প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২২, ১০:৫৩ পিএম
টাকা আমানতকারীদের। মৌজ করছেন আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার। মানুষের আহাজারি ও গগণবিদারী কান্না তাকে যেন নাড়া দিতেই পারছেনা। তারপরও বিভিন্ন মিডিয়ার লেখালেখির চাপে সম্প্রতি কয়েকজনকে টাকা দেয়ার লিস্ট প্রকাশ করেছেন। বাকীদের টাকা পরিশোধ করতে কতবছর লাগবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। তিনি যা বলছেন তা কতটা বাস্তবায়ন করবেন তার কোন নিশ্চয়তা মিলছেনা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল চারটার দিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করেছেন তিনি। লাইভে মঞ্জুর আলম বলেন, ‘আমরা গতকাল একটি ছোট লিস্ট প্রকাশ করেছি। আমাদের পক্ষে সবাইকে হয়তো খুশি করা সম্ভব না। কিন্তু আমরা এটা আস্তে আস্তে বাড়াবো। প্রসেসটা এরকম, শুরুতে অল্প করে সরাসরি কাস্টমারদের টাকা দিচ্ছি। আলেশা মার্টে যাদের টাকা আছে তাদের জন্য এনওসির ব্যবস্থা করা হয়েছে । এর বাইরেও আরো কিছু মাল্টি ওয়েতে টাকা যাচ্ছে। অনেকেই হয়তো হতাশ- লিস্টে খুব কম সংখ্যক অর্ডার কেনো?
মঞ্জুর বলেন, ‘অনেকেই সিরিয়াল বুঝতেছেন না। আসলে সিরিয়াল অনেকটা ব্রেক করা। ব্রেক করার পিছনে কিছু লজিকাল কারণ রয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, অনেকে মামলা করেছে, অনেকে ভোক্তাতে গেছে। ভোক্তা থেকেও কিন্তু টাইম টু টাইম টাকা যাচ্ছে। গত ১৫ দিনে গেছে। সামনে আরো যাবে।’
যারা মামলা করেছে- সেটা তো লিগ্যাল প্রসিডিউর। সেখানে আমাদের কিছু করার নাই।
তিনি বলেন, ‘যারা মামলা করেছে- সেটা তো লিগ্যাল প্রসিডিউর। সেখানে আমাদের কিছু করার নাই। আরো একটা কারণে সিরিয়াল ব্রেক হচ্ছে। আমরা মুলত ছোট এমাউন্টগুলোকে প্রায়োরিটি দিচ্ছি। এই কারণে যাদের বড় অর্ডার রয়েছে তারা এই লিস্টে নাই। সুতারং এই লিস্ট নিয়ে কনফিউজড হওয়ার কিছু নাই। এই লিস্টগুলো আসলে গতবছর জুনেই পাবলিশ করা ছিল। সুতারং ওখান থেকে যদি আপনারা লিস্ট মিলিয়ে দেখেন তাহলে দেখবেন এটার মধ্যে অন্য কোনো মেকানিজম নেই। লিস্টটা কেনো ব্রেক করা হয়েছে তার এই একটাই কারণ।’
আলেশা মার্ট প্রধান বলেন, ‘আমি একটা কথাই বলবো, আমাদের অনেক দেরি হয়েছে। সম্ভবত, আরো অনেক সময় লাগবে। আমাদের উদ্দেশ্যটা নির্মল। আমরা টাকা দিবো। কিন্তু দেরি হতে পারে।’
