প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২২, ০৪:৫৯ এএম
আলেশা মার্টের প্রতারণার সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে রাসেল ফরহাদ নামক এক যুবকের বিরুদ্ধে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটিতে টাকা বিনিয়োগ করতে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করতেন রাসেল। গ্রাহকদের এই অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। আলেশা মার্টের অফিসিয়াল কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপের এডমিন ছিলেন তিনি। একইসঙ্গে আলেশা মার্টের সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাস্পেইন চালাতেন তিনি। আর গ্রাহকদের বিশ্বস্ততা অর্জনের মাধ্যমে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদারকে মানুষের শতশত কোটি টাকা টাকা হাতিয়ে নিতে সহযোগিতা করছেন তিনি। এসব তথ্যের ভিত্তিতে তাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা।
গোয়েন্দা সংস্থার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাসেল ফরহাদ এর বিরুদ্ধে আলেশা মার্ট কেলেঙ্কারিতে মঞ্জুর আলমের সঙ্গে যোগসাজশের বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। এমনকি মঞ্জুর আলম কর্তৃক বিভিন্নভাবে এই ব্যক্তি লাভবান হয়েছেন তারও তথ্য রয়েছে। এমতবস্থায় তাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা।
রাসেল ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে। এমনকি আলেশা মার্টের প্রতারণার অনেক গোপন রহস্য উন্মোচিত হবে।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, রাসেল ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে। এমনকি আলেশা মার্টের প্রতারণার অনেক গোপন রহস্য উন্মোচিত হবে।
জানা যায়, রাসেল ফরহাদ টেক বিজনেসের সঙ্গে জড়িত। বসুন্ধরা শপিং মলে টেক রিলেটেড একটি দোকান রয়েছে তার। এই ব্যবসার পাশাপাশি আলেশা মার্টের বিভিন্ন গ্রুপ ও সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন চালাতেন তিনি।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, রাসেল ফরহাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। বর্তমানে তিনি রাজধানী ঢাকাতে বসবাস করছেন।
এই ব্যক্তি প্রথমে বিশ্বস্ততা অর্জন করে নেয়। এরপর তার কথায় মানুষ আকৃষ্ট হতে থাকে। আর আকৃষ্ট হওয়ার বিষয়টিকে পুঁজি করে তাদের দিয়ে আলেশা মার্টে বিনিয়োগ করাতেন।
রাসেল ফরহাদ সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন লোভনীয় অফার সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্রেইনওয়াশ করতো বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
তারা জানান, এই ব্যক্তি প্রথমে বিশ্বস্ততা অর্জন করে নেয়। এরপর তার কথায় মানুষ আকৃষ্ট হতে থাকে। আর আকৃষ্ট হওয়ার বিষয়টিকে পুঁজি করে তাদের দিয়ে আলেশা মার্টে বিনিয়োগ করাতেন।
গ্রাহকরা আরও জানান, বিষয়টিকে সহজভাবে নিলেও পরে তার ভিন্নতা দেখা যায়। বেরিয়ে আসে রাসেলের আসল রূপ। আলেশা মার্ট বন্ধের পর টাকা উদ্ধারে রাসেলের নিকট সাহায্য চাইলেও কেউ পায়নি তা। এমনকি বর্তমানেও মঞ্জুর আলম শিকদারের দালালি করেছন রাসেল ফরহাদ- এমনটাই অভিযোগ গ্রাহকদের।
প্রায়ই সময় তিনি আলেশা মার্টের বিভিন্ন অফারের বিষয়ে আমাদের প্রলুব্ধ করতেন। এমনকি বিভিন্ন গ্রাহকদের মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য পণ্য ডেলিভারির ছবিও পোস্ট করতেন। এভাবে তার পোস্ট দেখে আলেশা মার্টের প্রতি আমার বিশ্বস্ততা জন্মে। আমি প্রতিষ্ঠানটিতে সাড়ে ৯ লাখ বিনিয়োগ করি। কিন্তু এটা যে ফাঁদ ছিলো তা বুঝতে পারিনি।
