প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২২, ০২:৪২ এএম
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে শত শত কোটি টাকা। চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে ফেলে এই প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সঙ্গে যে প্রতারণা করেছে- তার নেপথ্যে রয়েছে একদল ফেসবকু গ্রুপ এডমিন। আলেশা মার্টের সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতেন তারা। এই এডমিনদের আইনের আওতায় আনলে গোপন থাকা সব রহস্য বেরিয়ে যাবে। আলেশামার্টের সংশ্লিষ্ট সুত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আলেশা মার্ট লোভনীয় যে সকল অফার দিতো সেই অফারের ক্যাম্পেইন সর্বসাধারণের কাছে ছড়াতেন ফেসবুক এডমিনরা। একইসঙ্গে তাদের রয়েছে বিভিন্ন ধরণের গোপন এজেন্ট।
জানা যায়, আলেশা মার্ট লোভনীয় যে সকল অফার দিতো সেই অফারের ক্যাম্পেইন সর্বসাধারণের কাছে ছড়াতেন ফেসবুক এডমিনরা। একইসঙ্গে তাদের রয়েছে বিভিন্ন ধরণের গোপন এজেন্ট। যারা গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করেছে বিনিয়োগ করতে। এডমিনদের একটি তালিকা পেয়েছে সিটি নিউজ ঢাকা। যারা গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে লোভ দেখিয়েছেন- লাখ টাকার জিনিস পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেক টাকায়। আর তাদের দেখানো লোভের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন হাজার হাজার গ্রাহক। আলেশা মার্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন দুইজন কর্মকর্তা সিটি এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মাঠ পর্যায়ে যারা প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার গ্রাহককে ফতুর করেছেন - সে তালিকার গ্রুপ এডমিন ও এজেন্টরা প্রকাশ্যে চলছেন।
তারা জানান, গ্রাহকরা শুধু আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে যারা প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার গ্রাহককে ফতুর করেছেন - সে তালিকার গ্রুপ এডমিন ও এজেন্টরা প্রকাশ্যে চলছেন।
গ্রাহকরা জানান, তারা আলেশা মার্ট প্রধান মন্জুর আলম শিকদার তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করলেও এবার প্রলুব্ধ করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।
প্রতারিত গ্রাহকরা আরও জানান, মাঠপর্যায়ে আলেশা মার্টের গ্রাহক সংগ্রহে যারা জড়িত ছিলেন তাদের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তারা মানুষকে লোভে ফেলে সর্বশান্ত করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরলে আলেশা মার্টের নেপথ্যের অনেক তথ্য জানা যাবে। পাশাপাশি লোভনীয় অফারের সঙ্গে কারা কারা জড়িত ছিল তাও বের হবে।
আলেশা মার্টের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ক্যাম্পেইন চলাকালে রাসেল ফরহাদ নামক একজনকে খুব তৎপর দেখা গেছে। আলেশা মার্টের অফিশিয়াল কয়েকটি গ্রুপের এডমিন ছিলেন তিনি। যেখান থেকেই তিনি আলেশা মার্টের প্রচারণা চালাতেন। একই সঙ্গে প্রলুব্ধ করতেন গ্রাহকদের।
রাসেল কৌশলে আমাদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। তার কথাবার্তা আমাদের প্রভাবিত করতো। তাকে বিশ্বাস করেছিলাম। আর রাসেল আমাদের বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তার হাত দিয়ে মঞ্জুর আলম আমাদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
গ্রাহকদের দাবি, রাসেল ফরহাদের উপর তাদের আস্থা ছিল। তাই তার প্রচারণা দেখে অনেকে আলেশা মার্টে বিনিয়োগ করেন। আর তাতেই নিঃস্ব হয়েছেন তারা।
গ্রাহকরা বলছেন, রাসেল কৌশলে আমাদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। তার কথাবার্তা আমাদের প্রভাবিত করতো। তাকে বিশ্বাস করেছিলাম। আর রাসেল আমাদের বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তার হাত দিয়ে মঞ্জুর আলম আমাদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ, আলেশা মার্টে তাদের বিনিয়োগের টাকা আটকে থাকার পর রাসেল ফরহাদের কাছে অনেকেই সাহায্য চেয়েছেন। কিন্তু গ্রাহকদের এসব সাহায্যের অনুরোধ পাত্তা দেননি তিনি। তাদের দাবী, রাসেল ফরহাদসহ ফেসবুক গ্রুপগুলোর এডমিনদের আইনের আওতায় আনা হোক। তাহলে এরা বুঝতে পারবে- কারো কমিশন খেয়ে সাধারণ মানুষকে পথে নামানোর ফন্দির ফল কী হতে পারে।
গ্রাহকদের অনেকেই রাসেল ফরহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তাদের একজন আনহা আকাশ। তিনি ফেসুবকে একটি পোষ্টে রাসেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি লিখেন, ‘রাসেল ফরহাদের বাড়ির ঠিকানা কেউ বলতে পারবেন কুমিল্লার কোথায়?’
কারো কাছে রাসেল ফরহাদ এর নাম্বার আছে? তার নাম্বার পাওয়া গেলে আলেশা মার্টের ডিটেইলস পাওয়া যাবে। কারো কাছে নাম্বার থাকলে আমাকে দেন।
মো, জামাল হোসাইন নামক আরেক গ্রাহক লিখেন, ‘কারো কাছে রাসেল ফরহাদ এর নাম্বার আছে? তার নাম্বার পাওয়া গেলে আলেশা মার্টের ডিটেইলস পাওয়া যাবে। কারো কাছে নাম্বার থাকলে আমাকে দেন।’
শেখ সাইদ নামক আরেক গ্রাহক লিখেন, ‘মামলায় মনজুর বাটপারের সাথে ওই শালার নাম দেওয়া উচিত।’
অভিযুক্ত রাসেল ফরহাদ একটি টেক রিলেটেড গ্যাজেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ব্যবসার পাশাপাশি আলেশা মার্টের প্রচারণা চালাতেন তিনি।
গ্রাহকরা জানান, অভিযুক্ত রাসেল ফরহাদ একটি টেক রিলেটেড গ্যাজেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ব্যবসার পাশাপাশি আলেশা মার্টের প্রচারণা চালাতেন তিনি।
গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাসেল ফরহাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সিটি নিউজ ঢাকা। তাকে একাধিকবার ফোন করা হলে রিসিভ না করে কেটে দেন তিনি। পরে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে তাকে এসএমএস বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তার উত্তরও মেলেনি।
এআরআই