টাকা আটকে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জুনেরই ক্যাম্পেইন। জুলাইয়ের ৪ তারিখ হঠাৎ করে একটা নতুন আইন তৈরি হয়ে ক্যাম্পেইনটা বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের ৫ টা ক্যাম্পেইন ছিল। এর মধ্যে ৪টা ক্যাম্পেইন এর কোনো গ্রাহক বলতে পারবে না ৪৫ দিন অতিক্রম হয়েছে। আমাদের জানা আছে তা অতিক্রম হয়নি। যদি এক-দুদিন ডিলে হয়ে থাকে। তাহলে বলতে হবে কাস্টমার ডিলে করে এসেছে তাই এমন হয়েছে। তাহলে ৫ নম্বর ক্যাম্পেইনে কেনো এত পবলেম হলো? যেখানে আমরা প্রত্যেকটা ক্যাম্পেইন আমরা প্রপারলি ডেলিভারি দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘৫ নম্বর ক্যাম্পেইন এর বিষয়টা আপনারা জানেন- সাডেন কন্ট্রোভার্সির জন্য আমার পিছনে থাকা সাপোর্টগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া এই নতুন আইনটি নিয়ে আমাদের কোনো নোটিশ পিরিয়ড ছিল না, আগে থেকে জানানো ছিল না। আমাদের ক্যাম্পেইন শেষ হওয়ার ৪ দিন আগেই আইনটি প্রণীত হয়েছে। এমনকি সেদিন থেকেই সেটি কাযর্কর হয়। আমাদেরকে যদি বলতো দুইমাস সময় আছে তাহলে আমরা অর্গানাইজড হতে পারতাম। আমাদের ব্যাংকিং চ্যানেলগুলো নষ্ট হতো না। আমাদের ফাইনান্সিয়াল স্ট্রেইন্থ ঠিক থাকতো।’
যে লিস্টটা প্রকাশ করেছে সেই লিস্টের কেউ শিকদারের কাছে টাকা পাবে না । এটা অনেক আগের লিস্ট। - ভুক্তভোগী গ্রাহক
শিকদার বলেন, ‘আমি জানি অনেকে হতাশ। এক দেড় বছর ধরে অনেকে অপেক্ষা করতেছে। গত বছর জুনের অর্ডার কিন্তু এখন পযর্ন্ত ক্লিন হয়নি। আরো এক বছরের অক্টোবর চলে আসছে। কিন্তু বলতে চাই- আমার ইনটেনশন ভালো। আমরা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কম বেশি দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেয়া কখনোই বন্ধ ছিল না। মাঝে অনেকদিন বন্ধ থাকায় অনেকে হতাশ হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি আইনটি প্রয়োগ হওয়ার কারণে আমরা দিতে পারেনি। যতবারই দিতে গিয়েছি ততবারই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। সিচুয়েশনটা এমন এক অবস্থা গিয়ে নিয়ে ফেলে। মনে হয় না দেয়া অবস্থায় ভালো থাকি। তখন দিতে যাই তখন মনে হয় আরও প্রবলেম হয়।’
তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ হাজার হাজার বুদ্ধি, একেকজন একেকভাবে চিন্তা করে। কিন্তু যে, যে অবস্থানে থাকে সে তার পজিশন থেকে বুঝে আসলে সে কী করতে পারে অথবা কতটুকো করা সম্ভব। আমি জানি একেকজন একেক মতামত দিবে। যেমন কালকে আমাকে আমার এক কাস্টমার এডভাইস করলো - স্যার দেরি করেন কিন্তু পুরো টাকা একবারে দেন। আমি বলতে চাই, অনেক মানুষের হার্ড লাইফ যাচ্ছে। আমি দেরি করে সব টাকা একবারে দিবো সে অপেক্ষা না করে ততক্ষণে তো আমি কিছু মানুষকে সেভ করতে পারি। সেই সুযোগটা যদি আল্লাহ আমাকে দেয় তাহলে তা কেনো আমি গ্রহণ করবো না। যদি দুইজনকে টাকা দিতে পারি তাহলে তা দিবো না কেনো? আমি যতক্ষণ যেভাবে পারি, যতজনকে পারি দিয়ে যাবো।’
মঞ্জুর আলম বলেন, ‘দ্বিতীয়ত আমাদের এই লিস্টটা গেছে দশ তারিখ পর্যন্ত। তারপরে দশ তারিখের আগেই আরেকটা লিস্ট আসবে সম্ভবত আট নয় তারিখে। সেটা হয়তো আরেকটু বড় আকারে আসবে। আমরা পার্ট পার্ট করে মানুষকে টাকা দেয়ার চেষ্টা করবো।’