এই বিষয়ে খোস্তাবা পাঠান নামক এক গ্রাহকের সঙ্গে কথা হয় সিটি নিউজ ঢাকার। তিনি বলেন, ‘আওয়ার আলেশা মার্ট নামক একটি ফেসবুক গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি গ্রুপ চালাতেন। প্রায়ই সময় তিনি আলেশা মার্টের বিভিন্ন অফারের বিষয়ে আমাদের প্রলুব্ধ করতেন। এমনকি বিভিন্ন গ্রাহকদের মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য পণ্য ডেলিভারির ছবিও পোস্ট করতেন। এভাবে তার পোস্ট দেখে আলেশা মার্টের প্রতি আমার বিশ্বস্ততা জন্মে। আমি প্রতিষ্ঠানটিতে সাড়ে ৯ লাখ বিনিয়োগ করি। কিন্তু এটা যে ফাঁদ ছিলো তা বুঝতে পারিনি। এত টাকা বিনিয়োগ করে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। মঞ্জুর আলম ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর পাশাপাশি রাসেল ফরহাদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি আমার।’
তিনি আমাকে মোটর সাইকেল নিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তারপর বাজাজ পালসার ডাবল ডিস্ক বাইকটি অর্ডার করি। কিন্তু পণ্য ডেলিভারি দেয়ার আগেই আলেশা মার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে রাসেল ফরহাদকে অবগত করেছি। তিনি বলেছিলেন - ‘ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’ কিন্তু কয়েকদিন পর থেকেই তাকে আর রিচ করতে পারিনি। কয়েকবার ফোন দিলে তিনি ‘চিনিনা’ বলে আমাকে ইগ্নোর করেন। এরপর তাকে আর কলে পাইনি।”
এবি এনামুল হক নামক আরেক গ্রাহক বলেন, “রাসেল ফরহাদের সঙ্গে আলেশা মার্টে বিনিয়োগের বিষয়ে আমার কথা হয়। তিনি আমাকে মোটর সাইকেল নিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তারপর বাজাজ পালসার ডাবল ডিস্ক বাইকটি অর্ডার করি। কিন্তু পণ্য ডেলিভারি দেয়ার আগেই আলেশা মার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে রাসেল ফরহাদকে অবগত করেছি। তিনি বলেছিলেন - ‘ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’ কিন্তু কয়েকদিন পর থেকেই তাকে আর রিচ করতে পারিনি। কয়েকবার ফোন দিলে তিনি ‘চিনিনা’ বলে আমাকে ইগ্নোর করেন। এরপর তাকে আর কলে পাইনি।”
‘মঞ্জুর আলমের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। তিনি মঞ্জুর আলমের মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন। আমার মনে হয় তার রেফারেন্সের প্রতিটি অর্ডার থেকে কমিশন পেতেন রাসেল ফরহাদ।’
তিনি আরও বলেন, ‘মঞ্জুর আলমের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। তিনি মঞ্জুর আলমের মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন। আমার মনে হয় তার রেফারেন্সের প্রতিটি অর্ডার থেকে কমিশন পেতেন রাসেল ফরহাদ।’
অভিযোগ ও আলেশা মার্টের যোগসাজশের বিষয়ে জানতে রাসেল ফরহাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সিটি নিউজ ঢাকা। তাকে একাধিকবার কল করা হলে প্রত্যেকবারই কল কেটে দেন তিনি। এমনকি এসব বিষয় উল্লেখ করে জানতে চেয়ে এসএমএস করা হলেও তার উত্তর মেলেনি।
গ্রাহকদের এসব অভিযোগ ও রাসেল ফরহাদের সঙ্গে মঞ্জুর আলমের সংশ্লিষ্ট থাকার প্রসঙ্গে জানতে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিটি নিউজ ঢাকা। তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এসএমএস বার্তা পাঠানো হলে তার উত্তর মেলেনি।
এআরআই