প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২২, ০৫:২৯ এএম
মঞ্জুর আলম শিকদার। এই মুহূর্তে ই-কমার্স খাতে সমালোচিত ব্যবসায়ীদের অন্যতম একজন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। রয়েছে শত শত অভিযোগ। হাজার হাজার গ্রাহকের টাকা নিয়ে আছেন অধরা।
ই-কমার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের উদীয়মান এ খাতের জন্য তার প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট নেতিবাচক বার্তা ফেলেছে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে গ্রাহকদের আস্থা তৈরি করা ই-কমার্স প্লাটফর্মে মঞ্জুর আলম শিকদার এখন একজন প্রতারক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। কারণ তার প্রতারণায় নিঃস্ব হয়েছেন হাজার হাজার গ্রাহক, আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়েছেন ই-কমার্সের ওপর।
এত পরোয়ানা- এত অভিযোগ থাকার পরও সবাই চুপ কেন? তারা মনে করছেন, মঞ্জুর আলম শিকদারকে বাঁচানোর জন্য নেপথ্যে কেউ কেউ আছেন। যারা তাকে বাঁচাতে সহায়তা করছেন।
জানা গেছে, আলেশা মার্টের প্রধানের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে। ভোক্তা অধিদফতর, প্রতিযোগিতা কমিশন, ভ্যাট অধিদফতরসহ বিভিন্ন সেক্টরে মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্তহীন অভিযোগ। তবুও কিছুই হচ্ছে না তার! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সবদিক ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এই নাটকীয় আসামি। প্রতারিত গ্রাহকদের প্রশ্ন- এত পরোয়ানা, এত অভিযোগ থাকার পরও সবাই চুপ কেন? তারা মনে করছেন, মঞ্জুর আলম শিকদারকে বাঁচানোর জন্য নেপথ্যে কেউ কেউ আছেন। যারা তাকে বাঁচাতে সহায়তা করছেন।
এ তালিকায় যেমন আছে মন্ত্রণালয়ের লোকজন তেমনি অন্যসব ঘাটে ঘাটে সবাইকে চুপ রাখার কৌশলগত ব্যবস্থা করছেন আলেশা মার্টপ্রধান। ই-কমার্স সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। কারণ তার যাত্রার শুরুতেই ছিল গলদ।
কার্যক্রম শুরু করার আগে বিজ্ঞাপন খরচ ৬০ কোটি টাকা : বিষয়টি শুনতে যদিও একটু অদ্ভুত লাগে তবুও এটাই সত্য। বিষয়টি স্বীকার করেছেন মঞ্জুর আলম শিকদার নিজেও। তিনি এক লাইভে বলেছিলেন, ‘আমি কোম্পানি শুরু করার আগে ৬০ কোটি টাকা শুধু বিজ্ঞাপনে খরচ করেছি, ব্রান্ডিংয়ের জন্য খরচ করেছি।’
তবে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরুর আগে ব্রান্ডিংয়ের জন্য এত টাকা খরচ করার মাঝে অসৎ উদ্দেশ্য বা গলদ দেখতে পাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্রান্ডিংটা যেমন করতে হবে ঠিক তেমনি থাকতে হবে সৎ উদ্দেশ্য। কোম্পানি চালুর আগে শুধু ব্রান্ডিংয়ের জন্য এত টাকা খরচ করাটা সমীচীন নয়। এখানে একটা অসৎ উদ্দেশ্যের গন্ধ পাওয়া যায়। আলেশা মার্টের ক্ষেত্রে শুধু ব্রান্ডিংটাই ছিল, সেবা দেয়ার মনোভাব ছিল না। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল শুধু ব্রান্ডিং করে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেয়া।
ই-কমার্স খাত নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি : চমকপ্রদ ও লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতো আলেশা মার্ট। এক লাখ ৮০ হাজার টাকা বাজারমূল্যের মোটরবাইক ৩৫ শতাংশ কমে এক লাখ ১৮ হাজার টাকায় অফার করতো প্রতিষ্ঠানটি। শর্ত শুধু একটাই- মূল্য পরিশোধের ৪৫ দিন পর দেয়া হবে বাইকের ডেলিভারি। এ রকম অফার ছিল প্রতিষ্ঠানটির অন্য পণ্যের ক্ষেত্রেও।
লোভনীয় ডিসকাউন্ট অফার পেয়ে হুমড়ি খেয়ে অর্ডার করতে শুরু করে সাধারণ গ্রাহকরা। এভাবে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার। প্রথমদিকে বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য কিছু পণ্যের ডেলিভারি দিলেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর বন্ধ করেন পণ্য ডেলিভারি।
আমরা অনেক কষ্ট করে গ্রাহকদের কাছে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির একটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করেছি। কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে ই-কমার্স খাতে সংকট তৈরি হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত এক বছর অতিবাহিত হলেও চলছে টালবাহানা। অর্ডারকৃত পণ্য ও গ্রাহকদের পাওনা টাকা কোনোটাই দিচ্ছেন না। এই বিষয়টি ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করেছে ই-কমার্স খাতে। সাধারণ গ্রাহকরা আর বিশ্বাস করতে পারছেন না ই-কমার্স কোনো প্রতিষ্ঠানকে। ফলে আলেশা মার্টের প্রতারণার জন্য ভুগতে হচ্ছে অন্যসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে।