আমি যদি সারাদিন কোর্টে দৌড়াই তাহলে ব্যবসায় সময় দিবো কখন? ফান্ডিং এর উৎস খুঁজবো কোথায় থেকে? তাই আপনাদের কাছে আমার রিকুয়েস্ট আপনারা যদি মামলা করেন তাহলে প্রসেসে আরো দেরি হবে। এমনকি যারা মামলা করেন তাদেরও টাকা ফেরত পেতে আরও দেরি হবে।
মামলার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেই বাংলাদেশি সিটিজেন, তার আইনগত অধিকার আছে এবং আইনের আশ্রয় নিতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের বলার কিছু থাকে না। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের প্রসেসটাকে আরো বিঘ্ন করে দেয়। আমি যদি সারাদিন কোর্টে দৌড়াই তাহলে ব্যবসায় সময় দিবো কখন? ফান্ডিং এর উৎস খুঁজবো কোথায় থেকে? তাই আপনাদের কাছে আমার রিকুয়েস্ট আপনারা যদি মামলা করেন তাহলে প্রসেসে আরো দেরি হবে। এমনকি যারা মামলা করেন তাদেরও টাকা ফেরত পেতে আরও দেরি হবে। আমি সাজেস্ট করবো মামলা থেকে দূরে থাকা ভালো। বাকীটা আপনাদের চয়েজ। এখানে আমি আপনাদেরকে জোর করে বলতে পারি না, ভাই আপনি করবেন না। আমি বলতেছি লিগ্যাল প্রসিডিউর লং টাইম প্রসেস।’
তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই আমাদের লোক সংখ্যা কম। সিস্টেমে খুব একটা বেশি আপগ্রেড করতে পারি নাই। তাই আমাদের লিস্টে হয়তো এমন অনেকেই আছেন যাদের লিস্টে নাম চলে গেছে যারা মামলা করেছেন। আমি তাদেরকে সতর্ক করে বলতেছি যাদের মামলা আছে তারা দয়া করে টাকা নিতে আসবেন না। কারণ সেক্ষেত্রে একটা জটিল অবস্থার সৃষ্টি হবে। যদি মামলা না উঠিয়ে আপনি টাকা নেন। যদি আপনি টাকা নিতে চান তাহলে আপনার জন্য গুড এডভাইস হচ্ছে রোববার মামলা উঠিয়ে টাকা নিতে আসুন। টাকাটা আপনি নিয়ে যান। যদি তা না করেন। সেখানে আমার ল টিম আছে, তারা লিগ্যাল অ্যকশন নিবে। সেটা কারো জন্যই কাম্য না। আমি চাইনা আপনারা হ্যারেজ হন অথবা আমাকে হ্যারেজ করেন। এটা কোনো ভালো দিক না।’
সিরিয়ালে দিচ্ছেন না। আমরা যারা আগের অর্ডার এর আছি। তাদের কোনো সিরিয়ালি আসলাম না। - ভুক্তভোগী গ্রাহক
আলেশা মার্ট চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি জানি, সময়টা নিয়ে অনেকে আপসেট। সময় আমাদের লাগবে। কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে আমাদের ইনটেনশনটা। আমাদের ইনটেশন ভাবো। আমাদের উদ্দেশ্য যদি খারাপ হতো তাহলে মাঝে যে টাকাগুলো দিছি তা দিতাম না। আমাদের ৭৯০ কোটির মধ্যে ৬৫০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। কন্ট্রোভার্সির মধ্যে এই টাকা কোথা থেকে ম্যানেজ হইছে আল্লাহ ভালো জানে। আপনাদের বুঝাইতে পারবো না। সে সময় কন্টোভার্সির কারণে ফান্ডিং ও পাওয়া