প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২, ০৮:০৮ পিএম
ঘুরছেন-ফিরছেন, তদবির করছেন। নতুন নতুন ছক কষছেন প্রতারণারও। তিনি আছেন মন্ত্রণালয়ে, আছেন ব্যাংকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সদর্প বিচরণ তার। সব জায়গাতেই আছেন তিনি। শুধু নেই পুলিশের চোখে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই সংস্থাটির কাছে পলাতক তিনি। তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ- এমনই বক্তব্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের।
এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আদালত থেকে মঞ্জুর আলম শিকদারের বিরুদ্ধে শতাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে পরোয়ানার সংখ্যা। গ্রাহকরা বলছেন, মঞ্জুরকে গ্রেফতারে কোনো তৎপরতা নেই পুলিশের মধ্যে।
আবিদ হাসান নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘মঞ্জুর আলম ঢাকায় গুলশানের বাসায় থাকছেন। নিয়মিত ফেসবুক লাইভে আসছেন। কিন্তু গুলশান-বনানী থানার পুলিশ নাকি তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক!’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া বলেন, ‘আমাদের থানায় মঞ্জুর আলম শিকদারের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
নূরে আজম মিয়া বলেন, ‘আলেশা মার্টের অফিস আগে বনানীতে ছিল। এখন সেটি বন্ধ রয়েছে। মঞ্জুর আলমকে ধরতে আমাদের ফোর্স তার গুলশানের বাসায় অভিযান চালিয়েছে। সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে পেলেই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
আলেশা মার্ট এবং মঞ্জুর আলম শিকদার ইস্যুতে এখন পর্যন্ত কম জল ঘোলা হয়নি। তবুও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন আলেশা মার্টের প্রতারিত গ্রাহকরা।
সে কারণে পুলিশের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। তারা বলছেন, আলেশা মার্ট চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলমের বিষয়টা এখন ওপেন সিক্রেট। বর্তমান এই অবাধ তথ্য প্রযুক্তির যুগে খুঁজে পাচ্ছি না বললেই বিষয়টা শেষ হয়ে যায় না। এর চেয়ে অনেক বড় বড় ধুরন্ধর অপরাধীদের এর আগে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে গ্রেফতার করার সক্ষমতা দেখিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু আলেশা মার্ট চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা দেখতে পাচ্ছেন না তারা।
ফারুক হোসেন নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘প্রতারণার অভিযোগ উঠার পর অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু শতাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার পরও আলেশা মার্ট প্রধানকে আইনের আওতায় না আনায় বিষয়টা অন্য বার্তা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি অপরাধীদের চেয়ে আইনের হাত অনেক বেশি লম্বা। তাই আমরা দাবি জানাই মঞ্জুর আলমকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করে প্রতারিত গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ পদক্ষেপ নেয়া হোক।’
/এএল