলোর নিশান। সৌভাগ্যক্রমে ১৪ অক্টোবর মধ্যরাতে আলেশা মার্টের পেইজে প্রকাশ করা চারটি ভিন্ন তারিখের একটি তালিকায় তার অর্ডার নাম্বার আসে। ২৭ অক্টোবরে টাকা পাওয়ার কথা ছিল তার। তখন অনেকটা আশাবাদী ছিলেন তিনি। হয়তো পেয়ে যাচ্ছেন নিজের বিনিয়োগ করা টাকা। আশায় গুড়েবালি তখনই দেখা যায়, যখন পার হয়ে যায় টাকা দেয়ার নির্ধারিত তারিখ। কিন্তু টাকা ফেরত পাননি তিনি।
‘উনি (মঞ্জুর আলম শিকদার) এত বড় বাটপার! ১৫ তারিখে লিস্ট দিয়ে ১৬ তারিখে লিস্টের কিছু মানুষকে টাকা দিয়ে লোক দেখালো যে, সে টাকা দিচ্ছে। এরপর ভাবলাম টাকাটা হয়ত পাবো। ২৭ অক্টোবর এর লিস্টে মাত্র ২০ জনের জায়গা হয়েছে। আমারটা তো পাবোই তাহলে। তবে তারিখ পার হয়েছে কিন্তু পাইনি সে টাকা।’- প্রতারিত গ্রাহক
তিনি বলেন, ‘দুঃখ প্রকাশ করলাম, কারণ অভিযোগ করে কোনো লাভ নাই এটা জানি। আলেশা মার্ট পেইজে ২৭ অক্টোবর এর লিস্টে আমার আইডি এসেছিল কিন্তু টাকা পাইনি। উনি (মঞ্জুর আলম শিকদার) এত বড় বাটপার! ১৫ তারিখে লিস্ট দিয়ে ১৬ তারিখে লিস্টের কিছু মানুষকে টাকা দিয়ে লোক দেখালো যে, সে টাকা দিচ্ছে। এরপর ভাবলাম টাকাটা হয়ত পাবো। ২৭ অক্টোবর এর লিস্টে মাত্র ২০ জনের জায়গা হয়েছে। আমারটা তো পাবোই তাহলে। তবে তারিখ পার হয়েছে কিন্তু পাইনি সে টাকা।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘২৭ অক্টোবর আমি কল দিয়েছিলাম। আমাকে বলা হয়েছিল ৩ নভেম্বর দেয়া হবে টাকা। কিন্তু সে টাকা আর পাইনি। এমনকি আলেশা মার্ট চেয়ারম্যানের ঘোষণা দেয়া দুটি কল সেন্টার নাম্বারও বন্ধ পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘শিকদার টাকা যেহেতু দিবে না তাহলে লিস্ট কেন দিলো?’
এ সময় আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এগুলা দেখার কেউ নাই এই দেশে। মানুষকে নিয়মিত হয়রানি করছে এই আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান।’
গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে একের পর এক প্রতারণা করে যাচ্ছেন আলেশা মার্ট চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের আড়ালে সর্বশান্ত করেছেন অসংখ্য মানুষকে। সেই গ্রাহকদের কাছ থেকে বাঁচতে বর্তমানে নিচ্ছেন নানা চল-চাতুরীর আশ্রয়।
গ্রাহকদের অভিযোগ, কখনো অসুস্থ, কখনো এই দিচ্ছি, কখনো আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করুন। এভাবে প্রতিনিয়তই গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছেন আলেশা মার্ট প্রধান।
তারা জানান, গ্রাহকদের শান্ত করতে টাকা ফেরত দেয়ার একটি ছোট তালিকা প্রকাশ করেছিলেন আলেশা মার্টের ফেসবুক পেইজে। সেই তালিকা নিয়েও তাদের মাঝে দেখা দিয়েছিল অসন্তোষ। তবে তালিকা দেখে অনেকেই ভেবে ছিলেন হয়তো কেউ না কেউ টাকা পাবে। তালিকায় উল্লেখ করা তারিখেও মেলেনি টাকা। এমনকি পাওয়া যায়নি টাকা দেয়ার বিষয়ে কোনো সদুত্তর।
অভিযোগ রয়েছে, আলেশা মার্টের কল সেন্টারের দুইটি নাম্বারও বন্ধ পাচ্ছেন তারা।
গ্রাহকদের দাবী করা তথ্যানুযায়ী সিটি নিউজ ঢাকার এই প্রতিবেদক আলেশা মার্টের কল সেন্টারের নাম্বার দুটোতেই নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কল করে। কিন্তু নাম্বার দুটোই বন্ধ পাওয়া যায়।
তালিকায় নাম আসার পরও টাকা না পাওয়া এবং কল সেন্টারের দেয়া নাম্বার বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চেয়ে মঞ্জুর আলম শিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিটি নিউজ ঢাকা। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। এসএমএস বার্তা পাঠানো হলেও তার উত্তর মেলেনি।
এআরআই/এএল