যায়নি। তারপরও আমরা সবাইকে দেয়ার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদেরকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমি অন্যদের সাথে নিজেকে কম্পেয়ার করতে চাই না। আলেশা মার্টের সাথে অন্যদের কম্পেয়ার করার কী আছে তা আমি জানিনা। কারণ আমরা সর্বোচ্চ ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে ব্যবসায় এসেছি, আমরা একটা গ্রুপ স্ট্রাকচরাল। আমি ১৯৯৪ সাল থেকে ব্যবসা করি। অন্য ই-কমার্সগুলোর সাথে আমাকে কম্পেয়ার করা ঠিক না। কিন্তু অনেকেই তা করেন। আমরাই একমাত্র ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যারা মাত্র তিন দিনে ডেলিভারি দিয়েছি অন্যকোনো ক্যাম্পেইন ছাড়া। এটা কি বাংলাদেশে কোনো ই-কমার্স করেছে? কিন্তু আমরা করেছি। আমরা কোনো ক্যাম্পেইনের শতভাগ ডেলিভারি না দেয়া পযর্ন্ত দ্বিতীয় কোনো ক্যাম্পেইনের কোনো অর্ডার নেইনি। সেটা কিভাবে সম্ভব হয়েছে যদি আমাদের নিজেদের ফান্ডিং না থাকতো। আপনাদেরকে ব্যাপারগুলো বুঝতে হবে। আরো অনেকে বুঝে না।
আমাদের বিজনেসটা লসের আমি যখন ৩০% ডিসকাউন্ট দেই। মাদার কোম্পানি থেকে কমিশন পেতাম ৩-৫%। এর উপরে না। তারমানে পকেট থেকে তা দিতে হতো।
আমাদের বিজনেসটা লসের আমি যখন ৩০% ডিসকাউন্ট দেই। মাদার কোম্পানি থেকে কমিশন পেতাম ৩-৫%। এর উপরে না। তারমানে পকেট থেকে তা দিতে হতো। বড় আকারের ভর্তুকি যদি করতে হয়, আমার চারটা ক্যাম্পেইনের শতভাগ ডেলিভারি ডান। এমনকি ৫ নম্বর ক্যাম্পেইনেরও তিন ভাগের দুই ভাগ দেয়া হয়েছে। এখন এক ভাগ বাকী আছে। তারমানে আমার পকেট থেকে প্রতিনিয়তই টাকা যাচ্ছে। লস পুরোটাই আমরা মানুষের জন্য বহন করতেছি। সেই শক্তি আমার ছিল। কিন্তু আল্লাহ আমাকে ক্যাশের সামর্থ্য দেয়নি। তাই ক্যাশ সাফার করি। ক্যাশে বিক্রি করতে গেলে কন্টোভার্সি দেখা দিতো।’
মঞ্জুর আলম বলেন, ‘আমি বাংলাদেশি নাগরিক ২৭ -২৮ বছর যাবৎ ব্যবসা করি। আমার কোনো ব্যাংকিং ট্র্যাক রিপোর্ট খারাপ নেই। কোনো ব্যাড লোন নাই। আমি কখনো ব্ল্যাক লিস্টেড হইনি। তারপরও আমি ব্যাংকিং সাপোর্ট পাইনা। শুধু কন্টোভার্সি জনিত কারণে। কিন্তু আপনাদের দোয়া থাকলে সবই সম্ভব। আপনাদের ধৈর্য্যটা হচ্ছে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় পাথেয়। আপনারা যে সহনশীলতা দেখিয়েছেন আশা করি আমরা পেরে যাবো। ব্যাংক ডিপোজিটের ও কিছু কিছু নিশ্চয়তা আছে। আমরা যে একেবারে তা এড়িয়ে গেছি এমন কিন্তু না। এটা আপকামিং অনেকগুলা লিস্টের মধ্যে পেয়ে যাবেন।
একই কথা আর কত কন? আপনি কথা রাখতে না পারলে মালমা তো করবেই। আপনার কথা শুনতে শুনতে মানুষ অতিষ্ঠ।’ - ভুক্তভোগী গ্রাহক