এ বিষয়ে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্ট করে গ্রাহকদের কাছে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির একটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করেছি। কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে ই-কমার্স খাতে সংকট তৈরি হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে ওই সকল প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ বাতিল করেছি। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে নিয়মিত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিটিং করছি।’
গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করেই যাচ্ছেন মঞ্জুর আলম : এত কিছুর পরও গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার। শুধু মাঝে মাঝে বদলাচ্ছে প্রতারণার ধরন। কখনো অসুস্থতার অজুহাতে, কখনো ঋণ না পাওয়ার অজুহাতে আবার কখনো বা গ্রাহকদের মামলার অজুহাত দেখাচ্ছেন তিনি।
এখন পর্যন্ত ৩৪ বার ফেসবুক লাইভে এসেছেন তিনি। বার বার শান্ত করার চেষ্টা করেছেন প্রতারিত গ্রাহকদের। দিয়েছেন পাওনা টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি এবং একাধিক তারিখ। কিন্তু কোনো তারিখেই গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করেননি তিনি।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর লাইভে আসেন আলেশা মার্ট প্রধান। এ দিন গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করার জন্য আগামী ১৬ অক্টোবর তারিখ ঘোষণা করেন মঞ্জুর আলম। যাদের টাকা ফেরত দেবেন সেই তালিকা প্রকাশের কথা ছিল গত ১০ অক্টোবর। কিন্তু তার তিনদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো তালিকা প্রকাশ করেননি তিনি। তবুও ১৬ অক্টোবরের দিকে চেয়ে আছেন সাধারণ গ্রাহকরা।
মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ, কিন্তু হয়নি মামলা : মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ফলে চলতি বছরের মে মাসে একটি চিঠিতে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদার এবং তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর সম্পদের হিসাব তলব করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই সংস্থাটি। সেখানে বলা হয়, মঞ্জুর আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে পণ্য বিক্রয়ের নামে গ্রাহকদের সেঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর সম্পৃক্ত অপরাধের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন ব্যাংকে আলেশা মার্টের ৫৬টি হিসাব রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত আলেশা মার্টের ওই হিসাবগুলোতে গ্রাহকরা প্রায় ২ হাজার ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা জমা করেছেন। এর মধ্যে আলেশা মার্ট ১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা তুলে নেয়।
কিন্তু দীর্ঘ ৫ মাসেও অভিযুক্ত ব্যক্তিদ্বয় বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হয়নি। এই নিয়ে রয়েছে সংশয়। মামলা না হওয়ার পিছনে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলা নাকি আঁতাত রয়েছে- জন্ম দিয়েছে সেই প্রশ্নের।
জানা যায়, প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা জানায় বিভিন্ন ব্যাংকে আলেশা মার্টের ৫৬টি হিসাব রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত আলেশা মার্টের ওই হিসাবগুলোতে গ্রাহকরা প্রায় ২ হাজার ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা জমা করেছেন। এর মধ্যে আলেশা মার্ট ১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা তুলে নেয়।
প্রতিযোগিতা কমিশনের মামলা : বাজারে এসেই চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন আর লোভনীয় অফারে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেছে আলেশা মার্ট। এতে সুস্থ বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হয়। আর এই অভিযোগে চলতি বছর ৩১ জানুয়ারি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে স্ব-প্রণোদিত হয়ে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল সংস্থাটি।
আলেশা মার্ট বাজাজ পালসারের অথোরাইজ সেলার এস কে ট্রেডার্সের কাছ থেকে কম মূল্যে মোটরসাইকেল কেনার কথা বলেছিল। কিন্তু এসকে ট্রেডার্স বিষয়টি অস্বীকার করে।
কমিশন জানায়, ২০২১ সালের জুন মাসে বাজাজ পালসার ব্যান্ডের ১৫০ সিসির মোটরসাইকেল বাজার মূল্যের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম মূল্যে বিক্রি করেছে আলেশা মার্ট। এভাবে তারা বাংলাদেশের মোটরসাইকেলের বাজার অস্থিতিশীল করেছে। তাই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ এর ১৬/২ এর ক ধারায় মামলা করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, কর্তৃত্বময় হিসেবে গণ্য কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার করতে পারবে না।
