• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আলেশা মার্টের গ্রাহক হয়রানি

অভিযুক্ত ব্যক্তির হাতে তালিকা নিরাপদ নয়

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২২, ০৯:৩৩ পিএম

অভিযুক্ত ব্যক্তির হাতে তালিকা নিরাপদ নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট। যার প্রতিটি পদে পদেই বিতর্ক আর অনিয়ম। রয়েছে দুর্নীতি, রয়েছে প্রতারণা। এবার আবার নতুন প্রতারণায় নেমেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার- এমনটাই মনে করছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

প্রতারিত গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের জন্য শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাতে একটি তালিকা প্রকাশ করে আলেশা মার্ট। সেই তালিকা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক প্রশ্ন। গ্রাহকরা বলছেন, এই তালিকা করার সময় আবারও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে আলেশা মার্ট। সাধারণ গ্রাহকদের এই তালিকায় আনা হয়নি। যা দু-একজনকে আনা হয়েছে তারা মামলা করা গ্রাহক। এই তালিকা ভূয়া এবং প্রশ্নবিদ্ধ। মঞ্জুর আলম শিকদার একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি। তার হাতে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের তালিকা কখনোই সুষ্ঠুভাবে হতে পারে না।

‘যারা ইতোমধ্যেই মামলা করেছেন তারা টাকা নিতে আসবেন না। টাকা নিতে হলে মামলা তুলে তারপর আসতে হবে। না হলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’ - মঞ্জুর আলম

তালিকা প্রসঙ্গে শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল ৪.০০ টায় ফেসবুকে লাইভে আসেন আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার। সেখানে তিনি বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যেই মামলা করেছেন তারা টাকা নিতে আসবেন না। টাকা নিতে হলে মামলা তুলে তারপর আসতে হবে। না হলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’

তার এই বক্তব্যে টাকা না দেয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করছেন গ্রাহকরা। তারা বলছেন, যারা মামলা করেছেন তারা টাকা পাওয়ার পর মামলা তুলবেন। টাকা না পেলে মামলা তুলবেন কোন বিশ্বাসে? কারণ মঞ্জুর আলমের ট্রাক রেকর্ড ভালো না। তিনি টাকা দেয়ার কথা বলে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরাচ্ছেন। মামলা তুলে যে গ্রাহকরা টাকা পাবেন তারে গ্যারান্টি কী?

প্রতারিত গ্রাহকরা এটাও বলছেন যে, মঞ্জুর আলম যেভাবে টাকা দিতে চাচ্ছেন সেটা যথাযথ মাধ্যম নয়। ইভ্যালির ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে যেমন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়েছিল- আলেশা মার্টের ক্ষেত্রেও এমনটাই চাচ্ছেন গ্রাহকরা। যেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিদফতর, প্রতিযোগিতা কমিশন গ্রাহকদের প্রতিনিধি থাকবেন। 

একইসঙ্গে গ্রাহকরা দাবি করেছেন, আলেশা মার্টের সার্ভারে প্রবেশাধিকার নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ সাধারণ গ্রাহকদের লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনা করবেন। এরপর সেখান থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী তালিকা প্রণয়ন করবেন। তাহলে পাওনাদার গ্রাহকদের তালিকা সুষ্ঠু ও নিরাপদ হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘গ্রাহকদের এই দাবি অবশ্যই যুক্তিযুক্ত। যেহেতু বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নজরদারি করে আমরা আগামী সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।’

গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে যদি সিরিয়াল ব্রেক করে ফেসওয়াইজ (মুখচেনা) তালিকা হয় তাহলে সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে যদি সিরিয়াল ব্রেক করে ফেসওয়াইজ (মুখচেনা) তালিকা হয় তাহলে সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

যখন কেউ গ্রাহকদের পক্ষে কথা বলেন তখন আলেশা মার্ট প্রধান তাকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন গ্রাহকরা। ইতোপূর্বে এমনটাই হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। তাই তারা আকুতি জানিয়েছেন- নতুন করে আর কেউ যেনো মঞ্জুর আলম শিকদারের কোনো প্রলোভনে পড়ে চুপ না হয়ে যায়।

এই সকল বিষয়ে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সিটি নিউজ ঢাকা। প্রথম দফায় তিনি সিটি নিউজ ঢাকার সঙ্গে কথা বললেও পরে আর কোনো বক্তব্য দেননি। এমনকি তার নিকট এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে তাকে এসএমএস বার্তা পাঠানো হলেও তার উত্তর দেননি তিনি।

এআরআই

আর্কাইভ