চেক রিফ্লেসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা গুগলশিট দিয়েছি। যাদের চেকের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। যারা চিন্তায় আছেন তারা চেঞ্জের আবেদন করতে পারেন। আমি আগের লাইভে বলেছিলাম - চেকের ডেট থাকুক অথবা না থাকুক আপনার অর্ডারটি আমার জন্য যথেষ্ঠ। সুতারং চেকের ডেট চলে গেলে আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। চেকের ডেট চলে গেলেও আপনারা টাকা পাবেন। তারপরও যাদের চেক চেঞ্জ করার টেন্ডেসি রয়েছে তারা আসতে পারেন। যারা চেকে বদলাতে চান, তারা তা করতে পারবেন। শিট দেখে আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পোস্টে দুটা কলসেন্টার নাম্বার দেয়া হইছে সে নাম্বারগুলো সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত চালু থাকবে। আমাদের লোক সংখ্যা কম তাই ২৪ ঘন্টা রাখতে পারিনি। আপনারা এই সময়ে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আমাদের কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি আপনাদের সঙ্গে কথা বলবে। এবং সমস্যা গুলো নোট করে আমাকে দিবেন।’
১ মাসে ৯৬ অর্ডারে ১ কোটি ১১ লাখ টাকার লিস্ট দিছেন, তাও ঠিক মতো দেন কিনা সন্দেহ। তাহলে ৭ হাজার মানুষ টাকা কবে পাবে? কয়বছরে টাকা পাবে? - ভুক্তভোগী গ্রাহক
গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার রিকুয়েস্ট আপনারা ধৈর্য্য ধরেন। সবাই টাকা পাবেন। আমরা ছোট আকারে শুরু করেছি। অল্প করে দিচ্ছি। আসলে যেরকম দেখা যায় ব্যাপারটা এরকম না। অনেকসময় তা বলা যায় না। ভোক্তা অধিকারসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে টাকা যাচ্ছে। আমরা লিস্ট অনুযায়ী ও দিচ্ছি। লিস্ট নিয়ে অনেকে কনফিউজড। এই কনফিউশনের কিছু নেই। লিস্ট এরকম হওয়ার পেছনে যুক্তিগত কারণ রয়েছে। আসলেই সিরিয়াল ব্রেক করা হয়নি। আপনারা লিস্ট দেখলেই বুঝবেন কিভাবে বাদ গেছে। এবং যাদের বাদ গেছে তাদের অবশ্য অনেক বড় অর্ডার। তাদের হয়তো ২০-৩০ লাখ টাকার অর্ডার। সেগুলোকে আমরা আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছি। সে লিস্ট পরে আসবে। হতে পারে আরো তিনমাস কিংবা চারমাস লাগবে। কিন্তু টাকা আপনারা প্রত্যেকে পাবেন। আলেশা মার্টের টাকা মারা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘হয়তো কমিটমেন্টের টাইমটা দেরি হতে পারে। আমি অনেক মানুষের কাছে টাকা পাই। তারা কমিটমেন্ট দেয়। তিন জায়গায় কমিটমেন্ট পেলে এক জায়গায় দেই। কিন্তু তা মিস করলে আমি ফলস সিচুয়েশনে পড়ে যাই। আমরা সর্বোচ্চ লেভেলে চেষ্টা করতেছি আপনাদের টাকা দেয়ার জন্য। আমি প্রত্যেকের টাকা দিবো। ১০ তারিখের লিস্টের আগে আমি আবার লাইভে আসবো। এবং লিস্ট পাবলিশ হলে আপনারা দেখতে পাবেন তা কতটা বড় হচ্ছে। ডিসেম্বরের পর থেকে লিস্ট অনেক বড় আসবে। ’