অনুসন্ধান করে দেখা যায়, আলেশা মার্ট বাজাজ পালসারের অথোরাইজ সেলার এস কে ট্রেডার্সের কাছ থেকে কম মূল্যে মোটরসাইকেল কেনার কথা বলেছিল। কিন্তু এসকে ট্রেডার্স বিষয়টি অস্বীকার করে। তাদের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, তারা আলেশা মার্টকে এমআরপি রেটে মোটরসাইকেল দিয়েছে। তিনি যে ছাড়ের কথা বলেছেন তা সঠিক নয়।
জানুয়ারি মাসে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে মামলা করে প্রতিযোগিতা কমিশন। কিন্তু বর্তমানে মামলার অগ্রগতি কতদূর?- বিষয়টি জানতে প্রতিযোগিতা কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সিটি নিউজ ঢাকা। তবে কর্মকর্তারা বেশ কৌশলেই বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ : টাকা হারিয়ে আলেশা মার্ট প্রধানের বাড়ি ঘেরাও করেছিল প্রতারিত গ্রাহকরা। উপায় না দেখে মঞ্জুর আলম শিকদার বেশ কয়েকজন গ্রাহককে চেক প্রদান করেন। কিন্তু একাউন্টে টাকা না থাকায় সবগুলো চেকই ডিজঅনার হয়। পুনরায় প্রতারণার শিকার হয়ে অনেক গ্রাহক ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করেন। তবে আলেশা মার্টের প্রতারণার বিষয়ে অধিদফতর কী ব্যবস্থা নিয়েছে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক বলেন, ‘আমাদের কাছে অসংখ্য অভিযোগ এসেছে। আমরা ধাপে ধাপে তা যাচাই-বাচাই করছি। গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কাজ করছে।’
থানায় থানায় অসংখ্য ওয়ারেন্ট : তার বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তবুও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। তাকে আইনের আওতায় আনতে গ্রাহকরা বারবার দাবি তুললেও মঞ্জুর আলমকে গ্রেফতার করছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে গ্রাহকরা মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারো কারো সঙ্গে তার সখ্য আছে।
আসেন লাইভে, তবুও পলাতক মঞ্জুর আলম : পুলিশ বলছে মঞ্জুর পলাতক। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা দিয়ে ফেসবুক লাইভে আসছেন তিনি। তবুও তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। এ বিষয়ে কথা হয় মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এবং পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বশির আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যদি অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করা উচিত। আমার মনে হয়, এর নেপথ্যে কিছু অবশ্যই রয়েছে।’
এ দিকে আলেশা মার্টের সঙ্গে একটি মন্ত্রণালয়ের অনেকের সখ্য আছে বলেও গ্রাহকদের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে। এমনকি সেই মন্ত্রণালয়ের যে ধরনের ভূমিকা রাখার কথা সে অনুযায়ী দৃশ্যমান কোনো কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ বলছে মঞ্জুর আলম পলাতক। কিন্তু তিনি লাইভে আসেন। এটা অত্যন্ত বিব্রতকর। বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে তার অবস্থান শনাক্ত করা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়।’
অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক ঋণের চেষ্টা : এখন আলেশা ব্যাগস নামক তার মালিকানাধীন অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক ঋণের চেষ্টা করছেন মঞ্জুর আলম। শিল্পঋণের আওতায় কৃত্রিম চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, কাপড়ের ব্যাগ এবং লাগেজ তৈরির জন্য এই ঋণের আবেদন করেছেন তিনি।
যে ব্যক্তি প্রতারণায় জড়িয়ে গেছেন তাকে ঋণ দেয়াটা হবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেটা হতে পারে অন্য প্রতিষ্ঠান, কিন্তু ব্যক্তি তো একজনই।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণায় জড়িয়ে গেছেন তাকে ঋণ দেয়াটা হবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেটা হতে পারে তার অন্য প্রতিষ্ঠান, কিন্তু ব্যক্তি তো একই। যদি কোনো ব্যাংক তার ট্রাক রেকর্ড জানার পরেও ঋণ দেয় তাহলে বুঝতে হবে এখানে কোনো যোগসাজশ আছে। লেনদেনের ব্যাপার আছে।’
জানতে চাইলে জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হচ্ছে তার কাছে মানুষ টাকা পায়। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ও একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এ ধরনের ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক ঋণ দিলে সেটা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ হবে। আবার একই ব্যক্তির ভিন্ন নামে অন্য প্রতিষ্ঠান থাকলেও ব্যক্তি তো একজনই। তাই তাকে ঋণ দেয়ার আগে ব্যাংককে বারবার ভাবতে হবে।’
এআরআই/এএল