আলেশা মার্ট নিয়ে আমার ধারণা খুব সীমাবদ্ধ। আমার থেকে এম্প্লয়িদের ধারণা অনেকগুন বেশি। তারা ই-কমার্সে অভিজ্ঞ, তারা জানে একচুয়েলি কোথায় কি হয়েছে। আমার অন্য অর্গানাইজেশন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম তাই আলেশা মার্ট আমি দেখতাম না। আমি সাধারণ একজন মানুষ। পাবলিক ফেসে আসতাম না। নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
মঞ্জুর আলম বলেন, ‘আমার এম্প্লয়ি অনেক কম। তাদের নিরাপত্তা আপনাদের হাতে। আমার ৯৯% কাস্টমার ভালো। অনুগ্রহ করে তাদের সাথে রুড বিহেভ বন্ধ করুন। তারাই আপনাদের সাপোর্ট দিচ্ছে। আলেশা মার্ট শুরু থেকে আমি চালাতাম না। তারাই চালাতো। হয়তো বোর্ড মিটিংয়ে মাসে একদুইবার যেতাম। ডাটা নিতাম। কিন্তু সামনে আসতাম না। যেহেতু আমি কোম্পানির মালিক, দায়িত্ব আমার। তাই যখন সমস্যা দেখা দিয়েছে তখন আমি নিজেকে সামনে এনেছি।’
তিনি বলেন, ‘আলেশা মার্ট নিয়ে আমার ধারণা খুব সীমাবদ্ধ। আমার থেকে এম্প্লয়িদের ধারণা অনেকগুন বেশি। তারা ই-কমার্সে অভিজ্ঞ, তারা জানে একচুয়েলি কোথায় কি হয়েছে। আমার অন্য অর্গানাইজেশন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম তাই আলেশা মার্ট আমি দেখতাম না। আমি সাধারণ একজন মানুষ। পাবলিক ফেসে আসতাম না। নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেকের মেসেজ আসে আমার ফোনে। প্রায় ৫- ৭শ। তারা ভাবেন আমি কেনো রিপ্লাই দেই। আমি মানুষ রোবট না। এত মেসেজের রিপ্লায় দিতে পারবো না। এটা সম্ভবও না। আপনারা রেসপন্স না পেলে কাস্টমার কেয়ারে কথা বলুন। তারা আমার চেয়ে ভালো ভাবে আপনাদের সাপোর্ট দিতে পারবে। ১০ তারিখ পর্যন্ত ধৈর্য ধরুন। টাকা দেয়া হচ্ছে এবং দেয়া হবে।’
এদিকে লিস্টে নিজের অর্ডার নাম্বার না দেখে লাইভে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক গ্রাহক। তাদেরই একজন মোস্তাফিজুর রহমান রনি। তিনি কমেন্টে লিখেন, ‘একই কথা আর কত কন? আপনি কথা রাখতে না পারলে মালমা তো করবেই। আপনার কথা শুনতে শুনতে মানুষ অতিষ্ঠ।’
মো. ওয়ালিউল্লাহ রাহাত নামক এক গ্রাহক লিখেন, ‘সিরিয়ালি দিচ্ছেন না। আমরা যারা আগের অর্ডার এর আছি। তাদের কোনো সিরিয়ালি আসলাম না।’
রাইদুল ইসলাম রাহাত নামক এক গ্রাহক লিখেন, ‘যে লিস্টটা প্রকাশ করেছে সেই লিস্টের কেউ শিকদারের কাছে টাকা পাবে না । এটা অনেক আগের লিস্ট।’
রাশেদ আহমেদ সাগর নামক আরেক গ্রাহক লিখেন, ‘১ মাসে ৯৬ অর্ডারে ১ কোটি ১১ লাখ টাকার লিস্ট দিছেন, তাও ঠিক মতো দেন কিনা সন্দেহ। তাহলে ৭ হাজার মানুষ টাকা কবে পাবে? কয়বছরে টাকা পাবে?’
ভুক্তভোগী এই গ্রাহকদের মত আরো অনেক গ্রাহকই তাদের বিনিয়োগ করা টাকা কবে পাবেন বলে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে সেই প্রশ্নের জবাব কবে হবে তার নিশ্চয়তা নেই।
এআরআই